শ্যামলবাংলা ডেস্ক : দু’দফা দাবি আদায়ের লক্ষ্যে ঢাকা পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থীদের সাথে আবারও পুলিশের সংঘর্ষ হয়েছে। ২৯ সেপ্টেম্বর রবিবার বেলা সোয়া ১১টা থেকে পৌনে ১২টা পর্যন্ত ওই সংঘর্ষ চলে। এসময় শিক্ষার্থীরা মাছরাঙা টেলিভিশনের একটি গাড়ি, প্রাইভেটকারসহ বেশ কয়েকটি গাড়ি ভাঙচুর করে।
জানা যায়, রবিবার সকালে পলিটেকনিক শিক্ষার্থীরা কয়েকটি ভাগে বিভক্ত হয়ে ক্যাম্পাস ও গেইটে বিক্ষোভ মিছিল করতে থাকে। এসময় পুলিশ পলিটেকনিকের রাস্তায় অবস্থান নেয়। আন্দোলনরত ছাত্ররা রাস্তা অবরোধ করতে চাইলে পুলিশ তাদের বাধা দেয়। পুলিশ বাধা দিলে শিক্ষার্থীরা পুলিশকে তিনদিক থেকে ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করে। এসময় তারা মাছরাঙা টেলিভিশনের গাড়িসহ বেশ কয়েকটি গাড়ি ভাঙচুর করে। পরে পুলিশ শিক্ষার্থীদের ছত্রভঙ্গ করতে ৩ রাউন্ড টিয়ারশেল ও ৮-১০ রাউন্ড শর্টগানের ফাঁকা গুলি ছোঁড়ে। তবে ওই ঘটনায় বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীদের কাউকে আটক করতে পারেনি পুলিশ। পরে বাংলাদেশ কারিগরি ছাত্র পরিষদ নেতৃবৃন্দ ও পুলিশের যৌথ প্রচেষ্টায় উদ্ভূত পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হয়।
এদিকে, রবিবার থেকে পলিটেকনিকের পরীক্ষা হওয়ার কথা থাকলেও শনিবার সংগঠনের পক্ষ থেকে পরীক্ষা বাতিলের বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হলেও কর্তৃপক্ষ তা বাতিল করেনি। ফলে সংগঠনের পক্ষ থেকে সারা দেশের পলিটেকনিকের ছাত্ররা পরীক্ষা বর্জন করে ঢাকা পলিটেকনিকে জড়ো হয়।
বাংলাদেশ কারিগরি ছাত্র পরিষদের আহ্বায়ক জাকির হোসেন সাগর জানান, আমরা শান্তিপূর্ণভাবে পলিটেকনিক কলেজের গেটে অবস্থান কর্মসূচি পালন করছিলাম। এসময় স্থানীয় কিছু ছেলে পুলিশের ওপর ইট-পাটকেল নিক্ষেপ ও গাড়ি ভাঙচুর করে পরিস্থিতি ঘোলাটে করে। পলিটেকনিকের কোনো ছাত্র পুলিশের ওপর হামলার সাথে জড়িত নয় বলে দাবি করেন তিনি। তিনি বলেন, রবিবার বিকেলে পলিটেকনিকের চেয়ারম্যান, ডিজি ও সচিব পর্যায়ের কর্মকর্তাদের সঙ্গে আমাদের দাবির বিষয়ে বৈঠক হওয়ার কথা রয়েছে। তিনি আরও জানান, ২০০৮ থেকে দু’ দফা দাবিতে তাদের আন্দোলন চলছে
তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মনিরুজ্জামান জানান, শান্তিপূর্ণ কমর্সূচি থেকে ছাত্র নামধারী কিছু সন্ত্রাসী পুলিশকে লক্ষ্য করে ইট-পাটকেল নিক্ষেপ ও কয়েকটি গাড়ি ভাঙচুর করলে পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। বাধ্য হয়ে পুলিশ শর্টগানের গুলি ও টিয়ারশেল নিক্ষেপ করে। বর্তমানে পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে এবং পলিটেকনিক এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন রয়েছে।
উল্লেখ্য, প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা ও আন্তঃমন্ত্রণালয় কমিটির সুপারিশ অনুযায়ী বিতর্কিত গেজেট সংশোধন এবং ছাত্র ছাত্রীদের বৃত্তি ও প্রশিক্ষণ ভাতা বৃদ্ধিসহ ২ দফা দাবিতে বাংলাদেশ কারিগরি ছাত্র পরিষদ (বাকাছাপ) আন্দোলন করে আসছে। শনিবারও দেশের বিভিন্ন স্থানে পুলিশের সঙ্গে শিক্ষার্থীদের কয়েক দফা সংঘর্ষ হয়।
