জিয়াউর রহমান জিয়া, রাজীবপুর থেকে : ‘সারাদিন রোজা থাইক্যা একটু আরাম কইরা ইফতার করমু, নামাজ পড়মু তাও পাইনা। দিনেও কারেন (বিদ্যুৎ) থাহেনা রাইতেও থাহেনা। এই কারেন থাহার চাইতেু না থাহাই ভালা’Ñ এই উক্তি উত্তরাঞ্চলের জেলা কুড়িগ্রামের রাজীবপুর উপজেলার ধূলাউড়ি গ্রামের কৃষক আমজাদ হোসেনের। ওই উক্তি কেবল আমজাদ হোসেনের নয়, ওই উক্তি গোটা রাজীবপুর ও রৌমারী উপজেলার বিদ্যুৎ সুবিধা বঞ্চিত সকল মানুষের।
রমজান মাস উপলক্ষ্যে ইফতার, তারাবী, সেহরীর সময় নিরবিচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ করার কথা থাকলেও সেই নিয়ম মানা হয়না রৌমারী ও রাজীবপুর উপজেলায়। দিনের বেলাতেও বিদ্যুৎ থাকেনা আবার ইফতার, তারাবী, সেহ্রীর সময়ও বিদ্যুৎ থাকেনা। বিদ্যুৎ বিভাগের অনিয়ন্ত্রিত লোডশেডিং এর কারণে সীমাহীন দূর্ভোগ পোহাচ্ছে ওই দুই উপজেলার মানুষ। কুড়িগ্রাম জেলা থেকে বিচ্ছিন্ন হওয়ায় এই দুই উপজেলায় বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হয় পার্শ্ববর্তী জামালপুর জেলার জামালপুর পল্লীবিদ্যুৎ সমিতি থেকে।
রাজীবপুর পল্লীবিদ্যুৎ সমিতির অফিস সূত্রে জানা গেছে, ওই দুই উপজেলায় বিদ্যুতের চাহিদা ৩.৫০ মেগাওয়াট। কিন্তু সরবরাহ করা হয় ১ মেগাওয়াট। রমজান মাসে চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় সরবরাহ করা হয় ১ মেগাওয়াটেরও কম। ফলে দিনে ও রাতে ১৮ ঘন্টাই বিদ্যুৎ থাকে না। বাকী ৬ ঘন্টাও আবার নিরবিচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হয়না। রাজীবপুর পল্লীবিদ্যুৎ সমিতির সভাপতি খলিলুর রহমান জানান, লোডশেডিং এর বিষয়ে আমরা অনেক অভিযোগ করি। কিন্তু বকশিগঞ্জ ও জামালপুরের কর্তৃপক্ষ কোন ব্যবস্থা নেয় না। রাজীবপুর উপজেলা পল্লীবিদ্যুৎ অফিস ইনচার্জ ছোরওয়ার্দী অত্যাধিক লোডশেডিং এর কথা স্বীকার করে বলেন, চাহিদার তুলনায় বিদ্যুতের সরবরাহ কম হওয়ায় লোডশেডিং বেশি হচ্ছে। তিনি আরও বলেন, রৌমারী রাজীবপুর লাইনে একটি সাবষ্টেশন নির্মাণ করা হলে লোডশেডিং এর পরিমাণ কমবে। বকশিগঞ্জ পল্লীবিদ্যুৎ সমিতির সাবষ্টেশনের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কর্মচারী বলেন রৌমারী রাজীবপুরে ইচ্ছাকৃতভাবেই অত্যাধিক লোডশেডিং দেওয়া হয়। বিষয়টি আমাদের উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ জানেন।
জামালপুর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির সহকারি জেনারেল ম্যানেজার পীযুজ কান্তি জানান, রৌমারী ও রাজীবপুর উপজেলায় একটি সাব স্টেশন স্থাপন করার উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। সাবস্টেশন নির্মাণ করা হলে লোডশেডিং কমে যাবে।
