ads

বুধবার , ৭ আগস্ট ২০১৩ | ৫ই ফাল্গুন, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের নিবন্ধনপ্রাপ্ত অনলাইন নিউজ পোর্টাল
  1. ENGLISH
  2. অনিয়ম-দুর্নীতি
  3. আইন-আদালত
  4. আন্তর্জাতিক
  5. আমাদের ব্লগ
  6. ইতিহাস ও ঐতিহ্য
  7. ইসলাম
  8. উন্নয়ন-অগ্রগতি
  9. এক্সক্লুসিভ
  10. কৃষি ও কৃষক
  11. ক্রাইম
  12. খেলাধুলা
  13. খেলার খবর
  14. চাকরির খবর
  15. জাতীয় সংবাদ

অজানা ধান গবেষক সেন্টু হাজং

শ্যামলবাংলা ডেস্ক
আগস্ট ৭, ২০১৩ ১০:০৪ অপরাহ্ণ

Sentu H-রফিকুল ইসলাম আধার : সেন্টু হাজং; স্ব-শিক্ষিত এক ধান গবেষকের নাম। শংকরায়ন ও ব্রিডিং পদ্ধতিতে নিজ হাতেই এই আদিবাসী কৃষক বিলুপ্তপ্রায় ২৫ প্রজাতির ধান নিয়ে গবেষণা চালিয়ে পেয়েছেন সফলতা। তবে এখনও পাহাড়ি জনপদের অন্ধকারে আটকে আছে তার পরিচিতি। ফলে এই স্ব-শিক্ষিত ধান গবেষক এখনও রয়ে গেছেন অজানা-অচেনা। এখনও তার খোঁজ পায়নি কৃষি বিভাগ।
সেন্টুচন্দ্র হাজং (৪২) শেরপুরের নালিতাবাড়ী উপজেলার নয়াবিল ইউনিয়নের চাটকিয়া গ্রামের স্বল্প শিক্ষিত আদিবাসী কৃষক। তিনি কৃষি কাজের সাথে প্রায় ২৫ বছর যাবত জড়িত থাকলেও নতুন জাতের দেশী ধান আবিষ্কার করতে তার অনবরত গবেষণা চলছে প্রায় ৬ বছর ধরে। বর্তমান বৈজ্ঞানিক যুগে কৃষি বিজ্ঞানিরা যখন অল্প জমিতে অধিক উৎপাদন করতে নানা রকম গবেষনা চালিয়ে নতুন নতুন জাতের ধান আবিষ্কার করছেন, ঠিক তখন সেন্টু হাজং কালের আবর্তে হারিয়ে যাওয়া বা বিলুপ্ত হতে চলা ধান নিয়েই গবেষনা করছেন। গ্রামীণ বাংলার ঐতিহ্যের রকমারী খাবার-পিঠাপুলির স্বাদ আস্বাদনের স্বার্থেই দেশী জাতের ধানগুলো যেন কৃষকের মাঝ থেকে হারিয়ে না যায়Ñ এজন্যই তার ওই নিরন্তর প্রচেষ্টা। নতুন নতুন জাতের ধান আবিষ্কারের কাজে তার কোন অলসতা নেই। ইতোমধ্যে স্থানীয়ভাবে অর্জিত সফলতায় এখন তিনি বেশ উৎসাহ-উদ্দীপনা নিয়েই তার গবেষণার কাজ করছেন।
বেসরকারী উন্নয়ন সংস্থা কারিতাসের সহায়তায় সেন্টু হাজং তার গবেষণা কার্যক্রম শুরু করেন। এজন্য প্রথমেই তাকে স্থানীয় আইপিএম স্কুলে কৃষি বিষয়ে প্রশিক্ষণ নিতে হয়। এরপর থেকেই শুরু হয় ব্রিডিং ও শংকরায়ন পদ্ধতিতে নতুন জাতের দেশী ধান উদ্ভাবনের কাজ। সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, বোরো মৌসুম শেষ হওয়ায় এখন সেন্টু হাজংয়ের খামারে আমনের বীজতলা তৈরির প্রস্তুতি চলছে। বীজতলা তৈরির কাজে ব্যবহার হচ্ছে গোবর সার ও নিজের তৈরি কেঁচো কম্পোষ্ট সার। মাটির গুনাগুন ধরে রাখতে রাসায়নিক সার ও কীটনাশক প্রয়োগের বিকল্প হিসেবে সম্পুর্ন জৈব সার প্রয়োগেই চলে সেন্টু হাজংয়ের বীজতলা তৈরি, আবাদ ও গবেষণা কার্যক্রম। গবেষণার পাশাপাশি নিজের ৬ একর জমিতে দেশি জাতের আমন ধান আবাদে আগাম প্রস্তুতিতে এখন ব্যস্ত তিনি। এজন্য বীজতলা তৈরি হচ্ছে চিনিশাইল, তুলসিমালা, পাইজাম, ঢেপা, চাপাল, পুরাবিন্নি ও নেদরাবিন্নি ধানের। এছাড়া প্রায় বিলুপ্ত হয়ে গেছে বা বিলুপ্ত হতে চলেছে এমন দেশী জাতের ধান বগি, হালই, গোলাপী, মালঞ্চি, ময়নাগিড়ি, মালসিরা, অনামিয়া, পারিজাত, আপচি, কাইশাবিন্নি, মারাক্কাবিন্নি, শংবিন্নি, দুধবিন্নি, বিরই, চাপাল, খাসিয়াবিন্নিসহ বেশ কয়েক রকমের আমন জাতের ধান তার সংরক্ষণে রয়েছে। তিনি বিলুপ্তির হাত থেকে রক্ষার জন্য ওইসব ধান মৌসুমভেদে খন্ড খন্ড জমিতে লাগিয়ে গবেষণায় সফলতা পেয়েছেন। সেন্টু হাজং দৈনিক জনকণ্ঠকে জানান, কারিতাস থেকে প্রশিক্ষণ গ্রহন করে তিনি নিজেই শংকরায়ন ও ব্রিডিং পদ্ধতিতে নতুন জাতের ধান আবিষ্কার করেছেন। এজন্য প্রতি বছর নিজ জমিতে ট্রায়ালও করেছেন। তার মতে, তার গবেষণা খামারে নাম ও নামবিহীন প্রায় ১১৫ প্রজাতির ধানবীজ সংরক্ষিত রয়েছে। তবে এখনও তার শংকরায়নকৃত নতুন জাতের ধানের নাম নির্ধারণ করেননি। তিনি জানান, আবাদী জমিতে রাসায়নিক সার ব্যবহারের ফলে দিন দিন উর্বরতা শক্তি কমে আসছে। এজন্য কেঁচো কম্পোষ্ট ও গোবর সার ব্যবহার করা উত্তম। জৈব পদ্ধতির সার ব্যবহারে ধানের গাছ শক্ত-মজবুত হয়। ঝড় বৃষ্টি কিংবা উচু হলেও তা হেলে পড়ে না এবং তাতে উৎপাদিত খাদ্যের পুষ্টি শক্তিও বাড়ে। এ পদ্ধতি ব্যবহারে দানের উৎপাদন খরচও কম হয়। এছাড়া জৈব সার ব্যবহারে ফসলে পোকার আক্রমণ একটু আধটু হলেও নিমপাতা, গোলঞ্চপাতা ও বাসকপাতা পানিতে ভিজিয়ে ফুটিয়ে তারপর মেশিনের সাহায্যে জমিতে সামান্য ¯েপ্রতেই তা মোকাবেলা করা যায়। এখনও তিনি হালের গরু দিয়ে ক্ষেত চাষ করেন। তার গবেষণায় রাখা দেশী জাতের ধানের আবাদ মোটামুটি ভাল হলে একরে ৩০-৪০ মণ হারে উৎপাদন হয়।
কিন্তু সেন্টু হাজংয়ের ওই ব্যতিক্রমী উদ্যোগ আর গবেষণায় এখনও নজর পড়েনি সংশ্লিষ্ট উচ্চমহলের। প্রচারবিমূখ ও স্বশিক্ষিত এই কৃষকের উদ্যোগ-গবেষণায় একটু প্রযুক্তিগত সহায়তা আর সাহস যোগালেই তিনি অল্পেই পেয়ে যেতে পারেন জাতীয় পরিচিতি। সেইসাথে আমরাও রক্ষা করত্ েপারি বিলুপ্তপ্রায় ২৫ জাতের ধান আর পেতে পারি শংকরায়ন পদ্ধতিতে নতুন জাতের ধান। বিষয়টির প্রতি ‘কৃষি ও কৃষকের উন্নয়নে বদ্ধপরিকর কৃষিবান্ধব সরকার’ এর সংশ্লিষ্ট বিভাগের নজর দেওয়ার প্রয়োজন নয় কী?

সর্বশেষ - ব্রেকিং নিউজ

Shamol Bangla Ads
error: কপি হবে না!