স্টাফ রিপোর্টার : এক ছাত্রদল নেতাকে গ্রেফতারের প্রতিবাদে শহরে গাড়ী ভাংচুরের ঘটনায় পুলিশের দায়ের করা মামলায় শেরপুর জেলা বিএনপি’র ভারপ্রাপ্ত সভাপতি আব্দুর রাজ্জাক আশীষসহ ৮৩ নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল হয়েছে। ২৭ আগস্ট মঙ্গলবার বিকেলে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা সদর থানার এসআই বন্দে আলী সদর জিআর কগনিজেন্স আদালতে ওই অভিযোগপত্র দাখিল করেন। এর মধ্যে এজাহারনামীয় ৭২ জন আসামীর মধ্যে ৪জনকে অব্যাহতির আবেদন এবং তদন্তে প্রাপ্ত ১৫ জনকে অর্ন্তভূক্ত করা হয়েছে। এজাহার ও অভিযোগপত্রে অর্ন্তভূক্ত উল্লেখযোগ্য নেতাদের মধ্যে রয়েছেন শেরপুর সদর আসনে দলীয় মনোনয়ন প্রত্যাশী শিল্পপতি হযরত আলী, জেলা বিএনপির সহ-সভাপতি হাতেম আলী চেয়ারম্যান ও আওয়াল চৌধুরী। সদর জিআর কগনিজেন্স আদালতের দায়িত্বে থাকা চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট মোঃ সেলিম মিয়া পরবর্তী কার্যক্রম গ্রহণের জন্য মামলাটি আইনশৃংখলা বিঘœকারী অপরাধ (দ্রুতবিচার) আদালতে প্রেরণ করেন। মামলাটির পরবর্তী তারিখ ধার্য করা হয়েছে ৩ সেপ্টেম্বর।
উল্লেখ্য, ১৬ আগষ্ট সন্ধ্যায় জেলা ছাত্রদলের সাংঠনিক সম্পাদক রবিউল আলম রাসেলকে গ্রেফতারের প্রতিবাদে জেলা শহরের রঘুনাথ বাজার এলাকায় উত্তেজিত নেতা-কর্মীরা কয়েকটি গাড়ী ভাংচুর করে। ওই ঘটনায় এক এসআইসহ পুলিশের ৪ সদস্য আহত হয়। পরদিন সদর থানার এসআই মনিরুল আলম ভূইয়া বাদী হয়ে পুলিশ অ্যাসল্ট ও দ্রুত বিচার আইনে সদর থানায় পৃথক দুটি মামলা দায়ের করেন। উভয় মামলাতেই ৭২ জনকে স্বনামে ও অজ্ঞাতনামা ৫০/৬০ জনকে আসামী শ্রেণীভূক্ত করা হয়। ওই দুই মামলার মধ্যে গাড়ি ভাংচুরের মামলায় চার্জশীট দাখিল হলেও পুলিশ অ্যাসল্টের মামলাটি এখনও তদন্তাধীন রয়েছে।
এদিকে একই দিনে গাড়ী ভাংচুরের পৃথক ঘটনায় আদালতে ১৯ বিএনপি নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে ক্ষতিগ্রস্ত পক্ষের তরফ থেকে দ্রুত বিচার আইনে একটি নতুন মামলা দায়ের হয়েছে। ২৫ আগস্ট ওই মামলাটি দায়ের করেছেন লুতফর রহমান নামে এক গাড়ীর হেলপার। চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট মোঃ সেলিম মিয়া মামলাটি এফআইআর হিসেবে গণ্য করে পরবর্তী কার্যক্রম গ্রহণের জন্য শেরপুর সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে নির্দেশ প্রদান করেন। ওই মামলাতেও জেলা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি আব্দুর রাজ্জাক আশীষ, সদর আসনে দলীয় মনোনয়ন প্রত্যাশী শিল্পপতি হযরত আলী, জেলা বিএনপির সহ-সভাপতি হাতেম আলী চেয়ারম্যান ও আওয়াল চৌধুরী, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এস.এম শহীদুল ইসলামসহ ১৯ জনকে স্বনামে এবং অজ্ঞাত ২০/২৫ জনকে আসামী করা হয়েছে। মামলার অভিযোগে বলা হয়েছে, ১৬ আগস্ট রাত সাড়ে ৮ টার দিকে তুরাগ সার্ভিসের একটি গাড়ী (ঢাকা -মেট্রো : ব-১১-৫৮৭৬) শেরীব্রিজ হয়ে বনগাওয়ের উদ্দেশ্যে রওনা হয়ে পশ্চিম শেরীপাড়াস্থ বনবিভাগ অফিসের সামনে পৌছলে বি্েনপি নেতাকর্মীরা দেশিয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে রাস্তায় গাছের গুড়ি ফেলে ব্যারিকেড সৃষ্টি করে। এক পর্যায়ে তারা গাড়িটির সামনের ও চার সাইডের গ্লাস ভাংচুর করে। সদর থানা ওসি মাজহারুল করিম ওই মামলার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, আদালতের নির্দেশে মামলা রুজু হয়েছে। তদন্ত ছাড়া ঘটনার বিষয়ে এখনই কিছু বলা যাচ্ছেনা।
অপরদিকে বিএনপি সংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্র জানিয়েছে, ১৬ আগস্টের ঘটনায় পুলিশের দায়ের করা দুটি মামলাতেই দলীয় নেতাকর্মীরা হাইকোর্ট থেকে অর্ন্তবর্তীকালীন জামিন নিয়েছেন। নতুন করা মামলাটিতেও উচ্চ আদালত থেকে জামিন নেওয়ার প্রস্তুতি চলছে।
