ads

মঙ্গলবার , ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০২০ | ৭ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের নিবন্ধনপ্রাপ্ত অনলাইন নিউজ পোর্টাল
  1. ENGLISH
  2. অনিয়ম-দুর্নীতি
  3. আইন-আদালত
  4. আন্তর্জাতিক
  5. আমাদের ব্লগ
  6. ইতিহাস ও ঐতিহ্য
  7. ইসলাম
  8. উন্নয়ন-অগ্রগতি
  9. এক্সক্লুসিভ
  10. কৃষি ও কৃষক
  11. ক্রাইম
  12. খেলাধুলা
  13. খেলার খবর
  14. চাকরির খবর
  15. জাতীয় সংবাদ

শেরপুরে ছাত্র–শিক্ষক সম্প্রীতি সভা অনুষ্ঠিত

শ্যামলবাংলা ডেস্ক
ফেব্রুয়ারি ২৫, ২০২০ ২:৩৭ অপরাহ্ণ

স্টাফ রিপোর্টার : শেরপুরে কলেজ পর্যায়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের নিয়ে সামাজিক ও ধর্মীয় ইস্যুতে মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। আন্তঃধর্মীয় ও সামাজিক সম্প্রীতি বৃদ্ধির স্বার্থে তরুণ প্রজন্মের সম্পৃক্ততা বাড়ানোর লক্ষ্যে বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা ইন্সটিটিউট ফর এনভায়রনমেন্ট অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট (আইইডি) ওই সম্প্রীতি সভার আয়োজন করে। ২৪ ফেব্রুয়ারি সোমবার দুপুরে ডাঃ সেকান্দর আলী কলেজ মিলনায়তনে আয়োজিত সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন শেরপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) আমিনুল ইসলাম।
ডাঃ সেকান্দর আলী কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ ঋতেন্দ কুমার মালাকারের সভাপতিত্বে সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন শেরপুর সরকারি কলেজের সহযোগী অধ্যাপক শিব শংকর কারুয়া শিবু, আইইডির প্রকল্প সমন্বয়কারী মানিক পাল, সেকান্দর আলী কলেজের প্রভাষক মোঃ শওকত হোসেন, প্রভাষক শফিউল আলম, প্রভাষক মঞ্জুরুল আলম, প্রভাষক ইউ কে লূতফুন নাহার, জনউদ্যোগ শেরপুরের আহবায়ক আবুল কালাম আজাদসহ কলেজের অনান্য শিক্ষকবৃন্দ। মতবিনিময় সভার শুরুতে সম্প্রীতি নিয়ে রচিত ‘সবার উপরে মানুষ সত্য তাহার উপরে নাই’ প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ইমতিয়াজ চৌধুরী। এর পর আমন্ত্রিত অতিথিবৃন্দ ও শিক্ষার্থীরা তাদের মতামত তুলে ধরেন।

Shamol Bangla Ads

প্রধান অতিথির বক্তব্যে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আমিনুল ইসলাম বলেন, সম্প্রতি ভোলায় যে ঘটনাটি ঘটেছিল তার মূলে ছিলো সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে করা কারসাজি। একজন মুসলিম ছেলে অন্য ধর্মের আরেকজনের ফেজবুক একাউন্ট হ্যাক করে এই ঘটনার সূত্রপাত করেছিলো। এছাড়াও সম্প্রতি যে সব অস্থিরতার ঘটনা ঘটেছে তার মূলে ছিলো সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়ানো গুজব। সুতরাং এসব রোধে তরুণদের অগ্রণী ভুমিকা পালন করতে হবে এবং গুজবে গা ভাসানো যাবে না। যেকোনো ধর্মের উৎসবগুলোতে অন্যান্য ধর্মাবলম্বীরা সামিল হতে পারে। এতে আনন্দ আরো বহুগুনে বেড়ে যায়। দেশে সামাজিক ও ধর্মীয় সম্প্রীতি রক্ষার বাংলাদেশ পুলিশ সব সময় দৃঢ় প্রতিজ্ঞ।
জনউদ্যোগ আহবায়ক আবুল কালাম আজাদ বলেন, আমাদের দেশের উন্নয়নের পথে বর্তমানে যে দুটি অন্তরায় রয়েছে তার একটি হচ্ছে দূর্নীতি আর অন্যটি হচ্ছে সাম্প্রদায়িকতা। যারা আজ দূর্নীতির সাথে জড়িত তারাই চায় না সমাজে ধর্মীয় ও সামাজিক সম্প্রীতি বৃদ্ধি পাক। তারাই আজ বিভিন্ন ভাবে সমাজকে বিভাজিত করে তুলছে। এদের রুখতে যুব সমাজকেই এগিয়ে আসতে হবে এবং বজ্রকন্ঠে আওয়াজ তুলতে হবে ‌’দুর্নীতির বুকে বুলেট মারো বাংলাদেশ রক্ষা করো’।
শেরপুর সরকারি কলেজের সহযোগী অধ্যাপক শিব শংকর কারুয়া বলেন, সকল ধর্মেই মানুষের প্রাধান্য দেয়া হয়েছে। নির্দিষ্ট কোন ধর্ম বা মতাদর্শের নয়। পবিত্র কোরআনের বলা হয়েছে, মানুষ আশরাফুল মাখলুকাত। বলা হয়নি মুসলিম বা নির্দিষ্ট কোন ধর্মের অনুসারীরাই আশরাফুল মাখলুক। আবার নিজে খাওয়ার আগে প্রতিবেশী খেয়েছে কীনা? সেই খবর নেয়ার উপর তাগিদ দেয়া হয়েছে। এখানেও শুধু মুসলিম প্রতিবেশীদের কথা বলা হয়নি। আমরা সবাই হযরত মোহাম্মদ (সাঃ) ও ইহুদি বুড়ির গল্পটিও জানি। এই বিষয়গুলো থেকে স্পষ্ট প্রতিয়মান হয় যে ইসলাম মানবিকতার কথা বলে। পৃথিবীর সকল ধর্মই মানবিকতার গুরুত্ব দিয়েছে। সুতরাং আমরা যার যার ধর্ম পালনের মাধ্যমেই একটা সুন্দর মানবিক সম্প্রীতির সমাজ গড়ে তুলতে পারি। ধর্ম একাজে বাধা নয়, বরঞ্চ দিকনির্দেশক হিসেবে কাজ করে।
আলীমের শিক্ষার্থী ফয়সাল আহমেদ বলেন, আমরা যখন শিব শংকর কারুয়া স্যারের মুখে ইসলামের বানী শুনি তখনি বুঝতে পারি, এদেশ সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতিতে পরিপূর্ণ। কিছু সংখ্যক মানুষ নিজ স্বার্থে ধর্মের অপব্যাখ্যা দিয়ে মাঝে মাঝেই এই দেশকে অশান্ত করতে চায়। কিন্তু আমরা যারা নবীন আলেম, তারা এই অপ্রচার রুখতে বদ্ধপরিকর। আমরা মনে করি সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বজায় রাখতে ধর্ম কখনোই বাধা নয়। সেকান্দর আলী কলেজের ইন্টারমিডিয়েট প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী প্রিয়ন্তী দত্ত বলেন, আমরা মনেকরি নারী-পুরুষ, ধর্ম, বর্ণ, গোত্র নির্বিশেষে সকলেই একই সৃষ্টিকর্তার সৃষ্ট মানুষ। সৃষ্টিকর্তাকে আমরা যেভাবেই ডাকি বা যেনামেই ডাকি। তিনি আমাদের সবাকেই সমানভাবে ভালোবাসেন। আমরা নিজেদের মতের প্রাধান্য দিতে গিয়ে অন্যদের মতকে দমন করতে পারি না। আমরা তরুণ প্রজন্ম মুক্ত চিন্তার সমাজ বিনির্মানে সচেষ্ট থাকবো। ইন্টারমিডিয়েট প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী আলমিনা খাতুন বলেন, সামাজিক সম্প্রীতি নিশ্চিত না হলে আমরা নারী ক্ষমতায়নের প্রকৃত সুফল পাবো না। নারীদের নিরাপদ চলাচল ও অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে হলে আমাদের দৃষ্টিভঙ্গির আমূল পরিবর্তন খুব জরুরি। ঠিক তেমই নারীদেকেও এগিয়ে আসতে হবে নিঃসংকোচে। একজন নারী একজন মা। আর একজন মা-ই তার সন্তাদের চিন্তাধারা গঠনে মূল ভূমিকা পালন করে থাকে। সুতরাং আমাদের নারীদের এখনই দায়িত্ব নিতে শিখতে হবে। শিক্ষার্থী মফিজুল ইসলাম বলেন, সংবিধান আমাদের প্রত্যেক নাগরিককে সমান অধিকার দিয়েছে। আমরা যদি সুবিচার ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করে দূর্নীতি মুক্ত সমাজ গঠন করতে পারি তবেই সকল প্রকার সম্প্রীতি নিশ্চিত হবে।
আইইডি’ প্রকল্প সমন্বয়কারী মানিক পাল, অংশ গ্রহণের জন্য সকলকে ধন্যবাদ জানিয়ে একটি সুন্দর সম্প্রীতি বন্ধনে আবদ্ধ দেশ গঠনে যুবদের আহবান জানান। এছাড়াও ডাঃ সেকান্দর আলী কলেজের প্রভাষক খাদিজা ইয়াসমিন, আইইডির ইউনিয়ন সমন্বকারী সোলায়মান আহমেদ, শিক্ষার্থী রিপন ও ফয়সাল তাদের মতামত তুলে ধরে বক্তব্য প্রদান করেন।

error: কপি হবে না!