ads

বুধবার , ১৩ ডিসেম্বর ২০১৭ | ৭ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের নিবন্ধনপ্রাপ্ত অনলাইন নিউজ পোর্টাল
  1. ENGLISH
  2. অনিয়ম-দুর্নীতি
  3. আইন-আদালত
  4. আন্তর্জাতিক
  5. আমাদের ব্লগ
  6. ইতিহাস ও ঐতিহ্য
  7. ইসলাম
  8. উন্নয়ন-অগ্রগতি
  9. এক্সক্লুসিভ
  10. কৃষি ও কৃষক
  11. ক্রাইম
  12. খেলাধুলা
  13. খেলার খবর
  14. চাকরির খবর
  15. জাতীয় সংবাদ

অদম্য নারী; শেরপুরে সমাজ উন্নয়নে অগ্রগামীতার প্রতীক নাছরিন

শ্যামলবাংলা ডেস্ক
ডিসেম্বর ১৩, ২০১৭ ৮:৪৫ অপরাহ্ণ

স্টাফ রিপোর্টার ॥ শেরপুরে সমাজ উন্নয়নে এক অগ্রগামী নারী নাছরিন বেগম ফাতেমা; যিনি নাছরিন রহমান নামেই সমধিক পরিচিত। এবার জেলা পর্যায়ে শ্রেষ্ঠ জয়িতা সম্মাননা প্রাপ্তির মধ্য দিয়ে তিনি পেয়েছেন তার কাজের স্বীকৃতি।
৯ ডিসেম্বর আর্ন্তজাতিক নারী নির্যাতন প্রতিরোধ পক্ষ ও বেগম রোকেয়া দিবস উপলক্ষে জয়িতা অন্বেষণে বাংলাদেশ কার্যক্রমের আওতায় ‘সমাজ উন্নয়নে অবদান রেখেছেন যে নারী’ ক্যাটাগরিতে তার হাতে ওই সম্মাননা ক্রেস্ট তুলে দেন শেরপুরের জেলা প্রশাসক ড. মল্লিক আনোয়ার হোসেন। একই অনুষ্ঠানে শিক্ষা ও চাকুরীর ক্ষেত্রে সাফল্য অর্জনকারী নারী হিসেবে শেরপুর প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক সাবিহা জামান শাপলা, অর্থনৈতিকভাবে সাফল্য অর্জনকারী নারী হিসেবে ইসমত আরা বেগম, সফল জননী নারী হিসেবে আনোয়ারা বেগম ও নির্যাতনের বিভীষিকা মুছে ফেলে নতুন উদ্যমে জীবন শুরু করা নারী সাথী আক্তারের হাতেও তুলে দেওয়া হয় ওই জয়িতা সম্মাননা।
জয়িতা সম্মাননা পাওয়া ওই ৫ অদম্য নারী অনুষ্ঠানে শুনিয়েছেন তাদের জীবনের গল্প। সে গল্প নিয়েই শ্যামলবাংলা২৪ডটকম’র বিশেষ প্রতিবেদনের প্রথম পর্ব ‘অদম্য নারী : শেরপুরে সমাজ উন্নয়নে অগ্রগামীতার প্রতীক নাছরিন’।
আজ ব্যক্তিগত জীবন ও সমাজে প্রতিষ্ঠিত নাছরিনের জীবনের প্রথম অধ্যায়টি এত সুন্দর ছিল না। জীবনে চলার পথে পথে ছিল নানা কষ্ট ও প্রতিবন্ধকতা। তিনি জীবনের সকল প্রতিবন্ধকতাকে উপেক্ষা করে শ্রম ও সাহসিকতার উপর ভিত্তি করে ধীরে ধীরে নিজেকে সমাজে প্রতিষ্ঠিত করেছেন। শুধু তিনি নিজেই প্রতিষ্ঠিত হননি, পেশা জীবনে শিক্ষকতার পাশাপাশি প্রতিনিয়ত কাজ করে চলেছেন অবহেলিত নারী, শিশু ও বিভিন্ন সামাজিক উন্নয়ন কর্মকান্ডে।
যখন বয়সের কারণে খেলাধূলা ও শিক্ষা ক্ষেত্রে যখন নিজেকে নিয়োজিত রাখার কথা, ঠিক তখন এই নারীকে বল্যবিবাহের কারণে বেছে নিতে হয়েছিল সংসার জীবনের মত কঠিন পথচলাকে। এরপরও তিনি দমে যাননি। বরং স্বামীর অদম্য সহযোগিতায় তিনি ১৯৯০ সালে এসএসসি, ১৯৯৫ সালে এইচএসসি, ১৯৯৭ সালে বিএ ও ২০১৫ সালে এম এ পাশ করেন। বিয়ের শুরুতে তাকে সামলাতে হয় অভাব অনটনের সংসার। স্বামী ও স্ত্রী উভয়েই ছাত্রাবস্থায় থাকার দরুণ সংসারে কোন উপার্জন ছিল না। এরই মধ্যে তিনি ৩ সন্তানের জননী হলে সংসারে নেমে আসে অশান্তি ও হতাশা।
অদম্য সাহসী এ নারী স্বামীর যোগ্য সহর্ধমিনী হিসেবে স্বামী-স্ত্রী উভয়ে মিলে নিরক্ষরমুক্ত বাংলাদেশ গড়ার প্রত্যয়ে অংশীদার হওয়ার লক্ষ্যে ছোট পরিসরে একটি স্কুল কার্যক্রম শুরু করেন। এরপর আর তাকে পিছন ফিরে তাকাতে হয়নি। ধীরে ধীরে ছোট সেই প্রতিষ্ঠানটি এখন শেরপুর জেলার সবচেয়ে উন্নত ও সফল আইডিয়াল প্রিপারেটরি এন্ড হাই স্কুল, যার বর্তমানে শ্রীবরদী ও ঝিনাইগাতীতে আরও দু’টি শাখা খোলা হয়েছে। স্বামী আলহাজ্ব মাহবুবুর রহমান সুজা ওই প্রতিষ্ঠানের অধ্যক্ষ আর নাছরিন রয়েছেন উপাধ্যক্ষের দায়িত্বে। তাদের যৌথ নেতৃত্বে প্রতিষ্ঠানের পাঠদান কার্যে নিয়োজিত রয়েছেন ১৪০জন শিক্ষক-শিক্ষিকা। পিএসসি, জেএসসি থেকে শুরু করে এসএসসি পর্যন্ত সাফল্যের স্বর্ণশিখরে অবস্থান করছে এ প্রতিষ্ঠানটি। শুধু তাই নয় তাদের অক্লান্ত পরিশ্রমে ২০১৭ সালে জেলার সর্বশ্রেষ্ঠ স্কুল হিসেবে এটিকে প্রতিষ্ঠিত করেছেন।
বিপ্লবী এ নারী ছাত্র জীবন থেকেই রাজনীতির সাথে জড়িত। জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর আদর্শে অনুপ্রাণিত হয়ে ১৯৯১ সালে তিনি ছাত্রলীগে যোগ দেন। ১৯৯২ সালে শেরপুর সরকারি কলেজ ছাত্র সংসদ নির্বাচনে ছাত্র মিলনায়তন সম্পাদক হিসেবে বিপুল ভোটে জয়ী হন। এরপর ধীরে ধীরে তিনি নিজেকে আওয়ামী লীগের সৎ, নির্লোভ ও একনিষ্ঠ কর্মী হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছেন। এখন তিনি শেরপুর জেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। তিনি ২০০৮ ও ২০১৪ সালে জাতীয় সংসদ নির্বাচনে শেরপুর-৩ (শ্রীবরদী-ঝিনাইগাতী) আসনে দলীয় মনোনয়ন প্রত্যাশী ছিলেন। আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখেও দলের একজন সক্রিয় মনোনয়নপ্রত্যাশী হিসেবে তিনি এলাকার নানা সমস্যাসহ মানুষের নানা সমস্যায় পাশে দাঁড়াচ্ছেন, হাত বাড়াচ্ছেন সহায়তার।
শিক্ষকতা ও রাজনীতির অন্তরালে তিনি একজন সমাজসেবিকা। জনস্বার্থে তিনি নিঃস্বার্থ ও নিরলসভাবে কাজ করে চলেছেন। তিনি শেরপুরের এতিম মেয়েদের বিবাহ বন্ধন কর্মসূচী বাস্তবায়ন সংগঠনের সভাপতি, শেরপুর রোটারী ক্লাবের প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট, শেরপুর জেলা বঙ্গবন্ধু দুঃস্থ কল্যাণ ও পুর্নবাসন সংস্থার উপদেষ্টা, ফিরোজা-ইজ্জত মেমোরিয়াল ফাউ-েশনের প্রতিষ্ঠাতা, জেলা মহিলা পরিষদের আইন বিষয়ক সম্পাদিকা ও জেলা মানবাধিকার কমিশনের সাংগঠনিক সম্পাদক। এছাড়া তিনি শেরপুর রেড ক্রিসেন্ট, রোটারী চক্ষু হাসপাতাল রোগী কল্যাণ সমিতি, বাংলাদেশ ডায়বেটিক সমিতি, সদর হাসপাতাল ব্যবস্থাপনা কমিটি, প্রাথমিক শিক্ষা কমিটি, শিশু পরিবার, জাতীয় মহিলা সংস্থা, টি এল সি সি, ভিজিডি প্রকল্প, শিশু একাডেমী, ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ, ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি, চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রি, ওমেন অব কমার্স এন্ড ইন্ডাষ্ট্রি ও কমিউনিটি পুলিশিংয়ের সাথেও সক্রিয়ভাবে জড়িত রয়েছেন।
উদ্যমী নারী নাছরিন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পদাঙ্ক অনুসরন করে মহিলাদের আত্মকর্মসংস্থানের লক্ষ্যে নিজ অর্থায়নে দুঃস্থ মহিলাদেরকে সেলাই মেশিন ও ৬ মাস মেয়াদী সেলাই প্রশিক্ষণ প্রদান করেন। নির্যাতিত প্রায় ৮শ মহিলাকে আইনী সহায়তা প্রাপ্তিতে সাহায্য করেছেন এবং করে যাচ্ছেন। বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিক্ষা উপকরণ বিতরণ ও আর্থিক সহায়তা করে যাচ্ছেন। নিজ অর্থায়নে মেডিক্যাল ক্যাম্প করে চোখের ছানি অপারেশন এবং চোখের লেন্স লাগানোর ব্যবস্থা করে চলেছেন। শেরপুর সদর হাসপাতালে গরীব ও দুঃস্থ রোগীদের চিকিৎস্বার্থে রোগী কল্যাণ তহবিলে প্রতি বছর ২৫ হাজার টাকা করে অনুদান দিয়ে যাচ্ছেন। এছাড়াও বিভিন্ন মসজিদ-মাদ্রাসায় প্রতিনিয়ত অনুদান প্রদান, প্রতিবন্ধী শিশুদের চিকিৎসা ও হুইল চেয়ার বিতরণ এবং শীতার্তদের মাঝে শীত বস্ত্র বিতরণ করে চলেছেন। তাই তিনি জনস্বার্থে আরও কাজ করার লক্ষ্যে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে শেরপুর-৩ (শ্রীবরদী-ঝিনাইগাতী) আসনে দলের মনোনয়ন প্রত্যাশী। জয়তু জয়িতা, জয়তু নাছরিন।

Shamol Bangla Ads

(জয়িতাদের নিয়ে শ্যামলবাংলা২৪ডটকম’র বিশেষ প্রতিবেদনের দ্বিতীয় পর্বে থাকছে অদম্য নারী; সাফল্যে প্রস্ফুটিত শাপলা।)

error: কপি হবে না!