স্টাফ রিপোর্টার : শেরপুর জেলা সদরের অন্যতম প্রধান বিদ্যাপীঠ জি, কে পাইলট হাইস্কুলের বহুল আলোচিত সহকারী শিক্ষক আজাহার আলীকে বরখাস্তের ঘটনায় তোলপাড় সৃষ্টি হয়েছে। শিক্ষার্থী, অভিভাবক, শিক্ষক ও সচেতন মহলের দীর্ঘদিনের দাবির প্রেক্ষিতে অবশেষে রবিবার ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি, সংসদ সদস্য আতিউর রহমান আতিকের সভাপতিত্বে কমিটির সকল (১২ জন) সদস্যের উপস্থিতিতে প্রতিষ্ঠানের বিভিন্ন আর্থিক অনিয়ম, পাবলিক পরীক্ষায় অসদুপায় অবলম্বন এবং অসদাচরনের বিভিন্ন অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় তাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। ওই বরখাস্তের ঘটনায় বিভিন্ন মহল সন্তোষ প্রকাশ করেছেন।

জানা যায়, ওই প্রতিষ্ঠানের প্রধান শিক্ষক মোঃ আলাউদ্দিন বিএসসি’র শারীরিক অসুস্থ্যতার সুযোগ নিয়ে সহকারী শিক্ষক আজাহার আলী ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব বাগিয়ে নেন। ওই সময়কালে বিভিন্ন ধরনের আর্থিক অনিয়ম করে ব্যক্তিগতভাবে তিনি লাভবান হন। এক পর্যায়ে গত বছরের ২৫ ফেব্রুয়ারী তাকে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের পদ থেকে অপসারণ করা হয়। গত বছরের জানুয়ারী মাসে প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষায় অর্থের বিনিময়ে অনিয়মের মাধ্যমে কয়েক পরীক্ষার্থীকে বিশেষ ব্যবস্থায় পরীক্ষা দেওয়ার সুযোগ করে দিলে স্থানীয় সাংবাদিকরা হাতেনাতে ঘটনাটি ধরে ফেলে। এসময় সাংবাদিকদের সাথেও সে অসদাচরন করে। এর পরপরই তার সকল অপকর্মের তথ্য বেড়িয়ে আসলে তাকে সেসময় ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়। তাকে সরিয়ে মোঃ ইয়াকুব আলী নামে অপর এক সহকারী শিক্ষককে ওই দায়িত্বে বসালে আজাহার আলী তার প্রতিও ক্ষিপ্ত হন এবং অভিযোগ রয়েছে, তাকে একটি মামলায় ফাসিয়ে হাজত খাটানো হয়। পরবর্তীতে নিয়োগ পরীক্ষার মাধ্যমে মঞ্জুরুল ইসলাম নামে একজনকে প্রধান শিক্ষক নিয়োগ করা হলে ম্যানেজিং কমিটির সিদ্ধান্ত মোতাবেক আজাহার আলীর বিষয়ে তদন্তকার্য শুরু হয়। এ অবস্থায় আজাহার আলী শোকজের কোন জবাব না দিয়ে স্বয়ং বাদী হয়ে প্রধান শিক্ষককে আটক করায় অন্য একটি মামলায়। অবশেষে তার বিরুদ্ধে জেলা হিসাব রক্ষণ কর্মকর্তা ও জেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা সমন্বয়ে গঠিত অডিট কমিটি ৬ লাখ ৮৪ হাজার টাকার আর্থিক অনিয়মের প্রমাণ পায়। তাছাড়া তার বিরুদ্ধে বিভিন্ন পাবলিক পরীক্ষায় পরীক্ষার্থীদের অসদুপায় অবলম্বনের সুযোগ দিয়ে আর্থিকভাবে লাভবান হওয়া এবং বিদ্যালয়ের স্টাফ ও বিভিন্ন ব্যাক্তিদের সাথে অসদাচরনের মাধ্যমে বিদ্যালয়ের ভাবমুর্তি ক্ষুন্ন করার অভিযোগ ওঠে। আজাহার আলী তার ছয় বছরে জি,কে স্কুলের বিশাল দু’টি পুকুর মাত্র ৬০ হাজার টাকায় তার নিজের লোকের কাছে লীজ দিয়েছিলেন, অথচ তার অপসারনের পর এবার ওই পুকুরই ৫ লাখ ৩৫ হাজার টাকায় লীজ হয়েছে।
এ ব্যাপারে জি, কে পাইলট হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক মুহম্মদ মঞ্জুরুল ইসলাম ম্যানেজিং কমিটির সভায় সহকারী শিক্ষক আজাহার আলীকে বরখাস্তের সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, রবিবার থেকেই তার সাময়িক বরখাস্তের আদেশ কার্যকর হবে। অন্যদিকে বরখাস্ত হওয়া সহকারী শিক্ষক আজাহার আলীর বক্তব্য জানতে মোবাইলে চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া যায়নি।
