ads

সোমবার , ৯ সেপ্টেম্বর ২০১৩ | ৫ই ফাল্গুন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের নিবন্ধনপ্রাপ্ত অনলাইন নিউজ পোর্টাল
  1. ENGLISH
  2. অনিয়ম-দুর্নীতি
  3. আইন-আদালত
  4. আন্তর্জাতিক
  5. আমাদের ব্লগ
  6. ইতিহাস ও ঐতিহ্য
  7. ইসলাম
  8. উন্নয়ন-অগ্রগতি
  9. এক্সক্লুসিভ
  10. কৃষি ও কৃষক
  11. ক্রাইম
  12. খেলাধুলা
  13. খেলার খবর
  14. চাকরির খবর
  15. জাতীয় সংবাদ

প্রেক্ষাপট; সমুদ্র বিজয় ও পররাষ্ট্র সচিব খুরশেদ আলম কালা —-এম.আর.টি মিন্টু

রফিকুল ইসলাম আধার , সম্পাদক
সেপ্টেম্বর ৯, ২০১৩ ৮:২৪ অপরাহ্ণ

    বর্তমান সরকারের অন্যতম প্রধান সফলতা সমুদ্র সীমা নির্ধারণ ও বিজয়। সরকারের সুক্ষ্ম ও গতিশীল কূটনৈতিক কর্মকান্ডের সর্বাধিক দৃশ্যমান অর্জন সমুদ্র পেক্ষাপট। ২০১২ সালের ১৪ মার্চ প্রদত্ত ‘ইন্টারন্যাশনাল ট্রাইবুনাল অন দ্যা ল অফ দ্যা সি’ (আইটিএলওএস) এর ঐতিহাসিক রায়ের মাধ্যমে নেদারল্যান্ডের রাজধানী হেগ শহরে অবস্থিত আন্তর্জতিক আদালতে মুক্তিযুদ্ধ পরবর্তী ৪ দশকের অধিককালের বাংলাদেশ বনাম মায়ানমারের মধ্যে অমিমাংসিত বৃহৎ সংকট নিরসন হয়। ডিসেম্বর/২০০৮‘র সুষ্ঠু-অবাধ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করে জনগণের ম্যান্ডেট নিয়ে। ফলে মহান মুক্তিযুদ্ধের প্রকৃত চেতনা ও মূল্যবোধ সমৃদ্ধ বলিষ্ঠ পররাষ্ট্র নীতি প্রতিষ্ঠিত করতে পেরেছেন বঙ্গবন্ধু তনয়া শেখ হাসিনা। আধুনিক তথ্য প্রযুক্তির বিশ্বের সাথে প্রতিযোগিতায় অংশ নিতে ডিজিটাল বাংলাদেশ গঠনের দূর্লভ ভিশন-২০২১’র আলোকে দেশটির জন্য একটি সমন্বিত, কার্যকর ও সুসংহত পররাষ্ট্রনীতির উজ্জল মাইলষ্টোনই হচ্ছে জাতীয় জীবনের এই বাস্তবমুখী সফলতা। সফলতার ক্ষেত্রে কাজ করেছে প্রধানমন্ত্রীর সুক্ষ্ম রাজনৈতিক দূরদর্শিতা ও সাহসিকতাই। বঙ্গবন্ধু’র সফলতার দূরন্ত পর্বে পৌছাতে সক্ষম হয়েছে। মুক্তিযুদ্ধ এবং স্বাধীনতা একটি মুহূর্ত কিংবা ক্ষণের নয়, বরং সুদুরপ্রসারী পথ পরিক্রমা। অর্থাৎ  একদিনে যেমন আবির্ভূত হয়নি অনেক চিন্তা, পথ পরিক্রমা, সশস্ত্র সংগ্রাম, ত্যাগ ও ধৈর্য্যরে ফসল, তেমনি সমুদ্র বিজয়ের ইতিহাসও বর্ণাঢ্য ইতিহাস সমৃদ্ধ। সংকট নিরসনে অনেক খড়কূটা পুড়তে হয়েছে। সীমান্ত ছিল আতঙ্ক আর অপরাধের অভয়ারণ্য। অকারনে নির্বিচারে হত্যা-গুম, অপহরণসহ অসংখ্য অপরাধ ঠেকাতে প্রাণ হনন হয়েছে দেশীয় জওয়ানদের।    আন্তরিকতা নিয়ে বহুবার সংকট নিরসন কল্পে বৈঠক হয়েছে। মিমাংসার পথ পরিষ্কার হয়নি। তাই আইনি লড়াইয়ের মধ্য দিয়েই অর্জিত হল ন্যায্য অধিকার। জাতির প্রায় সকল অধিকার অর্জিত হয়েছে রক্ত বিসর্জনের মধ্য দিয়ে। বঙ্গবন্ধু’র বর্ণাঢ্য রাজনৈতিক মেধা, সাহস এবং দীর্ঘ নয় মাসে সশস্ত্র সংগ্রামের মাধ্যমে এক সাগড় রক্ত বিসর্জনে অর্জিত হয় স্বাধীনতা। কিন্তু বঙ্গবন্ধু’র কন্যা বিনা রক্তপাতে শুধুমাত্র সুক্ষ্ম মেধা, সাহসিকতা দিয়ে সমুদ্র বিজয় করে সৃষ্টি করে নতুন ইতিহাস। আন্তর্জাতিক কৌশলে মায়ানমারের সামরিক জান্তাকে আন্তর্জাতিক আদালতে পরাজিত করে রায় ও ডিক্রি অর্জনকে কখনও খাটো করে দেখার কোন উপায় নেই। অর্জনটি করুনা, অনুকম্পা ও দয়ার বশবর্তী হয়ে দেওয়া হয়নি, বরং ন্যায্যতা ও অধিকারের ভিত্তিতেই হয়েছে। কেননা মামলাটি সিভিলিয়ান অফেন্সের ভিত্তিতে রুজু হয়। এখানে করুণা প্রাধান্য না পেয়ে অধিকারের ভিত্তিতে দীর্ঘ শুনানীঅন্তে রায়/ডিক্রি প্রচারিত হওয়ায় অনলাইনে দেওয়ায় বিভিন্ন গণ মাধ্যমে কলেবরে মুদ্রিত, প্রকাশিত হওয়ায় বিশ্বের সকল পর্যায়ের আইন বিশেষজ্ঞরা বিশ্লেষণ করলেও বিরুপ প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি। বরং নন্দিত হয়েছে সর্ব মহলে। মায়ানমারও রায়টি মেনে নিয়েছে। রায়ের পর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জাতির পক্ষ হতে সংবর্ধিত হয়েছেন একাধিকবার।
রায়ে প্রধান বিরোধী দল সরকারকে ধন্যবাদ দিলেও পরবতীতে প্রত্যাখান করে বিরুপ মন্তব্য করা হয়। এমন আচরন রাজনৈতিক শিষ্টাচার বর্হিভূত বলে মন্তব্য করেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা। পুর্ণাঙ্গ রায় পররাষ্ট্র মন্ত্রনালয়ের ওয়েবসাইটে প্রদর্শন করে সরকার চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিলে বিরোধীদল নিরব থাকার কারণে দলটির অদূরদর্শীতার স্পষ্ট প্রমাণ মিলে সচেতন মহলে। কবির ভাষায় ‘মধুর চেয়েও আছে মধুর সে এই আমার দেশের মাটি, আমার দেশের পথের ধুলো খাঁটি সোনার চেয়েও খাঁটি।’ কবি পথের ধুলোতে খাঁটি সোনার সন্ধান পেলেও বঙ্গবন্ধু’র দৃষ্টি শুধু মাটিতেই সীমাবন্ধ ছিলনা বরং অথৈ সাগড়ের তলদেশে দৃষ্টি নিক্ষিপ্ত হয়। প্রকৃতির কবি জীবনানন্দ দাশ দেশটি রূপসী বাংলা, কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ও জাতীয় কবি নজরুলের সোনার বাংলার সাথে বঙ্গবন্ধুও সোনার বাংলা রূপায়িত করে সীমাহীন ত্যাগের মাধ্যমে ১,৪৪,০০০ বর্গ কিঃ মিঃ ভূ-খন্ড স্বাধীন করেই ক্ষান্ত হননি, বরং ১৯৭৪ সালে প্রণয়ন করে ‘টেরিটোরিয়াল ওয়াটার্স এ্যান্ড মেরিটাইম জোন্স এ্যাক্ট’। ২০০১ সালে আন্তর্জাতিক সমূদ্র আইন- ১৯৮২ অনুস্বাক্ষর হয়। আন্তর্জাতিক আদালতে সমুদ্র অধিকার প্রতিষ্ঠার মামলা দায়ের করা হয় ২০০৯ সালে। জাতিসংঘে তথ্য-উপাত্ত সহ মহীসোপানের দাবী পেশ করেন ২০১১ সালে। ২০১২ সালের ১৪ মার্চ সমুদ্র সীমা নির্ধারনী মামলায় ন্যায্যতা ও অধিকারের ভিত্তিতে বাংলাদেশের পক্ষে আইটিএলওএস- এর ঐতিহাসিক রায় প্রচারিত হয়। স্বাধীনতার চল্লিশ বছর পর জাতির যুগান্তকারী ওই বিরল অর্জনে সেন্টমাটিনস দ্বীপ থেকে ২২ কিঃ মিঃ পর্যন্ত রাষ্ট্রাধীন সমুদ্র অঞ্চল ৩৭০ কিঃ মিঃ পর্যন্ত একচ্ছত্র অর্থনৈতিক অঞ্চল এবং এর বাইরেও মহীসোপানের উপর সকল প্রাণীজ- খনিজ সম্পদের উপর সার্বভৌম অধিকার প্রতিষ্ঠিত হয়েছে ওই রায়ে। সমুদ্র অধিকার প্রতিষ্ঠার গৌরবোজ্জল ইতিহাস আইটিএলওএস- এর ঐতিহাসিক রায়ের বর্ষপূর্তি অধুনা পেরিয়ে গেছে। বঙ্গবন্ধু’র জীবদ্দশায় যদি আইনটি প্রণয়ন না হতো হয়তো আজও অর্জিত হতো না ভূ-খন্ডের প্রায় সমপরিমান তথা ১,১১,৬৩১ বর্গ কিঃ মিঃ/ ২০০ নটিক্যাল মাইল সমূদ্র সৈকত। ওই রায়ের আনন্দ-উচ্ছ্বাস দেশের সর্বত্র পরিলক্ষিত হয়েছে।
তারই অংশ বিশেষ শেরপুরের শ্রীবরদী উপজেলাধীন ভায়াডাঙ্গা বাজারে ২০১২ সালের ২০ মার্চ আনন্দ র‌্যালি প্রর্দশিত হওয়ায় বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রচার হয়। দৈনিক সমকাল পত্রিকায় পরদিন ‘সমূদ্র মামলা বিজয়ে শেরপুরে আনন্দ র‌্যালি” শিরোনামে প্রকাশিত সংবাদ দৃষ্টি আকর্ষণ করে। ভায়াডাঙ্গার নামটি যখন এসেই গেল তখন যে ব্যক্তির নামটি সমূদ্র বিজয়ের সাথে উৎপ্রোতভাবে জড়িত তার সম্পর্কে জেনে না নিলে ইতিহাস আবর্জনার স্তুপে চাপা পড়ে থাকার সমূহ সম্ভাবনা বিদ্যমান। নামটি মোঃ খুরশেদ আলম। ডাক নাম কালা। ভায়াডাঙ্গার হাঁসধরা গ্রামের প্রয়াত আহসান আলী মাষ্টার ও হালিমা খাতুনের ঔরসে জন্ম গ্রহণ করেন তিনি। স্থানীয় প্রাথমিক বিদ্যালয়ে অধ্যয়ন করে পঞ্চম শ্রেণীতে মেধা বৃত্তি লাভ করেন এবং টেঙ্গরপাড়া উচ্চ বিদ্যালয়ে ষষ্ট শ্রেণীতে ভর্তি হয়ে অষ্টম শ্রেণীতে বৃহত্তর ময়মনসিংহে মেধা বৃত্তিতে শীর্ষস্থান অধিকার করায় তৎকালীন শিক্ষা প্রশাসনের কর্মকর্তার মাধ্যমে ওই বিদ্যালয় মাঠে সংবর্ধিত ও পুরস্কৃত হন। সে সময় শেরপুর জেলা পরিষদ সাবেক চেয়ারম্যান খন্দকার খুররমের পিতা মৌলানা আব্দুর রহমান প্রতিষ্ঠানটির ম্যানেজিং কমিটির সেক্রেটারী এবং মোঃ মকবুল হোসেন প্রধান শিক্ষকের দায়িত্বে ছিলেন। ১৯৬৮ সালে বিজ্ঞান বিভাগে এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নিয়ে প্রথম স্থান অধিকার করায় প্রতিষ্ঠানটি ব্যাপক সুনাম অর্জন করে বৃহত্তর ময়মনসিংহে সর্বত্র পরিচিতি লাভ করে। অতঃপর ঢাকার জগন্নাথ কলেজে বিজ্ঞান বিভাগে ভর্তি হয়ে ১৯৭০ সালে এইচএসসি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে প্রথম বিভাগে কৃতিত্বের সাথে উত্তীর্ণ হয়ে বুয়েট-এ ইঞ্জিনিয়ারিং- এ অধ্যয়ন করা অবস্থায় নৌ বাহিনীর কমিশন র‌্যাংকে যোগদান করে প্রশিক্ষনের জন্য পশ্চিম পাকিস্তানে অবস্থানকালীন মুক্তিযুদ্ধ শুরু হওয়ায় পাকিস্তান শাসকের নির্দেশনায় লায়ালপুর কেন্দ্রীয় কারাগারে কুহাট দূর্গে অন্তরিন থাকেন প্রায় দু’বছর। মিডশিপম্যান প্রশিক্ষণ কোর্স সম্পন্ন করার পরই তিনি ইন্ডিয়ান সরকারের দেওয়া সর্বোচ্চ রাষ্ট্রীয় পুরস্কার প্রেসিডেন্ট (ভিরিগিরি) স্বর্ণ পদক লাভ করেন এবং ১৯৭৩ সালে প্রথম শ্রেণীতে উত্তীর্ণ হয়ে কমিশন লাভ করেন। ১৯৭৭ সালে একজন সফল নৌ অফিসার হিসেবে প্রথমেই যুক্তরাষ্ট্র, আলজেরিয়া, জেদ্দা, কলম্বো সমুদ্র বন্দর- নোঙ্গর তোলেন। এরপর বাংলাদেশ নৌ প্রশিক্ষণ একাডেমীর নেতৃত্ব দেন এবং ইতালি থেকে যোগাযোগের উপর প্রথম শ্রেণীতে উত্তীর্ণ হন। তিনি দু’ বছর যাবৎ সিএনএস এবং রেলওয়ে মন্ত্রীর একান্ত সচিব, সড়ক ও জনপথ বিভাগ, ডাক ও টেলিযোগাযোগ, বাণিজ্যিক জাহাজ ও কৃষিতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখেন। ইউকে গ্রীনিচর রয়েল স্টাফ কলেজ থেকে স্নাতক ডিগ্রি লাভ করেন। এছাড়া বিভিন্ন ধরনের গোলাবারুদ সজ্জিত জাহাজ এবং রণতরীর বীরত্বপূর্ণ নেতৃত্ব দেন। ১৯৯১ হতে ১৯৯৪ পর্যন্ত কোয়ালালামপুরে অবস্থিত বাংলাদেশ হাই কমিশনের প্রতিরক্ষা উপদেষ্টা হিসেবে বিশ্বস্ততার সাথে দায়িত্ব পালন করেন। ইউকে, মালয়েশিয়া, ভারত, সৌদি আরব, সিঙ্গাপুর এবং শ্রীলংকার সাথে সামরিক প্রশিক্ষণ মহড়ায় নেতৃত্ব দেন। ২০০০ সালে ভারতে জাতীয় প্রতিরক্ষা কলেজ প্রশিক্ষণ কোর্সে অংশগ্রহণ করেন  এবং ২০০২-২০০৪ পর্যন্ত মংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান হিসেবে সততা-সফলতার সাথে দায়িত্ব পালন করেন। মেরিটাইমের উপর উচ্চতর কোর্স লন্ডন হতে সম্পন করেন। কমান্ড প্রশিক্ষণ স্টাফ কলেজ এবং জাতীয় প্রতিরক্ষা কলেজে সমূদ্র আইন বিষয়ে অধ্যাপনা করেন। জাতীয় ও আন্তর্জাতিক সামুদ্রিক প্রেক্ষাপটে বিভিন্ন ধরনের জার্নাল লিখে প্রশংসিত হয়েছেন। ন্যাশনাল জিওগ্রাফিক সোসাইটি এন্ড ন্যাশনাল মেরিটাইম ফাউন্ডেশন ঢাকার অনারি মেম্বার নির্বাচিত হন। এছাড়াও তার রয়েছে ইউনাইটেড নেশনস কনভেনশন অন দি ল অব দি সি ল অব দি সি এন্ড ইটস ইম্পক্লেশন ফর বাংলাদেশ, রিজিওনাল মেরিটাইম কো-অপারেশন আন্ডার দি সার্ক, এশিয়ান রিজিওনাল কো-অপারেশন সহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ প্রকাশনা। বাট্টাজোরের জেবিনের সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয়ে সুখময় দাম্পত্য অতিবাহিত করাবস্থায় দু’ পূত্রের সার্থক পিতা। তিন ভ্রাতার মধ্যে সর্ব কণিষ্ট্য কালা। বড় ভ্রাতা আব্দুল হালিম উত্তরা ব্যাংকের ডেপুটি ম্যানেজিং ডাইরেক্টর। অপর ভ্রাতা গোলাম রব্বানী ফটু ব্যবসায়ী ও সমাজ সেবক। প্রয়াত মাতা হালিমা খাতুন রতœগর্ভা হিসেবে রাষ্ট্রীয় সম্মানী ভাতা পেত। বাংলাদেশের দু’জন মাত্র ব্যক্তি মেরিটাইমের উপর সমূদ্র গবেষনাধর্মী দু’টি গ্রন্থ লিখেন। ২০০৪ সালে তার লেখা দুর্লভ ও সাড়া জাগানো ইংরেজী ভাষায় মুদ্রিত গ্রন্থ ‘বাংলাদেশ মেরিটাইম চ্যালেঞ্জেস ইন দি টুয়েন্টি ফাস্ট সেঞ্চুরী’। এখানে সামুদ্রিক সার্বিক চিত্র ফুটে উঠেছে। চাকুরী করাবস্থায় কমোড়োর এবং রিয়ার এ্যাডমিরাল পদে উন্নিত হলেও বিধি বাম! চার দলীয় জোট সরকারের আমলে যে কোন মুহুর্তে পদোন্নতি পেয়ে নৌবাহিনীর প্রধান হবে এমন প্রহর গনাবস্থায় তাকে ডেপুটেশনে মংলা পোর্টের চেয়ারম্যান করে সড়িয়ে দিয়ে পথ পরিস্কার করতঃ জৈষ্ঠ্যতা লঙ্ঘন করে সরকারের আস্থাভাজন ব্যক্তিকে নৌবাহিনীর প্রধান পদে আসিন করেন। জনশ্র“তি আছে বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আসায় আন্তর্জাতিক আদালতে অমিমাংসিত সামুদ্রিক ইস্যুটি নিয়ে আন্তর্জাতিক আদালতে মামলা দায়ের করনের লক্ষ্যে সরকার বিশেষজ্ঞ খোঁজার ব্যাপারে মার্কিন রাষ্ট্রদূতের শরনাপন্ন হলে দূত খুরশেদ আলমকে দেখিয়ে দেন। তার পরিচয় মেলার পর পররাষ্ট্র মন্ত্রনালয়ে পদ সৃষ্টি করে অতিরিক্ত পররাষ্ট্র সচিবের চেয়ারে বসিয়ে মেরিটাইম ইউনিটের দায়িত্ব অর্পণ করেন। বাংলাদেশের মেরিটাইমে এক মাত্র বিশেষজ্ঞ হিসেবে সমুদ্র সীমা নির্ধারনে আন্তর্জাতিক সমূদ্র আইন বিষয়ক ট্রাইবুনালে বাংলাদেশ সরকারের ডেপুটি এজেন্ট নির্বাচিত হন। সরকার সমূদ্র সীমা নির্ধারন, সার্ভে, স্কেচম্যাপ প্রনয়নের জন্য ৮০ কোটি টাকা বরাদ্দ করলেও সার্বিক নির্দেশনা বাস্তবায়ন করে সরকারকে ৩২ কোটি টাকার খরচা ভাওচার দিয়ে অবশিষ্ট ৪৮ কোটি টাকা কোষাগারে ফেরৎ দিয়ে সততার উজ্জল নক্ষত্রের পরিচিতি ঘটান প্রজাতন্ত্রের এই নির্ভরশীল নাগরিক। সরকার তথা পররাষ্ট্র মন্ত্রনালয়ের অধীনে সার্বিক দায়িত্ব ন্যাস্ত হয় তার প্রতি। বিশাল বোঝা বহন করতে সক্ষম হন। কবির কণ্ঠে উচ্চারিত হয়- “বোঝা যত দূর্বহ হোক না কেন প্রভূ তা বহিবার শক্তি দাও।” মহান স্রষ্ঠা  তার জন্যও এই শক্তি দেন। সমূদ্র অর্জনের পর সরকার পররাষ্ট্র মন্ত্রনালয়কে দু’টি ইউনিটে বিভক্ত করেন- ফরেন ও মেরিটাইম। তার মর্যাদার স্বার্থে মেরিটাইম  এফেয়ার্স ইউনিটের সচিব পদে স্থলাভিষিক্ত করেন। অথৈ সমুদ্রের তলদেশে অভাবনিয় সম্পদের সমাহার নির্ণয়, উদঘাটন করে সমৃদ্ধ দেশ গঠনের স্বার্থে তার পরামর্শ মতে পর্যাপ্ত জনবল প্রতিষ্ঠা কল্পে চার বছর মেয়াদী মেরিটাইমের উপর ঢাকা ও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে খোলা হয়েছে মেরিটাইম বিভাগ। মেরিটাইম ডিপার্টমেন্ট খোলার বিষয়ে সরকারের প্রতি জোড়ালো পরামর্শ রয়েছে এবং স্বক্রিয় বিবেচনাধীন আছে। তার প্রাথমিক গবেষণার মধ্যে সমূদ্রে ৪৭৫ প্রজাতির মাছ, ক্ষুদ্র বলের ন্যায় অনেক মূল্যবান পদার্থ, তৈল, গ্যাস, খনিজ সম্পদ ও প্রাণিজ সম্পদ। এ সম্পদ আহরন করতে পারলে দেশটি সোনার বাংলা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হবে বলে তার দৃঢ বিশ্বাস। এই অর্জনের ক্ষেত্রে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং পররাষ্ট্র মন্ত্রী ডাঃ দীপু মনির প্রতি কৃতজ্ঞতা জানান। আমি এই বর্ণাঢ্য জীবনের অধিকারী সচিব স্যারের প্রতিষ্ঠান টেঙ্গরপাড়া উচ্চ বিদ্যালয়ের কর্মচারী হিসেবে কর্মরত থাকায় নিজেকে গর্বিত মনে করি। এছাড়া আরও বিশিষ্ট ব্যক্তিরা আমার প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের মধ্যে উল্লেখ যোগ্য ব্যক্তিত্ব- শেরপুর জেলা পরিষদ প্রশাসক ও বর্ষিয়ান জননেতা এডভোকেট আব্দুল হালিমের প্রয়াত পিতা- মোবারক আলী, প্রয়াত সংসদ সদস্য এমএ বারী, জেলা পরিষদ সাবেক চেয়ারম্যান ও সংসদ সদস্য খন্দকার মুহম্মদ খুররম, বাউবি’র ডিন প্রয়াত সাইদুর রহমান, কেন্দ্রীয় বিএনপি’র আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক খন্দকার ফারুক রহমান, সবিচ স্যারের চাচা শহীদ বীর মুক্তিযুদ্ধা হাজী গোলাম মোহাম্মদ আকন্দ (মন্ডল হাজী) প্রমুখ। আমি তাদের প্রতিও জানাচ্ছি আন্তরিক শ্রদ্ধা সমুদ্র বিজয়ের পর এলাকাবাসী তাহাকে সংবর্ধনার উদ্দ্যোগ নিলে উদযাপন কমিটি গঠনের প্রক্রিয়া চলতে থাকায় কতিপয় চুনোপুঁটির পদ মর্যাদা নিয়ে চলে বিষাদগার। অর্থাৎ কমিটির আহব্বায়ক/ যুগ্ম আহব্বায়ক, সংবর্ধনা অনুষ্ঠানের সভাপতি কে হবে তা নিয়ে বাড়াবাড়ি করে ভেস্তে গেল সংবর্ধনা। সর্বপুরি টেঙ্গরপাড়া উচ্চ বিদ্যালয় গত ১২-০১-২০১৩ ইং তারিখে এক দায়সাড়া আয়োজনের মধ্য দিয়ে সংবর্ধিত করা হয় সবিচ সাহেবকে। এভাবেই আনুষ্ঠানিকভাবে দ্বিতীয় বারের মত এলাকায় আগমন তার। শেরপুর শহরস্থ শ্রীবরদী কল্যাণ সমিতির ব্যানারেও গত ০৫-০৫-২০১২ ইং তারিখে সংগঠনের কার্যালয়ে বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গের উপস্থিতিতে সংবর্ধিত ও সম্মানিত করা হয় একুশ শতকের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলার এই সফল পুরুষকে। টেঙ্গরপাড়া উচ্চ বিদ্যালয়ে জেএসসি এবং এসএসসি কেন্দ্র খোলা আর হাতেগনা ২/৪ জনের কর্মসংস্থান ছাড়া এলাকায় কোন উল্লেখ যোগ্য অবদান নাই এই অভিযোগ এবং অভিমান অনেকের। তদুপরি জাতীয় জীবনে অনন্য অবদান রেখে বিরল ইতিহাস সৃষ্টি করায় বিবেকবানরা গাইছে রবি ঠাকুরের সেই গান ‘এই ঋণ যদি শোধিতে চাই, কি আছে হেন কোথায় পাই জনম-জনম তরে বিকাত হবে আপনা।’ জীবন ও যৌবনের কবি নজরুলের কণ্ঠে উচ্চারিত- ‘বিশ্বে যা কিছু মহান সৃষ্টি চির কল্যাণকর, অর্ধেক তার করিয়াছে নারী, অর্ধেক তার নর।’ সমুদ্র বিজয়ে প্রধানমন্ত্রী এবং পররাষ্ট্র মন্ত্রী উভয়ে নারী এবং পররাষ্ট্র সচিব (মেরিটাইম এফেয়ার্স ইউনিট) খুরশেদ আলম নর। তাই কবির উক্তিটি এখানে যথার্থ প্রমাণিত হয়েছে। সমুদ্রসীমা নির্ধারন, আন্তর্জাতিক আদালত হতে রায়/ডিক্রি সরকারের পক্ষে অর্জনকারী বাঙ্গালী জাতির ভাগ্যাকাশে নবদিগন্ত উন্মোচনকারী এই কর্মবীর খুরশেদ আলম কালা স্যারের জীবনের সকল ক্ষেত্রে সফলতা প্রতিষ্ঠিত হোক এমন প্রার্থনা মহান স্রষ্টার প্রতি।

Shamol Bangla Ads

MRT Mintu

Shamol Bangla Ads

নিবন্ধকার : সাংবাদিক, লেখক ও রাজনীতিক, শেরপুর।
ই-মেইল : mrtmintobcom@gmail.com

সর্বশেষ - ব্রেকিং নিউজ

Shamol Bangla Ads
error: কপি হবে না!