ads

বৃহস্পতিবার , ১৮ জুলাই ২০১৩ | ২৬শে ভাদ্র, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের নিবন্ধনপ্রাপ্ত অনলাইন নিউজ পোর্টাল
  1. ENGLISH
  2. অনিয়ম-দুর্নীতি
  3. আইন-আদালত
  4. আন্তর্জাতিক
  5. আমাদের ব্লগ
  6. ইতিহাস ও ঐতিহ্য
  7. ইসলাম
  8. উন্নয়ন-অগ্রগতি
  9. এক্সক্লুসিভ
  10. কৃষি ও কৃষক
  11. ক্রাইম
  12. খেলাধুলা
  13. খেলার খবর
  14. চাকরির খবর
  15. জাতীয় সংবাদ

দ্রুত পদায়নে অনিশ্চিত ভবিষ্যত থেকে রক্ষা করা হোক প্যানেলে থাকা ২৬ হাজার শিক্ষক-শিক্ষিকার জীবন ——————–রফিকুল ইসলাম আধার

রফিকুল ইসলাম আধার , সম্পাদক
জুলাই ১৮, ২০১৩ ৮:৫১ অপরাহ্ণ
দ্রুত পদায়নে অনিশ্চিত ভবিষ্যত থেকে রক্ষা করা হোক প্যানেলে থাকা ২৬ হাজার শিক্ষক-শিক্ষিকার জীবন ——————–রফিকুল ইসলাম আধার

          বিরোধীতার খাতিরে বিরোধীতা আর তর্কের খাতিরে তর্ক- যাই হোক না কেন শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন মহাজোট সরকারের উল্লেখযোগ্য সাফল্যের অন্যতম প্রধান দুটি সাফল্য হচ্ছে, এ সরকার শিক্ষাবান্ধব ও কৃষিবান্ধব সরকার। নতুন নতুন উদ্ভাবন, প্রণোদনা প্যাকেজ আর নতুন নতুন প্রযুক্তি সহায়তায় কৃষিক্ষেত্রে বৈপ্লবিক পরিবর্তনের মধ্য দিয়ে কৃষি ও কৃষকের উন্নয়ন নিশ্চিতকরণ এবং সেইসূত্রেই দেশকে খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ হিসেবে গড়ে তুলে সরকারের কৃষিবান্ধব পরিচিতি যেমন বেড়েছে, ঠিক তেমনি বছরের প্রথম দিনেই একযুগে ৯৩ লাখ শিক্ষার্থীর হাতে বই তুলে দিয়ে, প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী ব্যবস্থা চালু করে, দশম শ্রেণীর গন্ডি অতিক্রম করে দ্বাদশ শ্রেণী পর্যন্ত মেয়েদের অবৈতনিক শিক্ষা ব্যবস্থা প্রবর্তন, নকলমুক্ত পাবলিক পরীক্ষা ব্যবস্থা নিশ্চিতকরণ আর ২৬ হাজার বেসরকারী-রেজিষ্টার্ড প্রাথমিক বিদ্যালয়কে জাতীয়করণের আওতায় নিয়ে সরকার তার শিক্ষাবান্ধব নীতিকেই প্রতিষ্ঠিত করেছেন। এ সরকারের রূপকল্প ভিশন ২০২১ আর ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার প্রধান শর্ত সবার জন্য শিক্ষা নিশ্চিতকরণ ও শিক্ষিত জাতি গঠনে ওই শিক্ষাবান্ধব নীতি ইতোমধ্যে দেশ-বিদেশের সচেতন ও পর্যবেক্ষক মহলে নানাভাবে প্রশংসনীয় ও সমাদৃত হয়ে উঠেছেÑ এতে কোন সন্দেহ নেই।
কিন্তু আমরা যখন দেখি সরকারের উচ্চমহলের উদাসীনতা ও আন্তরিকতার অভাবে পদায়ন প্রক্রিয়া ঝুলে থাকায় বেসরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে নিয়োগের জন্য প্যানেলে থাকা ২৬ হাজার শিক্ষক-শিক্ষিকার জীবন অনিশ্চিত ভবিষ্যতের অন্ধকারে হাবুডুবু খাচ্ছে, বেকারত্বের যন্ত্রণায় হাড্ডিসার দেহ নিয়ে উপজেলা, জেলা আর রাজধানীতে মানববন্ধন, অবস্থান কর্মসূচি পালন ও প্রধানমন্ত্রী বরাবর স্মারকলিপি দিয়েও মানবিক দৃষ্টি আকর্ষণে সক্ষম হচ্ছেন না তারা, পাশাপাশি তাদের পরিবারের লক্ষাধিক সদস্য চরম হতাশায় ভুগছেনÑ তখন সেইচিত্র শিক্ষাক্ষেত্রে সরকারের খোদ সাফল্যকেই ম্লান করে দেয় বৈ কী?
আমাদের জানামতে, বেসরকারী ও রেজিষ্টার্ড প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষক নিয়োগের ক্ষেত্রে ম্যানেজিং কমিটির কর্তৃত্ব বাতিলক্রমে বর্তমান সরকারের মেয়াদেই জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে নিয়োগ প্রক্রিয়া চালু করা হয়। ওই প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে ২০১১ সনের ৯ ডিসেম্বর বেসরকারী ও রেজিষ্টার্ড প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষায় ৪২ হাজার প্রার্থী উত্তীর্ণ হন। ওইসব প্রার্থীদের ফলাফল ২০১২ সনের ৯ এপ্রিল সরকারী প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে প্রকাশিত হয় এবং তাদের পর্যায়ক্রমে নিয়োগের জন্য প্যানেলভুক্ত করা হয়। ওই প্যানেলভুক্ত শিক্ষক-শিক্ষিকাদের মাঝ থেকে ইতোপূর্বে (বেসরকারী-রেজিষ্টার্ড প্রাথমিক বিদ্যালয় জাতীয়করণ ঘোষণার পূর্ব পর্যন্ত) প্রায় ১৬ হাজার শিক্ষক-শিক্ষিকাকে নিয়োগ দেওয়া হয়। আর অপেক্ষমান তালিকায় রয়ে যান অবশিষ্ট ২৬ হাজার প্রার্থী। অন্যদিকে শিক্ষক-শিক্ষিকাদের দীর্ঘ আন্দোলন সংগ্রামের ধারাবাহিকতায় চলতি বছরের ৯ জানুয়ারী ঢাকায় অনুষ্ঠিত এক মহাসমাবেশে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২৬ হাজার বেসরকারী-রেজিষ্টার্ড প্রাথমিক বিদ্যালয় জাতীয়করণের ঘোষণা দিয়ে প্রায় লক্ষাধিক শিক্ষক-শিক্ষিকার জীবন-মান উন্নয়নের পাশাপাশি প্রাথমিক শিক্ষাক্ষেত্রে বঙ্গবন্ধু সরকারের পর দ্বিতীয় নজিরবিহীন দৃষ্টান্ত স্থাপন করেন। কিন্তু দীর্ঘ এক বছর পরও প্যানেলে থাকা ওইসব শিক্ষক-শিক্ষিকাদের পদায়ন না হওয়ায় প্রাথমিক শিক্ষাব্যবস্থায় মাঠ পর্যায়ে অসন্তোষ রয়েই গেছে। এ অবস্থায় প্যানেলে থাকা শিক্ষক-শিক্ষিকাদের পাশাপাশি তাদের পরিবারের লক্ষাধিক সদস্য চরম হতাশায় ভুগছেন। মূলতঃ ২৬ হাজার বেসরকারী প্রতিষ্ঠান জাতীয়করণের ওই ঘোষণার পর থেকেই ঝুলে গেছে প্যানেলভুক্ত ২৬ হাজার শিক্ষক-শিক্ষিকার নিয়োগ-পদায়ন প্রক্রিয়া। প্যানেলে থাকা ভুক্তভোগি শিক্ষক-শিক্ষিকাদের মতে, জাতীয়করণের খসড়া নীতিমালা মোতাবেক যেহেতু শূন্যপদে ১৬ হাজার প্যানেলভুক্ত প্রার্থীকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে, সেইহেতু নিয়োগ না পাওয়া প্যানেলভুক্ত শিক্ষক-শিক্ষিকাগণও জাতীয়করণের আওতায় পড়বেনÑ এমন ধারণাই তাদের ছিল। কিন্তু ১৭ জানুয়ারী প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের প্রজ্ঞাপনে নিয়োগ না পাওয়া প্যানেল শিক্ষকদের বিষয়টি উল্লেখ না থাকায় এবং প্যানেল বাতিলের আশংকায় হতাশায় পড়েন তারা। এরপর থেকেই প্রধানমন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করে জেলায় জেলায় মানববন্ধন, সংবাদ সম্মেলনসহ জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে ও কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে মানববন্ধন, অবস্থান কর্মসূচী, বিক্ষোভ মিছিল হয়ে আসছে।
প্রাথমিক শিক্ষার গুণগত মানোন্নয়ন ও ঝড়ে পড়ারোধে অভিভাবকদের করণীয় সম্পর্কে সচেতনতা সৃষ্টির লক্ষ্যে সম্প্রতি (১৩ জুন) শেরপুর জেলা সদরে আয়োজিত মা সমাবেশের পাশের রাস্তায় অবস্থান নিয়ে আব্দুর রশিদ, জাকির হোসেন ও আয়েশা সিদ্দিকার নেতৃত্বে মানববন্ধন কর্মসূচী পালনসহ প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রী ডাঃ আফসারুল আমিনের কাছে স্মারকলিপি পেশ করলেও তার তরফ থেকে কোন সাড়া না পাওয়ায় প্যানেলভুক্ত শিক্ষক-শিক্ষিকাদের একটি অংশ আরও হতাশ হয়ে পড়েন। ওই সমাবেশে একই মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী মোঃ মোতাহার হোসেন, সংসদীয় কমিটির সদস্য আতিউর রহমান আতিক ও সচিব কাজী আখতার হোসেনসহ মন্ত্রণালয় ও প্রাথমিক-গণশিক্ষা অধিদপ্তরের উর্ধ্বতন কর্মকর্তারাও উপস্থিত ছিলেন। ওই সময় মন্ত্রী ডাঃ আফসারুল আমিন বেসরকারী নিয়োগ প্যানেলে থাকা শিক্ষকদের পদায়নের বিষয়টি সম্পর্কে কোন আলোকপাত না করে বলেন, শিক্ষার মান উন্নয়নে দেশে আরও ৫০ হাজার প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ দেওয়া হবে। শিক্ষার্থীরা যাতে ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়তে সাহায্য করতে পারে, সে জন্য প্রতিটি স্কুলে ল্যাপটপ, প্রজেক্টর দেওয়ার ব্যবস্থা করছে বর্তমান সরকার। তবে প্রতিমন্ত্রী তার বক্তব্যে বেসরকারী নিয়োগ প্যানেলে থাকা শিক্ষকদের প্রসঙ্গে বলেন, ‘বিষয়টি সরকারের বিবেচনাধীন রয়েছে, এ বিষয়ে আন্দোলন সংগ্রামের যেমন কিছু নেই, ঠিক তেমনি তা নিয়ে বিভ্রান্তি সৃষ্টিরও সুযোগ নেই।’
কিন্তু প্রতিমন্ত্রীর ওই বক্তব্যের প্রেক্ষাপটে ওয়াকিবহাল মহলের প্রশ্ন, সরকার যে ক্ষেত্রে ২৬ হাজার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান জাতীয়করণের মাধ্যমে লক্ষাধিক শিক্ষক-শিক্ষিকার জীবনমানের চাকা ঘুরিয়ে দেওয়ার পাশাপাশি প্রাথমিক শিক্ষাক্ষেত্রে আমূল পরিবর্তনের চেষ্টা চালাচ্ছেন, নতুন করে ৫০ হাজার শিক্ষক নিয়োগের পরিকল্পনা করছেন, সেক্ষেত্রে বেসরকারী-রেজিষ্টার্ড প্রাথমিক বিদ্যালয়ে নিয়োগের জন্য প্যানেলে থাকা অবশিষ্ট শিক্ষকদের পদায়নে আন্তরিকতার অভাব কেন? তাদের দ্রুত পদায়নের ব্যবস্থা না হলে শিক্ষার্থী ঝরে পড়ার মত বয়স বাড়ার সাথে সাথে তারাও আস্তে আস্তে চাকরির বয়সসীমা অতিক্রম করে ঝরে যাবেন। সেইসাথে বাড়বে বেকারত্বের বোঝা নামক অভিশাপ। সুতরাং পরিবর্তিত অবস্থায় আমাদের প্রত্যাশা, এমন মানবিক বিষয়টি সরকার প্রধান শেখ হাসিনা মেয়াদ শেষের ‘থোক ভাবনা’য় নিবেন। অনিশ্চিত ভবিষ্যতের অন্ধকার থেকে রক্ষা করবেন ওই ২৬ হাজার শিক্ষকের জীবনের সাথে মিশে থাকা লক্ষাধিক মানুষের জীবন। সেইসাথে দূর করবেন ওই পদায়ন না হওয়ায় প্রাথমিক শিক্ষা ব্যবস্থায় সৃষ্ট মাঠ পর্যায়ের অসন্তোষ। পিতা জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের পর তিনিই রয়ে যাবেন ‘শিক্ষাবান্ধব সরকার’ বা নীতির মূল চিন্তক ও অভিভাবক।

Shamol Bangla Ads

রফিকুল ইসলাম আধার : আইনজীবী, সাংবাদিক ও রাজনীতিক, শেরপুর।

ই-মেইল : press.adhar@gmail.com

সর্বশেষ - ব্রেকিং নিউজ

error: কপি হবে না!