রেজাউল করিম বকুল, শ্রীবরদী (শেরপুর) ॥ সামাজিক কুসংস্কার আর দারিদ্র্যের সাথে যুদ্ধ করে আসছে শেরপুরের শ্রীবরদী উপজেলার গোসাইপুর ইউনিয়নের দহেরপাড় গ্রামবাসী। স্বাধীনতার ৪৭ বছরেও আলোর মুখ দেখেনি তারা। অবশেষে ২০১৬ সালে এ গ্রামে প্রতিষ্ঠিত হয় দহেরপাড় বহুমূখী প্রতিবন্ধী বিদ্যালয়। এখানে প্রতিবন্ধী ছাত্র-ছাত্রীসহ আশপাশের ছেলে-মেয়েরা পাচ্ছে প্রাথমিক শিক্ষার সুযোগ। গত দু’বছরের মধ্যেই বিদ্যালয়ের অবকাঠামো ও উপকরণসহ পাঠদানে সুরক্ষিত করে গড়ে তুলেছে ম্যানেজিং কমিটি। বিদ্যালয়টি গতিশীল করতে কর্তৃপক্ষ নিয়েছে কার্যকরী নানা পদক্ষেপ। সম্প্রতি সরেজমিনে গেলে ম্যানেজিং কমিটি, এলাকাবাসী ও ছাত্র-ছাত্রীদের সাথে কথা বলে ওঠে আসে এমন তথ্য।
ওই বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি সাইদুর রহমান জানান, দহেরপাড় গ্রামে প্রায় ২ হাজার লোকের বসবাস। এ গ্রামে নেই কোনো প্রাথমিক বিদ্যালয়। ফলে এ গ্রামের ছেলে-মেয়েরা ২/৩ কিলোমিটর পায়ে হেটে যেতো অন্য গ্রামের বিদ্যালয়ে। ফলে বেশিরভাগ শিশু প্রাথমিক শিক্ষা থেকে বঞ্চিত হতো। এ জন্য ১০ শিক্ষক নিয়ে চালু করা হয় বিদ্যালয়টি। মাত্র দু’বছরে এ বিদ্যালয়ে ছাত্র-ছাত্রীর সংখ্যা শতাধিক। তবে এ বছর আরও বাড়বে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।
ওই বিদ্যালয়ে ম্যানেজিং কমিটির অন্যতম সদস্য সংগ্রামী নারী জয়িতা জবেদা বেগম জানান, এ গ্রামটি ছিল শিক্ষা বঞ্চিত। এ জন্য অনেক কষ্ট করে আমরা এ গ্রামে প্রতিবন্ধী বিদ্যালয় করার উদ্যোগ নেই। বেসরকারি সংস্থা স্বাবলম্বী সমিতির নির্বাহী পরিচালক আতাউর রহমান জানান, এ সংস্থার শিক্ষা প্রকল্পের আওতায় বিদ্যালয়টি স্থাপিত হয়। তবে সরকারি নীতিমালা অনুযায়ী পরিচালিত হচ্ছে। এমনকি সরকারিকরণে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণে এ সংস্থা সার্বিক সহযোগিতা করবে। স্থানীয় অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক আলহাজ্ব মো. আব্দুল মোতালেব বলেন, এ গ্রামে যাতায়াত ব্যবস্থা খুবই খারাপ। এছাড়াও গ্রামবাসীরা প্রায় সবাই নিম্ন আয়ের মানুষ। এজন্য এটি একটি যুগান্তকারী পদক্ষেপ। এ বিদ্যালয়ের মাধ্যমে এলাকার ছেলে-মেয়েরা পড়া লেখার সুযোগ পেয়েছে। এতে আলোকিত হচ্ছে গ্রামবাসীরা।