প্রেমের আবেগে তরুণ বয়সীদের নানান অপ্রত্যাশিত ঘটনা নতুন কিছু নয়। প্রায়ই শোনা যায়, প্রেমের ব্যর্থতার কামড় থেকে বাঁচার জন্য এ বয়সীরা বিভিন্নভাবে আত্মহননের চেষ্টা, আত্মহননসহ বিভিন্ন ধরনের অপ্রত্যাশিত ঘটনা ঘটিয়ে পরিবার পরিজনকে হয়রানির দোরগোড়ায় পৌঁছে দেয়। কিন্তু এক দারোগার কন্যা প্রেমের আবেগে আপ্লুত হয়ে ব্যতিক্রম ঘটনা ঘটিয়ে যাত্রাবাড়ী থানা পুলিশকে পর্যন্ত হিমশিম খাওয়ানোর খবর পাওয়া গেছে।

জানা গেছে, শুক্রবার সন্ধ্যা থেকে শনিবার দুপুর পর্যন্ত দারোগা আশরাফুল ইসলামের মেয়ে ফাতেমা কুলসুম সাদিয়া (১৬) বিব্রতকর পরিস্থিতির মধ্যে ফেলে দেয়। শেষ পর্যন্ত যাত্রাবাড়ী থানার ওসি (তদন্ত) সাদিয়ার বাবা আশরাফুল ইসলাম ও প্রেমিক ফারুক হোসেনের অভিভাবকদের থানায় এনে সাদিয়ার একান্ত বাসনা পূরণের মাধ্যমে পরিস্থিতি সামাল দেন।সাদিয়া উত্তর যাত্রাবাড়ীর মোশাররফ হোসেন মনার ছেলে মো. ফারুক হোসেনের সাথে পঞ্চম শ্রেণীতে পড়া অবস্থা থেকে প্রায় পাঁচ বছর চুটিয়ে প্রেম করার পর গত ১৪ এপ্রিল অভিভাবকদের অমতে বিয়ে করে।
আর এতে সাদিয়ার স্বামী ফারুকসহ তার ছোট ভাইয়ের বিরুদ্ধে ময়মনসিংহে নারী ও শিশু নির্যাতন আইনে মামলা করে নাটকীয়ভাবে যাত্রাবাড়ী থানা পুলিশের সহযোগিতায় সাদিয়া-ফারুকের বিয়ের আনুষ্ঠানিকতার মধ্য থেকে গ্রেপ্তার করে। সাদিয়া, ফারুক ও ফারুকের ছোট ভাই নাজমুলকে ময়মনসিংহ আদালতে উঠানোর পর সাদিয়াকে আদালত তার মা-বাবার হেফাজতে দিয়ে ফারুক ও তার ভাইকে জেলে পাঠায়। এরপর সাদিয়ার বাবা দারোগা আশরাফুল ইসলাম সাদিয়াকে তার গ্রামের বাড়ি ময়মনসিংহে কড়া নজরদারিতে রেখে সংশোধনের চেষ্টা চালায়। কিন্তু সাদিয়া তার বাবার কড়া শাসনকে উপেক্ষা করে স্বামী ফারুকের জামিনের দিনে মা-বাবার চোখে ফাঁকি দিয়ে যাত্রাবাড়ী এসে পড়ে। এতে সাদিয়ার বাবা ক্ষমতার জোরে সাদিয়াকে জোর করে তাদের আওতায় নিয়ে যান।

এভাবে সাদিয়ার বাবা বিভিন্নভাবে বিয়ে বিচ্ছেদ ঘটানোর জন্য মরিয়া হয়ে ওঠে। ফারুকসহ তার পরিবারের সদস্যদের হয়রানি করতে থাকে। তারপরও সাদিয়া ভালোবাসার টান কমাতে পারেনি। গতকাল সকালে ময়মনসিংহের ত্রিশাল থেকে সাদিয়া তার মা আসমাউল হুসনার চোখ ফাঁকি দিয়ে উত্তর যাত্রাবাড়ীস্থ স্বামী ফারুকের বাড়িতে ওঠে। এতে ফারুকের পরিবারের লোকজন ভীতসন্তস্ত্র হয়ে যে যার মত বাসা ছেড়ে পালিয়ে যায়। ফারুকের মা-বাবা যাত্রাবাড়ী থানা পুলিশকে খবর দিয়ে সাদিয়াকে থানার হেফাজতে রাখার ব্যবস্থা করেন। থানা পুলিশ সাদিয়ার বাবা-মাকে খবর দেন। এরপর সাদিয়ার বাবা এসে কৌশলে তার মেয়েকে ফিরিয়ে নেয়ার চেষ্টা করেন ।
এ বিষয় সাদিয়া বুঝতে পেরে প্রকাশ্যে থানার মধ্যে তার বাবা ও থানার বেশ কয়েকজন কর্মকর্তাকে ফাঁসানোর হুমকি দেয়। শুধু তাই নয়, সাদিয়া তার বাবাকে ‘পাষ-’ বলে বকাবকি করতে থাকে। নিরুপায় হয়ে থানার অন্যান্য কর্মকর্তারা সাদিয়ার বাবাকে থানা থেকে বের করে দিয়ে সাদিয়াকে তার শ্বশুর-শাশুড়ির হেফাজতে পাঠিয়ে দেন। সাদিয়া গাজীপুরের জয়দেবপুর থানার এসআই আশরাফুল ইসলামের একমাত্র মেয়ে।’
