স্টাফ রিপোর্টার : মায়ের বকুনি সহ্য করতে না পেরে আত্মহত্যা করতে গিয়ে নিশ্চিত মৃত্যুর হাত থেকে ফিরে এসেছে কনা সুলতানা কনিকা (২২) নামে এক গৃহবধূ। ঘটনাটি ঘটেছে হত ১১ আগস্ট পড়ন্ত বিকেলে শেরপুর জেলার নকলা উপজেলা সদরের ইশিবপুর মহল্লায়।
জানা যায়, ইশিবপুর মহল্লার বাসিন্দা মোঃ কাজিম উদ্দিন ওরফে কাজুর প্রথমা কন্যা মোছাঃ কনা সুলতানা কনিকার সাথে তার মা স্বামীর বাড়ি যেতে না পারা ও অন্যান্য প্রসঙ্গ তুলে তাকে বকাবকি ও ভৎর্সনা করলে সে অভিমান করে তার থাকার ঘরে গিয়ে দরজা বন্ধ করে দেয় এবং ধর্ণার সাথে ওড়না বেঁধে কনিকা তার গলায় ফাঁস লাগিয়ে ঝুলে পড়ে। এসময় দরজা খুলতে না পেরে কনিকার ছোটবোন চিৎকার শুরু করলে পাশের বাসার রনি নামের একটি ছেলে দৌড়ে এসে ঘরের সিলিং ফাঁক করে উপরে উঠে ধর্ণার সাথে বাঁধা ওড়না কেটে দিলে কনিকার নিথর দেহ ঘরের মেঝেতে পড়ে যায়। পরে তাকে মূমূর্ষ অবস্থায় দ্রুত নকলা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে চিকিৎসার পর সে শঙ্কামুক্ত হয়। ঘটনাটি এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করেছে।
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য যে, গত ২০১২ ইং সালের ৩১শে জানুয়ারী নকলা উপজেলার পাইস্কা গ্রামের মোশারফ হোসেন দুলালের পুত্র মোঃ মনির হোসেনের সাথে একই উপজেলার ইশিবপুর মহল্লর মোঃ কাজিম উদ্দিনের কাজুর কন্যা মোছাঃ কনা সুলতানা কনিকার বিয়ে হয়। বিয়ের কিছুদিন পর নববধূকে নিজ বাড়িতে রেখে গত ১০/৪/২০১২ইং তারিখে স্বামী মোঃ মনির হোসেন তার কর্মস্থলে যোগদানের উদ্দেশ্যে সৌদি আরব চলে যান। এরপর থেকেই শুরু হয় ষড়যন্ত্র। ধণাঢ্য শ্বশুরের নিকট থেকে মোটা অঙ্কের অর্থ আদায়ের কৌশল হিসাবে এবং তার শ্বশুর ও শ্বাশুড়িকে ফাঁসাতে কনা সুলতানা কনিকা তার পিতামাতা ও অন্যান্য আত্মীয়-স্বজনের কুপরামর্শে কনিকা পাইস্কাস্থ তার শ্বশুর বাড়ি থেকে গত ১৪/৪/২০১২ ইং তারিখ ভোর রাতে ২ লাখ ৪২ হাজার টাকার স্বর্ণালঙ্কার নিয়ে পালিয়ে যায়। তাৎণিক খবর পেয়ে কনিকার মা-বাবা ও আত্মীয়-স্বজন তার শ্বশুর বাড়িতে গিয়ে সন্ত্রাসী হামলা চালায় এবং ঘরের মূল্যবান আসবাবপত্র তছনছ করে। এছাড়াও কনিকার শ্বশুর-শ্বাশুড়িকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে ও প্রাণনাশের হুমকী দেয়। শুধু তাই নয়, কনিকার বাবা কাজিম উদ্দিন ওরফে কাজু বাদী হয়ে কনিকার শ্বশুর মোঃ মোশারফ হোসেন দুলাল ও শ্বাশুড়ি নাজমা বেগমকে বিবাদী করে তার মেয়েকে হত্যা করে লাশ অজ্ঞাত স্থানে গুম করা হয়েছে মর্মে অভিযোগ এনে নকলা থানায় লিখিত অভিযোগ দাখিল করে।
ঘটনাটি পরিকল্পিত ও ষড়যন্ত্রমূলক বলে নিশ্চিত হতে পেরে নকলা উপজেলা চেয়ারম্যান শাহ মোঃ বোরহান উদ্দিন তাৎণিক কাজিম উদ্দিন কাজুকে তলব করে অবিলম্বে তার মেয়েকে হাজির করার জন্য চাপ প্রয়োগ করেন। কাজু ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে এবং ওইদিনের মধ্যেই তার মেয়ে কনিকাকে গাজিপুর থেকে এনে উপজেলা চেয়ারম্যানের সামনে হাজির করে। এসময় তারা স্বামী-স্ত্রী উপজেলা চেয়ারম্যানের হাত পা ধরে তাদের কৃতকর্মের জন্য মা প্রার্থনা করে।
এদিকে মোঃ মোশারফ হোসেন (দুলাল) তার বাড়ি থেকে পুত্রবধূ কনিকা স্বর্ণালঙ্কারসহ পালিয়ে যাওয়ার পূর্বাপর ঘটনার বর্ণনা দিয়ে এবং তার জানমালের নিরাপত্তা চেয়ে মোঃ কাজিম উদ্দিন কাজু গং এর বিরুদ্ধে নকলা থানায় একটি জিডি করেন। জিডি নং-১৯৪, তারিখ ৬/৮/১২ ইং। উল্লেখ্য, মোঃ মোশারফ হোসেন দুলালকে প্রতিপ কাজু গং এখনো নানাভাবে হুমকি প্রদান করে আসছে বলে অভিযোগে প্রকাশ।