
শিরোনামটা দেখে ধাক্কা লাগারই কথা। কয়েক মাস আগে বাবা হয়েছেন। প্রেমিকা আন্তোনেল্লা রোকুজ্জোকে নিয়ে বেশ সুখেই আছেন লিওনেল মেসি। এর মধ্যে আবার কার হৃদয় ভাঙলেন এই আর্জেন্টাইন সুপারস্টার!
খবরটা ভুল নয়। সত্যিই হৃদয় ভেঙেছেন মেসি। তবে এর সঙ্গে নারীঘটিত ব্যাপার-স্যাপার জড়িত নয়। টানা চারটি ব্যালন ডি’অরজয়ী ফুটবলার হৃদয় ভেঙেছেন যুক্তরাষ্ট্রের নয় বছর বয়সী এক খুদে ভক্তের।
হাডসন শেরউড মাত্র পাঁচ বছর বয়স থেকে মেসির ভক্ত। পরিবারের সঙ্গে বার্সেলোনাও সফর করেছে সে। ন্যু ক্যাম্প স্টেডিয়াম, বার্সেলোনার ড্রেসিং রুম পরিদর্শন করেছে। মেসির ১০ নম্বর জার্সি গায়ে মাঠে ছবিও তুলেছে হাডসন। প্রিয় তারকা লিওনেল মেসিকে কাছ থেকে দেখার সৌভাগ্য অবশ্য তার হয়নি।
সেই সুযোগটাই এসেছিল এ মাসে। যুক্তরাষ্ট্রে দুটি চ্যারিটি ম্যাচে খেলতে গিয়েছিলেন লিওনেল মেসি। উদ্দেশ্য, তাঁর গড়া ফাউন্ডেশনের জন্য অর্থ সংগ্রহ করা। লস অ্যাঞ্জেলেসের ম্যাচটি শেষ মুহূর্তে বাতিল করা হয়। তবে নির্ধারিত সূচি অনুসারেই ৬ জুলাই শিকাগোর ম্যাচটি অনুষ্ঠিত হয়। ম্যাচ উপলক্ষে ‘বিশেষ’ টিকিটের ব্যবস্থা ছিল। বলা হয়েছিল, অধিক অর্থ খরচ করে যাঁরা এই টিকিট কিনবেন, তাঁরা মেসির সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে পারবেন, তাঁকে অভিবাদন জানাতে পারবেন। সঙ্গে দেওয়া হবে মেসির স্বাক্ষর করা জার্সি ও বল। সুযোগটা লুফে নেন হাডসনের বাবা টনি শেরউড। ছেলে ও নিজের জন্য দুটি টিকিট কেনেন তিনি। প্রতিটি টিকিটের মূল্য ছিল আড়াই হাজার ডলার। টনি জানান, ৭৫টি বিশেষ টিকিট বিক্রি হয়েছিল। কিন্তু দীর্ঘ প্রতীক্ষার পর কেবল হতাশাই পেয়েছেন তাঁরা, ভক্তদের সাক্ষাত্ দেননি মেসি!
টনি আরও জানান, মেসির সঙ্গে সাক্ষাতের জন্য বিশেষ টিকিট করা প্রত্যেককে একটি কক্ষে নিয়ে যাওয়া হয়। কিন্তু দুই ঘণ্টা অপেক্ষার পর আয়োজকেরা জানান, মেসি আসছেন না। আশাভঙ্গের স্মৃতিচারণা করে টনি বলেন, ‘শুরু থেকেই বিশৃঙ্খলা ছিল। আয়োজকেরা প্রস্তুত ছিলেন না। তাঁরা আমাদের জানান, মেসি আসছেন। ম্যাচ শুরু হওয়ার পাঁচ মিনিট আগে স্প্যানিশ ভাষাভাষী একজন প্রতিনিধি এসে ঘোষণা দেন, দলীয় প্রতিশ্রুতির কারণে মেসি এই মুহূর্তে আসতে পারছেন না।’
তিনি জানান, এ পর্যায়ে ভক্তদের আশা দেওয়া হয়, প্রথমার্ধের বিরতি বা ম্যাচ শেষ হওয়ার পর মেসি আসতে পারেন। কিন্তু সেই মুহূর্তটা আর আসেনি। ভক্তদের হাতে তুলে দেওয়া হয় শুধু স্ক্রিন প্রিন্ট করা মেসির অটোগ্রাফসংবলিত জার্সি ও নিম্নমানের একটি বল। প্রিয় তারকার মুখোমুখি হওয়ার সুযোগ পেয়েও তা হাতছাড়া হওয়ায় কান্নায় ভেঙে পড়ে অনেকে।
টনি জানান, মেসিকে দেখতে না পেয়ে তাঁর ছেলে হাডসনের হৃদয় ভেঙে গেছে। কথা দিয়ে কথা না রাখায় প্রিয় তারকার প্রতি তার মনে বিদ্বেষও জন্ম নিয়েছে। মেসির নামাঙ্কিত ছয়টি জার্সি হাডসনের রয়েছে। গাড়িতে করে বাড়ি ফেরার সময় ছোট্ট হাডসন বলে, ‘বাবা, পরবর্তী সময় যখন আমাকে জার্সি কিনে দেবে, মেসির জার্সি আর চাই না।’
এখন পর্যন্ত যে খবর পাওয়া গেছে, তাতে কাঠগড়ায় লিওনেল মেসি। এ ব্যাপারে এখন পর্যন্ত মেসির বক্তব্য পাওয়া যায়নি। তাঁর বক্তব্য পাওয়ার পরই স্পষ্ট হবে, আসলে কী ঘটেছিল। এমনও তো হতে পারে, ভক্তদের সঙ্গে বিশেষ সাক্ষাতের কথাটা মেসি জানতেনই না! অর্থ হাতিয়ে নেওয়ার উদ্দেশ্যে তাঁর অগোচরে আয়োজকদের কেউ বিশেষ টিকিটের ব্যবস্থা করে থাকতে পারেন। আবার এমনও হতে পারে, শেষ মুহূর্তে ঘটনাটা জানতে পেরে অর্থের বিনিময়ে সাক্ষাতে রাজি হননি বর্তমান সময়ের সেরা এই ফুটবলার। নেপথ্যে কত কিছুই তো থাকতে পারে! সূত্র: ওয়েবসাইট।
