জুবায়ের রহমান/ ইউসুফ মন্ডল : অপহরণের একদিন পর শেরপুরের নকলা এলাকায় নারায়ণগঞ্জের এক ব্যবসায়ী পরিবারের অপহৃত স্কুলছাত্রের লাশ উদ্ধার হয়েছে। ৮ সেপ্টেম্বর রবিবার রাত ১২টার দিকে নকলা সদরের চাপাকুড়ি ব্রিজের কাছ থেকে রমজান শিকদার (৯) নামে ওই স্কুলছাত্রের লাশ উদ্ধার করে থানা পুলিশ। সে নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জ থানার জালকুড়ি এলাকার ইসমাইল শিকদারের ছেলে। ওই ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে অপহরণকারী চক্রের স্থানীয় ২ সদস্যকে গ্রেপ্তার করা হয়। এরা হচ্ছে নকলা উপজেলার বারমাইস্যা গ্রামের লক্কু মিয়ার ছেলে রিপন (১৯) ও বামনা গ্রামের নিয়ামত আলীর ছেলে হামিদুল (২০)। সোমবার রমজানের লাশ ময়নাতদন্তের জন্য শেরপুর জেলা সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। ওই ঘটনায় সিদ্ধিরগঞ্জ থানায় অপহরণ ও হত্যার ঘটনায় একটি মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে বলে পুলিশ জানিয়েছে।
নকলা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা একেএম ফছিহ্উর রহমান জানান, হামিদুল ও রিপন দীর্ঘদিন যাবত নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জে ফেরি করে লেপ-তোষক মেরামত ও তৈরির কাজ করত। ওই কাজের সূত্রেই তারা জালকুড়ি এলাকায় ইসমাইলের বাড়িতে যাতায়াত করে এবং এক পর্যায়ে মুক্তিপণ আদায়ের পরিকল্পনায় শনিবার তারা শিশু রমজানকে অপহরণ করে। পরে তাকে শেরপুরের নকলা এলাকায় নিয়ে আসে। রবিবার ভোর থেকে শিশুটি কান্নাকাটি শুরু করলে স্থানীয় চাপাকুড়ি ব্রিজের কাছে তাকে শ্বাসরোধে হত্যা করে তারা। পরে তার লাশ ওই ব্রিজের কাছে ঝোপের মধ্যে ফেলে চলে যায়। অন্যদিকে ওই অপহরণের সংবাদ পেয়ে এবং অপহরণকারীরা নকলার বাসিন্দা এ বিষয়টি নিশ্চিত হয়ে থানা পুলিশ অভিযান চালিয়ে রবিবার রাতে আটক করে হামিদুলকে। পরে হামিদুলের দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে রমজানের লাশ উদ্ধার করা হয় এবং তার সহযোগী রিপনকেও গ্রেপ্তার করা হয়।
অন্য একটি সূত্র জানিয়েছে, শিশু রমজানকে অপহরণকারী হামিদুল ও রিপন রমজানের পিতার বাসায় ভাড়া থাকত। দু’দিন আগে হামিদুল, রিপন ও তাদের এক মহিলা আত্মীয়কে ওই ভাড়াটে বাসা থেকে বের করে দেয় রমজানের মা মর্জিনা বেগম। এরই জের ধরে হামিদুল ও রিপন তাদের সাথে থাকা মহিলা ভাড়াটেকে দিয়ে রমজানকে শনিবার বিকেলে অপহরণ করে। পরে রমজানের আত্মীয়-স্বজন হামিদুলের মোবাইলে রমজানের খোঁজ চাইলে হামিদুল ও রিপন মুক্তিপণ দাবি করে। অবশেষে রমজানের কান্নাকাটি আর মুক্তিপণ আদায়ে ব্যর্থ হয়েই তারা রমজানকে হত্যা করে।

