সফল, সুখী ও সৌহার্দ্যপূর্ণ দাম্পত্য জীবনের জন্য অনেক কিছুকেই গুরুত্ব দিতে হয়। এসবের মধ্যে সততা সবচেয়ে বেশি প্রয়োজনীয়। সে জন্যই হয়তো বলা হয়ে থাকে, দাম্পত্য জীবনে গোপনীয়তা ও বিশ্বস্ততা একসঙ্গে চলতে পারে না। আবার অনেক সময় দেখা যায়, সামান্য একটু বিষয় ফাঁস হয়ে গেলেই দীর্ঘদিনের মধুময় বিবাহিত জীবন মুহূর্তের মধ্যেই বিষিয়ে ওঠে। তাই বিষয়টি নিয়ে সমাজবিজ্ঞানী ও মনোবিজ্ঞানীদের গবেষণার যেন অন্ত নেই।বিষয়টিকে বিভিন্ন জন বিভিন্ন ব্যাখ্যা করেছেন এবং করে যাচ্ছেন। তাদেরই একজন লাইট হাউজ এরাবিয়ার ব্যবস্থাপনা পরিচালক মনোচিকিৎসক সালিহা আফ্রিদি মনে করেন, স্বামী ও স্ত্রী নিজেদের মধ্যে স্বচ্ছতা বিধানের চেষ্টা করলেও কখনও কখনও গোপনীয়তার প্রয়োজন রয়েছে। যেমন কেউ যদি বিশ্বাস করে আপনাকে কোন গোপন কিছু বলে থাকে তাহলে তা আপনার জীবনসঙ্গী অথবা অন্য কাউকেই বলা ঠিক নয়। তেমনি নিজের অতীত সম্পর্কে মিথ্যা বলার চেয়ে সবকিছু শেয়ার না করাই ভাল। গোপনীয়তার আরেকটি দিক হচ্ছে অর্থনৈতিক বিষয়াদি। স্ত্রী রোজগার করুক আর নাই করুক তার এ বিষয়ে জানার অধিকার রয়েছে।

অন্যদিকে অনেককেই তাদের জীবনসঙ্গীর কাছে কিছু বিষয় গোপন রাখতে দেখা যায়। কারণ, তারা এসব বিষয় অন্যকে জানাতে লজ্জা পান। যদি তাদের এ গোপনীয়তা দাম্পত্য জীবনকে আঘাত করার মতো না হয় তবে দোষণীয় কিছু নয়। কোন সত্য যদি বিবাহিত জীবনকে ক্ষতিগ্রস্ত করার মতো হয় তাহলে তা গোপন রাখা উচিত বলে মনে করেন ‘দ্য সিক্রেট লাইফ অব ওয়াইভস’ বইয়ের লেখক আইরিস ক্রাসনো। তিনি এ বইয়ে দাম্পত্য জীবন সম্পর্কে প্রায় ২০০ মহিলার সাক্ষাৎকার নিয়েছেন। এতে তিনি বলেছেন, মিথ্যা এবং গোপনীয়তা সম্পূর্ণ ভিন্ন বিষয়।
সবারই কিছু গোপন বিষয় থাকে, যেমন মানুষ তাদের চুল কালার করায়, প্লাস্টিক সার্জারি করায়। এর সবই তার একান্ত গোপন বিষয়। সেজন্য গোপনীয়তাকে তিনি ভাল বলে মত দিয়েছেন। আফ্রিদির মতে, কোন বিষয় গোপন করার আগে মানুষকে দাম্পত্য জীবনে ওই বিষয়টির নিরাপত্তাহীনতা অথবা গ্রহণযোগ্যতার অভাব রয়েছে কিনা তা ভেবে দেখতে হবে। এ প্রসঙ্গে জোসেফ ফ্রিটল ও টাইগার উডসের প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, মানুষকে তার দাম্পত্য জীবনে আমি, তুমি এবং আমরা- এ তিনটিকে সম্পূর্ণ আলাদা অস্তিত্ব হিসেবে বিবেচনা করতে হবে। এ বিষয়গুলোকে একাকার করে ফেলা উচিত নয় বলে তিনি মত দিয়েছেন।
