ads

সোমবার , ১৫ জুলাই ২০১৯ | ৬ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের নিবন্ধনপ্রাপ্ত অনলাইন নিউজ পোর্টাল
  1. ENGLISH
  2. অনিয়ম-দুর্নীতি
  3. আইন-আদালত
  4. আন্তর্জাতিক
  5. আমাদের ব্লগ
  6. ইতিহাস ও ঐতিহ্য
  7. ইসলাম
  8. উন্নয়ন-অগ্রগতি
  9. এক্সক্লুসিভ
  10. কৃষি ও কৃষক
  11. ক্রাইম
  12. খেলাধুলা
  13. খেলার খবর
  14. চাকরির খবর
  15. জাতীয় সংবাদ

নকলায় নদী ভাঙনে বিলীন হচ্ছে আবাদী জমি ও ঘরবাড়ি

শ্যামলবাংলা ডেস্ক
জুলাই ১৫, ২০১৯ ২:২১ অপরাহ্ণ

নকলা (শেরপুর) প্রতিনিধি ॥ গত কয়েক দিনের প্রবল বর্ষণ ও উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে শেরপুরের নকলা উপজেলায় ব্রহ্মপুত্র নদ ও মৃগী নদীর পানি বিপদসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হওয়ায় তীব্র স্রোতে দু’পাড়ে ভাঙন শুরু হয়েছে। এতে চন্দ্রকোনা ইউনিয়নের বাছুরআলগা দক্ষিণপাড়া এবং চকবড়ইগাছি গ্রামের বেশ কিছু ঘরবাড়িসহ আবাদি জমি ও চলাচলের রাস্তা নদী গর্ভে বিলীন হয়েছে। অনেকেই নদী ভাঙন থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য বাড়ি-ঘর সরিয়ে নেওয়াসহ অন্যত্র আশ্রয় নিচ্ছেন।
সোমবার সরেজমিনে ঘুরে জানা গেছে, ব্রহ্মপুত্র নদের ভাঙনে নকলা উপজেলার চরমধুয়া নামাপাড়া এলাকার কালাচান, ফয়েজ উদ্দিন, আলমাছ আলী, সদর আলী, আঙ্গুর মিয়া, আজিজুল ইসলাম, কাদির মিয়া, ইউসুফ আলী, পবা মিয়াসহ কয়েকটি পরিবারের বাড়ীঘর নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। ব্রহ্মপুত্র নদের শাখা মৃগী নদীর ভাঙনে বাছুরআলগা দক্ষিণপাড়া ও চকবড়ইগাছী গ্রামের আফাজ উদ্দিন ও আছিয়া বেগমের একমাত্র সম্বল ৫ শতাংশ জমির বসতবাড়ি নদীর গর্ভে চলে যাওয়ায়, তারা ভূমিহীন হয়ে গেছেন। এছাড়া মোসলেম উদ্দিন, সিরাজ উদ্দিন, দুলাল মিয়া, রজব আলী, হাইতুল্লাহ, লতিফ মিয়া, প্রতিবন্ধী হাফেজা ও বাদলসহ বেশি কিছু পরিবারের আবাদী জমি ও রাস্তা নদী গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। তারা সবাই দিশেহারা হয়ে পড়েছেন। ভাঙন থেকে জান-মাল রক্ষা করতে অনেকেই দূরে অন্যের বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছেন এবং বাড়ি-ঘর অন্যত্র সরিয়ে নিচ্ছেন।
নদীর ভাঙনে গৃহহীন ও ভুমিহীন হওয়া আছিয়া বেগম কান্না জড়িত কণ্ঠে জানান, দুই যুগ ধরে তিনি বিধবা হয়েছেন। ৫ শতাংশ জমির ভিটিতে ছোট একটি ঘর নির্মাণ করে খেয়ে না খেয়ে দিন কাটাতেন তিনি। চকবড়ইগাছী গ্রামের আফাজ উদ্দিন বলেন, আমি অন্যের বাড়িতে কাজ করে সংসার ও ছেলে মেয়েদের পড়ালেখার খরচ চালাতাম। আর নিজের বলতে ১০ শতক জমিতে তৈরী ঘরে সন্তানদের নিয়ে রাত কাটাতাম। শেষ সম্বলটুকু নদী ভাঙনে চলে যাওয়ায় তিনি ছেলে-মেয়েদের ভবিষ্যত নিয়ে শঙ্কায় আছেন। তারা বলেন, আমরা আজ এই পৃথিবীতে সবচেয়ে অসহায় মানুষ। তাদের মাথা গুজার মত জায়গা নেই। ৩-৪ দিন যাবৎ তাদের ঘরে খাবার নেই। চরমধুয়া নামাপাড়া এলাকার কালাচান নিজের মত করে বলেন, আমি এখন কি করমু, তা বুঝতাছি না।
কয়েক দিন ধরে রাত জেগে থেকে তীরবর্তী এলাকার মানুষ আস্তে আস্তে অসুস্থ হয়ে পড়ছেন বলে এলাকাবাসীরা জানান। তাদের অভিযোগ, দীর্ঘদিন যাবৎ মৃগী নদীতে বেশ কয়েকটি ড্রেজার মেশিন বসিয়ে অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের কারণে এবং বর্তমানে অতি বৃষ্টি ও উজান থেকে নেমে আসা পানির ঢলে নদীর উত্তরপাড়ে চকবড়ইগাছী ও বাছুর আলগা এলাকায় ওই ভাঙন শুরু হয়েছে। পাকা রাস্তার নিচের মাটি সরে যাওয়ায় ঝুঁকিতে যাতায়াত করছেন পথচারীরা। ব্রহ্মপুত্র নদের স্রোতের ফলে প্রতি বছরই কোন না কান এলাকায় ভাঙন দেখা দেয়। এ বছরও তার ব্যতিক্রম হচ্ছে না। চরমধুয়া নামাপাড়া এলাকার প্রবল ভাঙন সৃষ্টি হয়েছে। এছাড়া গত কয়েকদিনের অতি বর্ষণ ও পাহাড়ী ঢলে নকলা উপজেলার গণপদ্দী, নকলা, উরফা, বানেশ্বররদী, অষ্টধর, পাঠাকাটা ও গৌড়দ্বার ইউনিয়নে অনেক ফসলী জমি ও আমন বীজ তলা পানির নিচে তলিয়ে গেছে।
নকলা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জাহিদুর রহমান, উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান মুহাম্মদ সারোয়ার আলম তালুকদার, উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা জাহাঙ্গীর আলম ভাঙন কবলিত এলাকা পরিদর্শন করে খুব দ্রুত সময়ের মধ্যে ভাঙনরোধে জরুরি ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জাহিদুর রহমান জানান, নদী ভাঙনে জান-মাল রক্ষায় সতর্ক থাকার জন্য কবলিত এলাকার লোকজনকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। কয়েকটি বাড়ি-ঘর ইতোমধ্যে অন্যত্র সরিয়ে নেওয়া হযেছে। সম্ভব হলে নদী তীরবর্তী বাড়িঘর অন্যত্র সরিয়ে নিতে বলা হয়েছে। সেই সাথে ভাঙনের বিষয়ে পানি উন্নয়ন বোর্ড কর্মকর্তাসহ ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হয়েছে। পানি উন্নয়ন বোর্ডের ব্যবস্থাপনায় মৃগী নদীর ভাঙনরোধে এরই মধ্যে কাজ শুরু হয়েছে বলেও জানান তিনি।
এ ব্যাপারে পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী মাজহারুল ইসলাম জানান, রবিবার থেকে নদী ভাঙন রোধে ব্যবস্থা নেয়া শুরু হয়েছে।

error: কপি হবে না!