স্টাফ রিপোর্টার ॥ ৬৯ কিলোমিটার দূরত্বের শেরপুর-ময়মনসিংহ মহাসড়কটি দীর্ঘদিন ধরে সরু অবস্থায় রয়েছে। এই সরু সড়ক দিয়ে শেরপুর-কুড়িগ্রাম-জামালপুর ও ময়মনসিংহের হালুয়াঘাটের (একাংশ) মানুষের যাতায়াত। জেলায় রেল লাইন নেই বলে কৃষি সমৃদ্ধ ও খাদ্যউদ্বৃত্ত এই অঞ্চলের উৎপাদিত পণ্য এই সড়ক দিয়েই দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে পরিবহন করা হয়। রাস্তা সরু হওয়াতে যানজট ও ধীরে ধীরে গাড়িগুলো চলাচল করতে হয় বলে সময়ও লাগে বেশি। আর দুর্ঘটনাতো লেগেই থাকে। বর্তমানে এই রাস্তার প্রস্থ ১৮ ফুট। তবে ৯ সেপ্টেম্বর বুধবার থেকে রাস্তার প্রস্থ দ্বিগুণ করতে অর্থাৎ ৩৮ ফুট প্রস্থ করতে কাজ শুরু করেছে সড়ক ও জনপথ বিভাগ। এই রাস্তাটির প্রস্থ দ্বিগুণ করতে দেড়-দুই বছর লাগবে বলে জানা গেছে। শেরপুর-ময়মনসিংহ সড়কের প্রস্থ দ্বিগুণ হয়ে গেলে এই অঞ্চলের যোগাযোগে নতুন দুয়ার উন্মোচিত হবে বলে ব্যক্ত করেছেন সাধারন মানুষ ও গাড়ির মালিক-শ্রমিক সবাই।
সড়ক ও জনপথ বিভাগ সূত্রে জানা যায়, এই ৬৯ কিলোমিটার রাস্তা করতে সরকারের ব্যয় হবে প্রায় ৮শ কোটি টাকা। শহরের থানা মোড় থেকে শেরপুরের সড়ক বিভাগ নকলা উপজেলার (শেরপুর অংশ) সীমান্ত বাঁশাটী পর্যন্ত ৩০ কিলোমিটার রাস্তা করতে খরচ হবে প্রায় ৩শ কোটি টাকা। ময়মনসিংহ সড়ক বিভাগ বাঁশাটী ফুলপুর থেকে ময়মনসিংহের চীন-বাংলাদেশ মৈত্রী ব্রিজ পর্যন্ত ৩৯ কিঃমিঃ রাস্তা করতে খরচ হবে বাকী প্রায় ৫শ কোটি টাকা। শেরপুর ও ময়মনসিংহ এ ২ অংশের কাজ এক সাথে শুরু ও দ্রুত শেষ করতে সরকারের সড়ক বিভাগ প্রচেষ্টা চালাচ্ছে। গাড়ি চালকরা জানিয়েছে, এ গুরুত্বপূর্ণ সড়ক নির্মাণ শেষ হলেই শেরপুর-ময়মনসিংহে আসা-যাওয়ায় সময় লাগবে বড়জোড় ২ ঘন্টা। বর্তমানে ৬৯ কিলোমিটার রাস্তায় আসা যাওয়ায় সময় লাগে অন্ততঃপক্ষে ৫ ঘন্টা। একদিকে সময় কম লাগবে, আবার গাড়ির ভাড়াও কমে যাবে। কমবে পণ্য আনা নেওয়ার খরচ।
কাজের (একাংশ) ঠিকাদার মাসুদ হাইটেক ইঞ্জিনিয়ারিং লিঃ এর স্বত্বাধিকারী মাসুদ রানা জানান, কাজ শুরু হয়ে গেছে। কোন বাঁধা-বিপত্তি না থাকলে সরকার নির্ধারিত সময়ের আগেই কাজ বুঝিয়ে দেওয়া হবে।
শেরপুর সড়ক ও জনপথ এর নির্বাহী প্রকৌশলী খন্দকার মোঃ শরিফুল আলম জানান, এই রাস্তার কাজটি শুরু নিঃসন্দেহে এই এলাকার মানুষের জন্য মাইলফলক। সরকারের বিশাল উন্নয়নের অংশ হিসেবে এই কাজটি বিশেষ গুরুত্ব দিয়ে করা হবে।
শেরপুর জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান হুমায়ুন কবীর রুমান বলেন, রাস্তাটি প্রশস্তকরণ এই এলাকার মানুষের দীর্ঘদিনে দাবি। অবশেষে প্রধানমন্ত্রীর উদ্যোগে মানুষের স্বপ্ন পূরণ হতে যাচ্ছে।
শেরপুর সদর আসনের এমপি ও জাতীয় সংসদের হুইপ আতিউর রহমান আতিক বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার এই উপহার এলাকার মানুষ চির স্মরণীয় করে রাখবে। রাস্তা ডাবল হওয়াতে সীমান্ত জেলা শেরপুরে শিল্পায়ন হবে। শেরপুরের পর্যটনেও বাড়বে মানুষের ভীড়। মানুষের কর্মসংস্থান হবে। এটি নিঃসন্দেহে এই অঞ্চলের যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়নের মাইলফলক।