পাবনা প্রতিনিধি : পাবনার বেড়া মডেল থানা সীমানা লাগোয়া ৫ তলা ভবনে ১৯ আগস্ট সোমবার রাতে শারমীন আক্তার (২১) নামে এক গৃহ পরিচারিকার রহস্যজনক মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে। ওই গৃহ পরিচারিকার লাশ শাহজাদপুর থানা পুলিশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য সিরাজগঞ্জ মর্গে প্রেরন করেছে। বেড়া থানা লাগোয়া ৫ তলা ভবনটির মালিক বেড়া পৌরসভার মেয়র আব্দুল বাতেন। গৃহপরিচারিকার রহস্যজনক মৃত্যু আর তার লাশ নিয়ে লুকোচুরির ঘটনায় এলাকায় ব্যাপক তোলপাড় চলছে।
জানা যায়, বেড়া মডেল থানা সংলগ্ন ভবনটির ৫ম তলায় সিরাজগঞ্জ জেলার শাহজাদপুর উপজেলার বাসুরিয়া গ্রামের মোহাম্মদ আলীর ছেলে ব্যবসায়ী মোঃ শরিফ স্ব-পরিবারে বসবাস করেন। ওই বাসায় সাঁথিয়া উপজেলার আমাইকোলা গ্রামের বাবুলের মেয়ে শারমীন আক্তার দীর্ঘদিন ধরে গৃহ পরিচারিকার কাজে নিয়োজিত ছিল। সোমবার রাত সাড়ে ৮ টার দিকে অসুস্থ অবস্থায় শারমীন আক্তারকে বেড়া হাসপাতালে নেয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষনা করেন। এর পরপরই দ্রুত হাসপাতাল থেকে শারমীনের লাশ নিয়ে যাওয়া হয়। কিন্তু লাশের কোন সন্ধান পাওয়া যাচ্ছিল না। পরে জানা যায়, গৃহ পরিচারিকা শারমীন আক্তারের রহস্যজনক মৃত্যু হলেও লাশের ময়না তদন্ত না করেই তার বাবার বাড়ী সাঁথিয়া উপজেলার আমাইকোলায় না নিয়ে শাহজাদপুর উপজেলার করশালিখা গ্রামে তার নানার বাড়ীতে নিয়ে গোপনে দাফনের উদ্যোগ নেয়ার কথা। খবর পেয়ে ওই ঘটনায় বেড়ায় কর্মরত সংবাদিকরা তৎপর হয়ে উঠলে পুলিশ প্রশাসন নড়েচড়ে বসে। ইতোমধ্যে একটি অভিযোগের ভিত্তিতে শাহাজাদপুর থানা পুলিশ মঙ্গলবার দুপুরে শাহজাদপুর উপজেলার করশালিখা গ্রাম থেকে শারমীনের লাশ উদ্ধার করে সিরাজগঞ্জ জেনারেল হাসপাতাল মর্গে প্রেরন করে। এ ব্যাপারে শাহজাদপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হাসান শামীম ইকবাল জানান, গর্ভপাতের কারনে মৃত্যু হয়েছে মর্মে অভিযোগ পাওয়ায় উপজেলার করশালিখা গ্রামে অভিযান চালিয়ে মঙ্গলবার দুপুরে লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য সিরাজগঞ্জ মর্গে প্রেরন করা হয়েছে। লাশের ময়না তদন্তের পর মৃত্যুর প্রকৃত কারন জানা যাবে। অন্যদিকে সহকারী পুলিশ সুপার (বেড়া সার্কেল) মোঃ আবু বকর জানান, সোমবার রাত ১১ টার দিকে শারমীনের চাচার পরিচয়ে দুই ব্যক্তি তার কাছে এসেছিল। তাদের লাশ দাফন করতে নিষেধ করা হয়। তবে তিনি তাদের পরিচয় জানেন না বলে গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন।
এদিকে, মঙ্গলবার সকালে ৫ তলা ভবনটি ঘুরে দেখা যায়, মোঃ শরিফের বাসার দরজায় তালা ঝুলছে। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ঘটনার পরপরই সে স্বপরিবারে গা-ঢাকা দিয়েছে। এ ব্যাপারে শরিফের বড় ভাই বেড়া উপজেলা কৃষি বিভাগে কর্মরত উপসহকারি কৃষি কর্মকর্তা মোঃ আব্দুল মতিনের সাথে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে, তিনি এ বিষয়ে পত্রিকায় রিপোর্ট না করার জন্য অনুরোধ করেন।
