জিয়াউর রহমান জিয়া,রাজীবপুর:কুড়িগ্রামের ‘রাজীবপুরের কথিত স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী’ আব্দুস সামাদ (৪৬) এর বিরুদ্ধে অবশেষে মামলা রুজু হয়েছে। সরকারি কর্তব্য কাজে বাধা দান ও লাঠিশোটা নিয়ে দলবদ্ধ হয়ে বিজিবি জোয়ানদের ওপর চড়াও হওয়ার ঘটনায় মামলাটি দায়ের করেন বালিয়ামারী বিজিবি ক্যাম্পের কোম্পানী কমান্ডার নায়েক সুবেদার আলতাব হোসেন।

জানা যায়,রাজীবপুর উপজেলার বালিয়ামারী সীমান্ত হাটে (বর্ডার হাট) দায়িত্ব পালন কালে বিজিবি জোয়ানদের সঙ্গে হাটের ক্রেতাবিক্রেতাদের মাঝে হট্টগোলের সৃষ্টি হয়২৪ জুলাই । এতে ‘রাজীবপুরের কথিত ওই স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী’ দলবদ্ধ হয়ে বিজিবি জোয়ানদেরকে সীমান্ত হাটে অবরুদ্ধ করে। ওই ঘটনায় বিভিন্ন ক্যাম্প থেকে অতিরিক্ত বিজিবি জোয়ান ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে এবং অবরুদ্ধ বিজিবি জোয়ানদের উদ্ধার করে। পরে বিজিবি জোয়ানরা ওই দিনই রাজীবপুর থানায় অভিযোগ দায়ের করে। কিন্তু সরকার দলীয় প্রভাবশালী মহলের চাপের কারনে পুলিশ কোনঠাসা অবস্থায় ছিল। ঘটনার ২০ দিন পর অবশেষে বুধবার ১৪আগস্ট আব্দুস সামাদকে প্রধান করে ২০/২৫ জনের নামে মামলা রেকর্ডভুক্ত করা হয়।
উল্লেখ্য, ‘রাজীবপুরের কথিত ওই স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী’ রাজীবপুর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান এবং উপজেলা আ’লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আকবর হোসেন হিরোর ছোট ভাই। আ’লীগ ক্ষমতায় আসার পর আব্দুস সামাদ দলের সাধারণ একজন কর্মী হয়েও প্রভাব বিস্তার শুরু করে। এর ফলে তার বন্ধুরা কৌতুহলবশত বা মজা করে আব্দুস সামাদকে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলে সম্ভোধন করে। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বললে তিনিও মজা পান এবং খুশি হন। আর এ কারনে আস্তে আস্তে দলের ভিতর ছাড়াও সাধারণ মানুষের মাঝেও ‘স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী‘ হিসেবে পরিচিতি লাভ করেন। রাজীবপুর উপজেলার প্রায় সর্বস্তরের মানুষও জানে ‘রাজীবপুরের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী’ হলেন আব্দুস সামাদ।
[
এ ব্যাপারে অভিযুক্ত আব্দুস সামাদ বলেন, ‘বিজিবি জোয়ানদের কাজে বাধা দেওয়ার কোনো ঘটনা ঘটেনি। এমনকি তাদের ওপর চড়াও হওয়ার মতোও কিছুই হয়নি। আসল কথা হলো বর্ডার হাটের ক্রেতাবিক্রেতাদের অহেতুক হয়রানি করে বিজিবি জোয়ানরা। হাটে থেকে জিনিসপত্র কিনে বাইরে নেওয়ার সময় ওইসব জিনিসপত্র বিজিবি জোয়ানরা আটক করে। আমি ওই সব ঘটনার প্রতিবাদ করেছি মাত্র। আর এতেই ক্ষিপ্ত হয়ে বিজিবি আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দায়ের করেছে।’

অন্যদিকে রাজীবপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) রবিউল ইসলাম জানান, ঘটনার প্রাথমিক সত্যতা পেয়েই কথিত স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আব্দুস সামাদ গংদের বিরুদ্ধে বিজিবি‘র দেয়া মামলা রেকর্ড করা হয়েছে। এখন আসামিদের গ্রেপ্তার এবং একই সঙ্গে ঘটনার তদন্ত চলছে।
