স্টাফ রিপোর্টার : জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের ৩৭তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষ্যে শেরপুরে আলোচনা সভা ও কবিতা পাঠের অনুষ্ঠান হয়েছে। ২৮ আগস্ট বুধবার সন্ধ্যায় শেরপুর প্রেসক্লাবে কবিসংঘ ওই অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।
কবিসংঘের সভাপতি কবি, সাংবাদিক ও কলামিস্ট তালাত মাহমুদের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় মূখ্য আলোচক হিসেবে নজরুলের জীবন ও সৃষ্টি নিয়ে আলোকপাত করেন জেলা আইনজীবী সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক, শ্যামলবাংলা২৪ডটকম সম্পাদক রফিকুল ইসলাম আধার। নির্ধারিত আলোচক হিসেবে অংশ নেন জেলা সাংবাদিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মুগনিউর রহমান মনি, সাপ্তাহিক নতুন যুগ সম্পাদক মেরাজ উদ্দিন ও অনুপ্রাস এর সভাপতি কবি আনিসুর রহমান রিপন। অন্যান্যের মধ্যে আলোচনায় অংশ নেন প্রভাষক মাসুদ হাসান বাদল, প্রভাষক আনিসুর রহমান আকন্দ, কবি মোঃ শাহীন খান প্রমুখ।

এসময় সভাপতির বক্তব্যে কবি তালাত মাহমুদ বলেন, জাতীয় কবি নজরুলকে আজ জাতির সামনে সঠিকভাবে তুলে ধরা হচ্ছে না। হচ্ছে না তার যথাযথ মূল্যায়ন। তার সৃষ্টিকে কাজে লাগালে জাতি অনেক উপকৃত হবে। তিনি বলেন, যদি নজরুলের গান-কবিতা সারা পৃথিবীর মানুষের মাঝে ছড়িয়ে দেয়া যেত, যদি কবির অসাম্যের বাণী সর্ম্পকে সকলে জানত, তাহলে বিশ্বে এত হানাহানি হত না।
মূখ্য আলোচকের বক্তৃতায় সাংবাদিক কলামিস্ট রফিকুল ইসলাম আধার ‘আমি চিরতরে দূরে চলে যাব, তবু আমারে দেব না ভূলিতে’ নজরুলের এই আত্মবিশ্বাসের পংক্তি উচ্চারণ করে বলেন, নজরুল নিজেও জানতেন তাকে ভূলা অসম্ভব। বাঙালি তাকে ভুলতে পারবে না কোনোদিন। হয়েছেও তাই। বাঙালির প্রতিটি প্রাণে বেছে আছেন তিনি। তিনি বলেন, পরাধীন ভারতবর্ষে জন্মগ্রহণ করলেও নজরুল ছিলেন স্বাধীন সত্ত্বার অধিকারী। মাত্র ২২ বছর বয়সে তিনি লিখেছিলেন ধুমকেতু কবিতাটি। বিখ্যাত এই কবিতায় তিনি উপমহাদেশের স্বাধীনতার দাবি তুলে ধরেছিলেন। তিনি বাঙালির মুক্তি চেয়েছিলেন, মানুষের মুক্তি চেয়েছিলেন। তিনি চলে গেছেন, তবে গান, কবিতাসহ অসংখ্য সৃষ্টি রেখে গেছেন, আমরা তার সৃষ্টি যতই চর্চা করব ততই সমৃদ্ধ হব। আলোচক মুগনিউর রহমান মনি বলেন, সব ধর্মের প্রতি শ্রদ্ধা ছিল নজরুলের। ইসলাম ধর্মের অনুসারী হয়েও বিদ্যমান সব ধর্মের ভেতর আর সব সাধনার ভেতর থেকে সৌন্দর্য কুড়িয়ে নিয়েছেন। এই বাংলা, বাঙালী, সংগ্রাম, অর্জন, বর্তমান, ভবিষ্যত পরিক্রমায় যদি কোন কবিকে সনাক্ত করা যায়, তবে তিনি নজরুল। অন্য আলোচক কবি আনিসুর রহমান রিপন বলেন, নজরুল মানুষের ভেতরের শক্তিকে জাগিয়ে তোলার চেষ্টা করেছেন। এই শক্তির মৃত্যু নেই। প্রতিটি বাঙালির হৃদয়ে জন্ম নেবে নজরুল।
পরে নজরুলের কবিতা পাঠের মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠানের সমাপ্তি ঘটে।
