স্টাফ রিপোর্টার : আলোকিত মানুষ হওয়ার প্রত্যয় এবং মাদক, নারী নির্যাতন ও দুর্নীতি প্রতিরোধ করার শপথ নিয়ে শেরপুরে অনুষ্ঠিত হয়েছে এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় জিপিএ-৫ প্রাপ্ত জেলার কৃতী শিক্ষার্থীদের সংবর্ধনা অনুষ্ঠান। ১ সেপ্টেম্বর রবিবার জেলা শিল্পকলা একাডেমী মিলনায়তনে জাতীয় দৈনিক প্রথম আলোর উদ্যোগে ও মুঠোফোন সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠান টেলিটকের সহায়তায় ওই সংবর্ধনা আয়োজন করা হয়।
সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন শেরপুরের বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ ও শেরপুর সরকারী মহিলা কলেজের সাবেক অধ্যাপক ড. সুধাময় দাস। অনুষ্ঠানে অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন শেরপুর সরকারী কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক মোঃ আব্দুল গনি, সরকারী মহিলা কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক আশীষ চন্দ্র কর, সরকারী ভিক্টোরিয়া একাডেমীর জ্যেষ্ঠ শিক্ষক মো. জহুরুল ইসলাম , আইডিয়াল প্রিপারেটরী এন্ড হাই স্কুলের অধ্যক্ষ মোঃ মাহবুবুর রহমান, নবারুণ পাবলিক স্কুলের অধ্যক্ষ মো. আবুল কালাম আজাদ ও টেলিটকের জামালপুর-শেরপুরের সহকারী ব্যবস্থাপক মো. আতিকুল আলম। জাতীয় সঙ্গীত পরিবেশনের মধ্য দিয়ে সংবর্ধনা অনুষ্ঠানের সূচনা হয়। এতে স্বাগত বক্তব্য দেন প্রথম আলোর শেরপুর প্রতিনিধি দেবাশীষ সাহা রায়। অনুষ্ঠান উপস্থাপনা করেন প্রথম আলো, শেরপুর বন্ধুসভার উপদেষ্টা মলয় চাকী ও আই জিনিয়াস সাদমান সাকিব। সহযোগিতা করেন শেরপুর বন্ধুসভার সভাপতি রবিউল ইসলাম ও সাধারণ সম্পাদক আনোয়ারুল সাদাতসহ বন্ধুরা।
সংবর্ধনা অনুষ্ঠানের সভাপতি ড. সুধাময় দাস উপস্থিত কৃতি শিক্ষার্থীদের আলোকিত মানুষ হওয়ার প্রত্যয় এবং মাদক, নারী নির্যাতন ও দুর্নীতি প্রতিরোধের শপথ বাক্য পাঠ করিয়ে বলেন, ‘আজ তোমরা যারা সংবর্ধিত হলে, তাতে দেশের কাছে, জাতির কাছে তোমাদের দায়িত্ব আরো বেড়ে গেলো। তোমরা সুশিক্ষা গ্রহণ করে আলোকিত মানুষ ও দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ হয়ে একটি সুখী ও সমৃদ্ধশালী বাংলাদেশ গড়ে তুলবে এটাই তোমাদের কাছে প্রত্যাশা করছি।’ শেরপুর সরকারী মহিলা কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক আশীষ চন্দ্র কর কৃতী শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে বলেন, শুধু ভালো ফল করলেই হবেনা। মাকে ও দেশকে ভালোবাসতে হবে। এই সমাজের মানুষকে সেবা করতে হবে। দেশের উন্নয়নে কাজ করতে হবে। বিজ্ঞান মনস্ক ও প্রযুক্তি নির্ভর শিক্ষায় সুশিক্ষিত হয়ে এই দেশকে অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বী দেশ হিসেবে গড়ে তুলতে হবে। তবেই এ প্রাপ্তি সার্থক হবে। শেরপুর সরকারী কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক মোঃ আব্দুল গনি বলেন, শিক্ষাই জাতির মেরুদন্ড। শিক্ষাই শক্তি। তাই যেসব মেধাবী শিক্ষার্থী আজ সংবর্ধিত হলে তোমরা তোমাদের মেধা দিয়ে ভবিষ্যতে দেশ ও জাতির মুখ উজ্জল করবে। পাশাপাশি যারা এদেশে মাদকের অপব্যবহার করে এবং নারীদের উত্যক্ত করে সমাজকে অস্থিতিশীল করে তুলছে তাদেরকে প্রতিরোধে আজ তোমাদের অঙ্গীকারাবদ্ধ হতে হবে।’
পরে জেলার ৬ শতাধিক কৃতি শিক্ষার্থী ও ৩ টি সেরা বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের হাতে ক্রেস্ট ও সনদ তুলে দেওয়া হয়। এর আগে অনুষ্ঠানের সভাপতি ড. সুধাময় দাস উপস্থিত কৃতি শিক্ষার্থীদের আলোকিত মানুষ হওয়ার প্রত্যয় এবং মাদক, নারী নির্যাতন ও দুর্নীতি প্রতিরোধ করার শপথ বাক্য পাঠ করান। সংবর্ধনার জবাবে প্রতিক্রিয়া জানিয়ে কৃতি শিক্ষার্থী মেহেরুন্নাহার মীম বলেন, ‘এই সংবর্ধনা শুধু আমাদের গর্বিত করেনি, আমাদের পিতা-মাতাকেও গর্বিত করেছে। আজ যে স্বীকৃতি পেলাম তা থেকে অনুপ্রেরণা নিয়ে ভবিষ্যতে আলোকিত মানুষ হয়ে দেশের সেবা করতে চাই।’ পরে শেরপুরের ৫টি উপজেলার ৬ শতাধিক কৃতী শিক্ষার্থী ও ৩টি সেরা বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের হাতে ক্রেস্ট ও অভিনন্দন পত্র তুলে দেওয়া হয়। সেইসঙ্গে জিপিএ-৫ প্রাপ্ত কৃতী শিক্ষার্থীদের বিনামূল্যে টেলিটকের সিম কার্ড বিতরণ করা হয়।
