ঝিনাইগাতী (শেরপুর) সংবাদদাতা : বেসরকারী উন্নয়ন সংস্থা ব্র্যাক এর সহযোগি সংগঠন পল্লী সমাজের মানবিক সহায়তায় যুবতী কন্যাকে পাত্রস্থ করতে পারায় দায়গ্রস্ততার হাত থেকে মুক্তি পেয়েছেন এক হতদরিদ্র মুক্তিযোদ্ধা পিতা।
শেরপুরের ঝিনাইগাতী উপজেলার ধানশাইল ইউনিয়নের শুটিপাড়া গ্রামে বসবাস করেন মুক্তিযোদ্ধা গোবিন্দ চন্দ্র। তিনি অতি দরিদ্র মানুষ। বৃদ্ধ বয়সেও দিন মজুরের কাজ করে সংসার চালাতে হয় তার। মুক্তিযোদ্ধার সামান্য ভাতা ও দিন মজুর করে যে টাকা পায় তা দিয়ে অভাবী গোবিন্দ্রের সংসার চালানো কষ্টসাধ্য। ওই অভাবী সংসারের ঘরে রয়েছে বিবাহযোগ্য সাবালিকা কন্যা সন্তুষী। মেয়ের বিয়ের টাকা যোগাড় করতে না পারায় অনেক বার বিয়ে আসার পরেও দরিদ্র পিতা মুক্তিযোদ্ধা গোবিন্দ চন্দ্রের পক্ষে সম্ভব হয়ে উঠেনি যুবতী কন্যা সন্তুষীকে সৎপাত্রস্থ করা। যুবতী মেয়েকে বিয়ে নামের সামাজিক বন্ধনে আবদ্ধ করতে না পারায় দিতে না পারায় কন্যাদায়গ্রস্ত পিতা গোবিন্দের দিন কাটে নানা দুঃশ্চিন্তায়। দিনে দিনে সন্তুষী যেন গরিব পিতার দুশ্চিন্তায় মাথার বোঝা হয়ে উঠে।
কিছুদিন আগেও সন্তুষীর বিয়ে ঠিক হলে প্রয়োজনীয় অর্থ যোগাড় করতে না পারায় এবারও সন্তুষীর বিয়ে অনিশ্চিত হয়ে পড়ে। হতদরিদ্র ছন্নছাড়া গোবিন্দের ওই অসহায়ত্বের কথা জানতে পারে বেসরকারী উন্নয়ন সংস্থা পল্লী সমাজ। ব্র্যাকের অঙ্গসংগঠন শুটিপাড়া গ্রামের পল্লী সমাজের সভা প্রধান মিছিরনের নেতৃত্বে একদল যুবক-যুবতী এগিয়ে আসে সন্তুষীর বিয়ের খরচ যোগাতে। পল্লী সমাজের সদস্যদের উৎসাহ উদ্দীপনায় এগিয়ে আসে গ্রামবাসীও। নিজেদের সামর্থ্য অনুযায়ী চাল, ডাল, টাকা-পয়সা দিয়ে সাহায্য করে গ্রামের প্রতিটি মানুষ। ব্র্যাকের সহযোগি সংগঠন পল্লী সমাজের ওই মহতী উদ্যোগ ও গ্রামবাসীর সদিচ্ছার প্রতি কৃতজ্ঞতায় মুগ্ধ দরিদ্র গোবিন্দ। তাদের ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় ও আর্থিক সহযোগিতায় অবশেষে ৩ সেপ্টেম্বর বিয়ের পিড়িতে বসে যুবতী কন্যা সন্তুষী। এ ব্যাপারে ব্র্যাক সামাজিক ও নারী ক্ষমতায়ন কর্মসূচীর এফ.ও হারুন অর রশিদ শ্যামলবাংলাকে জানান, পল্লী সমাজের সদস্যরা তাদের মাসিক সভায় যৌতুক, বাল্য বিয়ে প্রতিরোধ, নারীর ক্ষমতায়ন ও অসহায় দরিদ্র মানুষকে সাহায্য করার বিষয় নিয়ে আলোচনা ও বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করে থাকে। পল্লী সমাজের সদস্যরা নারীর ক্ষমতায়নসহ বিভিন্ন সামাজিক উন্নয়নমূলক কর্মকান্ডে অংশগ্রহণ করে আসছে।
