ঐশী কেন খুনী হল?- এ প্রশ্ন যেমন সাম্প্রতিব সময়ে আলোচিত ও সেরা প্রশ্ন, ঠিক তেমনি এর দায় থেকে আমাদের রেহাই পাবার সুযোগ আছে কিনা? ঘটনা পরস্পরায় সে প্রশ্নও এখন চলে আসছে ঘুরেফিরে। একদিন জবাবদিহিতা ভবিষ্যত প্রজন্মের কাছে আমাদেরকেই দিতে হবে। সে দিন মনে হয় খুব দূরে নয়। অতি নিকটবর্তী। সেদিন হয়তো আর পিছু হটার সুযোগ থাকবে না।
দেশে এক আলোচিত খুনের ঘটনা অতি সম্প্রতি ঘটে গেল। যা দেশের সকলে ইতোমধ্যে জেনে গেছেন, যা বর্তমান সময়ে চায়ের স্টল থেকে রান্নাঘর পর্যন্ত আলোচিত-সমালোচিত। যেই-ই শুনেছে ওই ঘটনা, সেই-ই ধিক্কার দিয়েছে ঐশীকে। কিন্তু সে ধিক্কার কি শুধুই ঐশীর প্রাপ্য ছিল? না তার পিতা মাতারও? একটু ভাবুনতো কাদের পাওয়া উচিত ছিল ওই ধিক্কার? এই সমাজও কি রক্ষা পেতে পারে ওই ধিক্কার থেকে?
আমাদের এ দেশটির তিন দিকে রয়েছে দুটি দেশের সীমান্ত স্থলপথ। আর বাকি বৃহত অংশ নদীপথ। এ দুটি পথকে বেছে নিয়েছে মাদক চোরাকারবারীরা। আর এ চোরাকারবারীরা কারা ? তারা তো আমাদের সমাজ বা দেশেরই মানুষ। একটু ভাবুনতো আমরা কি সকলে এ মাদক দেশের অভ্যন্তরে আনতে পরোক্ষ বা প্রত্যক্ষভাবে সহযোগীতা করছি না ? কেন প্রতিবাদে ও প্রতিরোধে সোচ্চার হচ্ছি না আমরা? ঐশীর বাবা একজন সচেতন পুলিশ কর্মকর্তা ছিলেন। আর তার মেয়েই এক ছাদের নিচে বাস করে মাদকাসক্ত হয়ে পড়ে। এ দায় কার ? তিনি ঘরের খবর না নিয়ে কিভাবে প্রশাসনিক কর্মকর্তা হয়ে অন্যের খবর নিতেন? দেশের অভ্যন্তর থেকে শুরু করে সীমান্ত পর্যন্ত প্রশাসনিক নিয়ন্ত্রনে থাকে। অথচ
সীমান্ত গলিয়ে কিশোর-যুবকদের হাতে পৌছে যাচ্ছে বিভিন্ন ধরনের মাদকদ্রব্য। যা আনছে আমাদের সমাজের মানুষই। কথিত আছে, এর সহযোগিতা করছে এক শ্রেনীর প্রশাসনিক সদস্য বা কর্মকর্তারা। ইতোমধ্যে দেখা গেছে, বিচারক থেকে শুরু করে প্রশাসনিক কর্তা ব্যক্তিরা মাদকের চালানসহ আটক হয়েছেন। আদালতে তাদের সংশ্লিষ্টতার প্রমাণও মিলেছে। তাদের জেলহাজত বাস করতেও হয়েছে বা হচ্ছে।
ভাবুন তো, তাহলে কি আমরাই তুলে দিচ্ছি না আমাদের সন্তানদের হাতে এ মাদক ? এর দায় থেকে আমাদের রেহাই পাবার পথ আমাদেরকেই বের করতে হবে। তা না হলে ভবিষ্যত গভীর অন্ধকারে নিমজ্জিত হবে।
লেখক : সাংবাদিক, যশোর।
