শ্যামলবাংলা ডেস্ক : দক্ষিণ আফ্রিকাসহ সারাবিশ্বে নানা আয়োজনের মধ্য দিয়ে পালিত হচ্ছে বর্ণবাদ-অবিচার ও শোষণ নিপীড়নের বিরুদ্ধে সংগ্রামী জীবন্ত কিংবদন্তি নেলসন ম্যান্ডেলার ৯৫তম জন্মদিন। দক্ষিণ আফ্রিকার কেপ প্রদেশের মভেজো গ্রামে থেম্বু গোত্রে ১৯১৮ সালের ১৮ জুলাই জন্ম নেন ম্যান্ডেলা। প্রথমে গোত্রের দেয়া ‘মাদিবা’ নামে পরিচিতি পান তিনি। ৯ বছর বয়সে বাবাকে হারান। শৈশব কাটে নানাবাড়িতে। এসময় এক মিশনারি স্কুলে ভর্তি হন। সেখানেই এক শিক্ষিকা তার নাম দেন ‘নেলসন’। এর থেকেই নেলসন ম্যান্ডেলা। ফুসফুসের গুরুতর জটিলতায় প্রিটোরিয়ার সামরিক হাসপাতালে তিনি চিকিৎসাধীন থাকায় বৃহস্পতিবার ওই হাসপাতালেই তার জন্মদিনের কেক কাটা হয়। প্রিয় নেতার জন্মদিন উপলক্ষে জোহানেসবার্গে ৫ হাজার কাপকেক দিয়ে ম্যান্ডেলার প্রতিকৃতি বানায় একটি সেবামূলক প্রতিষ্ঠান। কাপকেকগুলো বিক্রি করে যে অর্থ পাওয়া যাবে তা ক্যান্সারে আক্রান্ত শিশুদের চিকিৎসায় ব্যয় করা হবে। অন্যদিকে নেলসন ম্যান্ডেলার আরোগ্য কামনায় দক্ষিণ আফ্রিকাসহ সর্বত্র প্রার্থনা চলছে।
নেলসন ম্যান্ডেলার সংগ্রামী জীবনচিত্র পর্যালোচনায় দেখা যায়, তিনি বর্ণবাদ-জাতিবিদ্বেষ, অন্যায়-অবিচার আর শোষণ-নিপীড়নের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ-প্রতিরোধের আন্দোলন করে ধাপে ধাপে জীবন্ত কিংবদন্তিতে পরিণত হন। তিনি আধুনিক দক্ষিণ আফ্রিকার মুক্তি ঘটিয়েছিলেন বছরের পর বছর বর্ণবাদী দাঙ্গা ও সশস্ত্র সংগ্রামের পথ পেরিয়ে শেষমেশ অহিংস শান্তি ও সমন্বয়ের বাণীতেই। নিজ দেশে কালো মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠার পর দেশের নেতৃত্বও গ্রহণ করেন তিনি। দক্ষিণ আফ্রিকায় ১৯৯৪ থেকে ১৯৯৯ সাল পর্যন্ত গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত প্রথম রাষ্ট্রপতির দায়িত্বে ছিলেন ম্যান্ডেলা। ২০১০ সালে তার জন্মদিনকে ‘ম্যান্ডেলা দিবস’ হিসেবে ঘোষণা করে জাতিসংঘ। সারাবিশ্বের মানুষকে প্রতীক হিসেবে এক ঘণ্টা ভালো কাজে উৎসাহিত করা ছিল এর মূল উদ্দেশ্য। এছাড়া ম্যান্ডেলা জীবনের ৬৭ বছরই রাজনীতিতে সক্রিয় থাকায় দক্ষিণ আফ্রিকার স্বেচ্ছাসেবীরা তার সেই অবদানের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে তার জন্মদিনে ৬৭ মিনিট সমাজসেবামূলক কাজে ব্যয় করে আসছে।
