পাবনা প্রতিনিধি : প্রয়োজনীয় পানির অভাবে পাবনার কৃষকেরা পাট পঁচাতে (জাগ) পারছেনা। জেলার দক্ষিণ দিক দিয়ে পদ্মা নদী পূর্ব দিক দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে যমুনা নদী। এ ছাড়াও আছে বড়াল, চিকনাই, গুমানি এবং ইছামতি নদী। এর পরেও পানির সংকট। তাই কৃষককে বাধ্য হয়ে খালে-খন্দে, ডোবা-নালায় বৃষ্টির পানিতে পাট পঁচাতে (জাগ) বাধ্য হচ্ছে। নোংরা ময়লা পানিকে পাট পঁচানোর ফলে পাটের রং ও গুনাগুন নষ্ট হয়ে যাচ্ছ। বন্যার পানিতে সাধারণত এদেশের কৃষকেরা পাট জাগ দেয়। কিন্তু বন্যা না হওয়ায় পানির সংকট দেখা দেয়ায় কৃষকেরা তাদের উৎপাদিত পাট নিয়ে বিপাকে পড়েছে। খালে খন্দে যে পানি আছে তাও পর্যাপ্ত না। চলনবিল এবং বিল গাজনাতেও পর্যাপ্ত পানি নেই। নদী, খাল-বিলে যেখানে যেটুকু পানি আছে সেই পানিতেই পাট জাগ দিচ্ছে পাবনার কৃষকেরা। এতে পরিবেশেরও মারাত্মক ক্ষতি হচ্ছে। ইছামতি নদীর পানি পচে গেছে। বেড়া থেকে সাঁথিয়া উপজেলার আতাইকুলা পর্যন্ত নদীতে কয়েক হাজার একর জমির পাট জাগ দেয়া হয়েছে। এতে নদীর পানি দুষিত হয়ে গেছে। পানিতে গোছল করলেই এখন খোস-পাচড়া ও চুলকানি হচ্ছে। গৃহস্থলী কাজে ইছামতির পানি ব্যবহার করা যাচ্ছে না।
রিবন রেটিং পদ্ধতি এই এলাকার কৃষকদের মধ্যে তেমন জনপ্রিয়তা বা প্রসার লাভ না করায় সমস্যা আরও প্রকট হয়েছে। আটঘড়িয়া, আতাইকুলা, পাবনা সদর এবং ঈশ্বরদী এলাকার কৃষকরা পাট কেটে জমিতেই স্তুপ করে রেখেছে। কোন কোন এলাকায় সড়ক পাশ্ববর্তী খালে এবং ডোবাতে পাট জাগ দিচ্ছে। ঘোলা এবং কর্দমাক্ত পানিতে পাট জাগ দেয়ার কারণে পাটের মান খারাপ হচ্ছে। এতে কৃষক পাটের ভাল দাম থেকে হচ্ছে বঞ্চিত। প্রায় ৭/৮ কিলোমিটার দূরের জলাশয়ে পাট জাগ দিতে কৃষককে বাড়তি খরচ করতে হচ্ছে। গরুর গাড়ি, নসিমন, করিমন ও ভ্যানে করে নিয়ে যেতে হচ্ছে কাঁচা পাট দূরের জলাতে। কৃষকের কাছে পাট যেন এখন গলার ফাঁস।
