শ্যামলবাংলা ডেস্ক : যুদ্ধাপরাধের অভিযোগে শীর্ষ নেতাদের মৃত্যুদন্ড-যাবজ্জীবন কারাদন্ডের পর এবার খোদ রেজিষ্ট্রেশন হারিয়েছে ‘ক্রিমিনাল সংগঠন’ জামায়াতে ইসলামী। ১ আগস্ট বৃহস্পতিবার দুপুরে রাজনৈতিক দল হিসেবে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর নিবন্ধনের বৈধতার প্রশ্নে করা রিট মামলার রায়ে দলটির নিবন্ধন অবৈধ ও বাতিল ঘোষণা করেছেন হাইকোর্ট। বিচারপতি এম মোয়াজ্জাম হোসেন, বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি কাজী রেজা-উল হকের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্টের পূর্ণাঙ্গ বেঞ্চ সুপ্রিম কোর্টের এনেক্স ২৪ নম্বর বিচারকক্ষে সংখ্যাগরিষ্ঠ মতের ভিত্তিতে এই রায় প্রদান করেন। এর আগে যুদ্ধাপরাধের দায়ে জামায়াতের সাবেক আমির গোলাম আযমের মামলার রায়ে ট্রাইব্যুনাল জামায়াতকে ‘ক্রিমিনাল সংগঠন’ হিসেবে অভিহিত করেন। এ অবস্থায় এখন থেকে রাজনৈতিক দল হিসেবে যুদ্ধাপরাধ ও স্বাধীনতা বিরোধী সংগঠন জামায়াতে ইসলামীর কোন অস্তিত্ব থাকল না।
এর আগে ১২ জুন উভয় পক্ষের শুনানি শেষে বিষয়টি রায়ের জন্য অপেক্ষমান রাখা হয়।
রিট আবেদনের পক্ষে যুক্তি উপস্থাপন করেন ব্যারিস্টার তানিয়া আমির এবং ইসির পক্ষে শুনানি করেন এডভোকেট মহসিন রশিদ। অপরদিকে আদালতে জামায়াতের পক্ষে শুনানিতে অংশ নেন ব্যারিস্টার আব্দুর রাজ্জাক।
এদিকে জামায়াতের বৈধতা প্রশ্নে রিটের রায়কে কেন্দ্র করে সুপ্রীম কোর্ট চত্বরে নেয়া হয় বাড়তি নিরাপত্তা। এনেক্স ২৪ নম্বর বিচারকক্ষের সামনে বসানো হয় আর্চওয়ে।

উল্লেখ্য, বাংলাদেশ তরিকত ফেডারেশনের তৎকালীন মহাসচিব ও বর্তমান প্রেসিডিয়াম সদস্য সৈয়দ রেজাউল হক চাঁদপুরীসহ ২৫ আবেদনকারী ২০০৯ সালে রিটটি দায়ের করেন। প্রাথমিক শুনানির পর ওই বছরের ২৭ জানুয়ারি বিচারপতি এ বি এম খায়রুল হক ও বিচারপতি আবদুল হাইয়ের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ বিষয়টির ওপর সংশ্লিষ্টদের প্রতি কারণ দর্শাতে রুল জারি করেন। রাজনৈতিক দল হিসেবে ২০০৯ সালের ৪ নভেম্বর বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর নিবন্ধন কেন আইনগত কর্তৃত্ববহির্ভূত এবং গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশের সঙ্গে পরিপন্থী ঘোষণা করা হবে না রুলে তা জানতে চাওয়া হয়। এরপর দীর্ঘদিন রিটের বিষয়ে শুনানি হয়নি। ৫ ফেব্রুয়ারির পর শাহবাগ আন্দোলনের প্রেক্ষাপটে বিষয়টি আবার সামনে নিয়ে আসা হয়। ১০ মার্চ জামায়াতের নিবন্ধনের বৈধতা নিয়ে করা রিটের ওপর শুনানির জন্য বৃহত্তর বেঞ্চ গঠন করেন প্রধান বিচারপতি মোঃ মোজাম্মেল হোসেন। এরপর বিচারপতি এম মোয়াজ্জাম হোসেন, বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহীম ও ও বিচারপতি কাজী রেজা-উল হক সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্টের বৃহত্তর বেঞ্চে এর উপর শুনানি হয়। এর আগে রিট আবেদনটিতে সাংবিধানিক ও আইনের প্রশ্ন জড়িত থাকায় বৃহত্তর বেঞ্চে শুনানির জন্য তা প্রধান বিচারপতির কাছে পাঠানোর আদেশ দেন বিচারপতি এম মোয়াজ্জাম হোসেন ও বিচারপতি কাজী রেজা-উল হক সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্টের একটি ডিভিশন বেঞ্চ।
