ভোট বাণিজ্যে পিছিয়ে পড়তে পারেন পরিচ্ছন্ন ও জনপ্রিয় প্রার্থী
স্টাফ রিপোর্টার ॥ অবশেষে তৃণমূলেই গড়িয়েছে ঐতিহ্যবাহী শেরপুর পৌরসভার নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী বাছাই প্রক্রিয়া। ২২ নভেম্বর রবিবার রাতে শহরের চকবাজারস্থ দলীয় কার্যালয়ে জেলা আওয়ামী লীগের এক বিশেষ সভায় ওই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। তবে এ পৌরসভায় মেয়র পদে দলের ৫ মনোনয়নপ্রত্যাশীর মধ্যে প্রথমতঃ সমঝোতার চেষ্টা চালানো হবে এবং সেই চেষ্টা সফল না হলে তৃণমূলের ভোটের প্রাপ্ত ক্রমানুসারে ৫ জনের নামই কেন্দ্রীয় মনোনয়ন বোর্ডে পাঠানো হবে বলেও সিদ্ধান্তে জানানো হয়। সোমবার দুপুরে জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট চন্দন কুমার পাল পিপি ওই তথ্য নিশ্চিত করেছেন। অন্যদিকে তৃণমূলের ভোটের নামে এবারও এখানে ‘ভোট বাণিজ্য’ হবে এবং সেক্ষেত্রে অর্থবিত্ত ছাড়া দলের ত্যাগী, পরিচ্ছন্ন ও জনপ্রিয় প্রার্থীও পিছিয়ে পড়তে পারেন বলে আশঙ্কা করছেন রাজনৈতিক পর্যবেক্ষক মহল।

জানা যায়, শেরপুর পৌরসভার নির্বাচনে মেয়র পদে দলীয় প্রার্থী বাছাই প্রক্রিয়া চূড়ান্ত করতে জেলা আওয়ামী লীগের ওই সভায় প্রথমেই আনুষ্ঠানিক প্রার্থিতা আহবান করা হয়। ওইসময় বর্তমান মেয়র, জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক গোলাম মোহাম্মদ কিবরিয়া লিটন, জেলা আইনজীবী সমিতি ও প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি, জেলা আওয়ামী লীগের তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক এডভোকেট রফিকুল ইসলাম আধার, সাংগঠনিক সম্পাদক আনোয়ারুল হাসান উৎপল, সাংস্কৃতিক সম্পাদক আনিসুর রহমান এবং শ্রম বিষয়ক সম্পাদক আরিফ রেজা আনুষ্ঠানিক মনোনয়নপ্রত্যাশী হন। এরপর সিনিয়র নেতাদের মতামত শেষে ৫ প্রার্থীর মধ্যে গোলাম কিবরিয়া লিটন, এডভোকেট রফিকুল ইসলাম আধার ও আরিফ রেজা তৃণমূলের ভোট ব্যতীত প্রার্থীদের সার্বিক অবস্থা বিবেচনায় ৫ জনের নামই কেন্দ্রে পাঠানোর প্রস্তাব করেন। বিশেষ করে এডভোকেট রফিকুল ইসলাম আধার তৃণমূল নিয়ে অতীতের তিক্ত অভিজ্ঞতার পাশাপাশি চলমান সময়ে একাধিক বিত্তবান প্রার্থী তৃণমূলকে প্রভাবিত করছে এবং কোন কোন দায়িত্বশীল নেতা তাদের পক্ষে কলকাঠি নাড়ছেন বলে অভিযোগ তুলে বলেন, তৃণমূলের নামে ভোট বাণিজ্যের সমূহ আশঙ্কা রয়েছে এবং সেক্ষেত্রে দলের সিনিয়র, পরিচ্ছন্ন ও জনবান্ধব প্রার্থীও পিছিয়ে পড়তে পারেন। এজন্য তিনি তৃণমূল বাদ দিয়ে দলের সিনিয়রিটি ও সার্বিক অবস্থান অনুযায়ী ৫ জনের তালিকা কেন্দ্রে পাঠানোর প্রস্তাব করেন। অন্যদিকে অপর ২ মনোনয়নপ্রত্যাশী আনোয়ারুল হাসান উৎপল ও আনিসুর রহমান কেবল তৃণমূলের ভোটের মাধ্যমে নির্বাচিত একজনের নাম কেন্দ্রে পাঠানোর প্রস্তাব দেন। ওই অবস্থায় জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি হুইপ আতিউর রহমান আতিক তার সমাপনী বক্তব্যে তৃণমূলের ভোটের (৭১ সদস্যের শহর আওয়ামী লীগ ও শহরে অবস্থানরত জেলা আওয়ামী লীগের ৩৫ নেতার) প্রাপ্ত ক্রমানুসারে ৫ জনের তালিকাই কেন্দ্রে পাঠানোর সিদ্ধান্ত ঘোষণা করেন। তবে তৃণমূলের আগে প্রথমতঃ ৫ প্রার্থীকে এবং পরবর্তীতে জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট চন্দন কুমার পালের নেতৃত্বে ১২ সদস্যের কমিটিকে সমঝোতার চেষ্টা চালানোর দায়িত্ব দেওয়া হয়।
সভায় অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান হুমায়ুন কবীর রুমান, আওয়ামী লীগের জাতীয় পরিষদ সদস্য মোঃ খোরশেদুজ্জামান, জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি খন্দকার নজরুল ইসলাম, ফখরুল মজিদ খোকন ও মিনহাজ উদ্দিন মিনাল, সদর উপজেলা চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলাম, সাবেক চেয়ারম্যান ছানুয়ার হোসেন ছানু, জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট সুব্রত কুমার দে ভানু ও নাজিমুল হক নাজিম, সাংগঠনিক সম্পাদক বশিরুল ইসলাম শেলু, শহর আওয়ামী লীগের সভাপতি এডভোকেট আবুল কাশেম জিপি প্রমুখ।