স্টাফ রিপোর্টার ॥ শেরপুরে দুদকের জালে গ্রেফতার হওয়া শ্রীবরদী উপজেলার ঘুষখোর সাব-রেজিস্ট্রার আব্দুর রহমান ভুঁইয়ার জামিন বাতিল করে ফের তাকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। ১০ ফেব্রুয়ারি সোমবার দুপুরে দুদকের আবেদনের প্রেক্ষিতে নবাগত জেলা ও দায়রা জজ মোহাম্মদ আল মামুন ঘুষখোর ওই সাব-রেজিস্ট্রারের অন্তবর্তী জামিন বাতিল করে তাকে জেলা কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন। এর আগে ১৯ জানুয়ারি তৎকালীন জেলা ও দায়রা জজ মুজিবুর রহমান তাকে অন্তবর্তীকালীন জামিন দিলে তা নিয়ে আদালত অঙ্গনসহ বিভিন্ন মহলে ব্যাপক তোলপাড় সৃষ্টি হয়।
এদিকে, দুদকের ফাঁদে নিজ কার্যালয়ে ঘুষের ৫০ হাজার টাকাসহ হাতেনাতে গ্রেফতার হওয়া জেলা হিসাবরক্ষণ অফিসের একাউন্টস সুপারিনটেনডেন্ট মো. ইউনুছ মিয়ার জামিন আবেদনও এদিন আদালতে না-মঞ্জুর হয়েছে।
দুদকের আইনজীবী অ্যাডভোকেট মোখলেছুর রহমান জীবন আদালতে ঘুষের টাকাসহ গ্রেফতার হওয়া শ্রীবরদী উপজেলা সাব-রেজিস্ট্রার আব্দুর রহমান ভুঁইয়ার জামিন বাতিল ও জেলা হিসাবরক্ষণ অফিসের একাউন্টস সুপারিনটেনডেন্ট মো. ইউনুছ মিয়ার জামিন আবেদন না-মঞ্জুরের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন। তবে সাব রেজিষ্ট্রার আব্দুর রহমান ভূইয়ার আইনজীবী, জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি এডভোকেট একেএম মোছাদ্দেক ফেরদৌসী বলেন, মামলার মেরিট বিবেচনায় বিশেষ করে দুদকের অভিযোগ মতে সাব রেজিষ্ট্রারের হেফাজত থেকে উদ্ধার হওয়া টাকার কোন ভিকটিক না থাকায় তাকে আদালত জেল গেইটে জিজ্ঞাসাবাদ শেষে প্রতিবেদন আশা পর্যন্ত অন্তবর্তি জামিন দিয়ে ছিলেন। এ ক্ষেত্রে অন্যকিছু ভাবার সুযোগ নেই।
উল্লেখ্য, গত ৪ ডিসেম্বর সন্ধ্যায় দুদক সমন্বিত জেলা কার্যালয় টাঙ্গাইলের এক অভিযানে সাব-রেজিস্ট্রার আব্দুর রহমান ভুঁইয়াকে শ্রীবরদী উপজেলার নিজ কার্যালয় হতে ঘুষের নগদ ৯৫ হাজার ৫০০ টাক সহ আটক করা হয়। ওই ঘটনায় দুদক তার বিরুদ্ধে ১৯৪৭ সালের দূনীতি প্রতিরোধ আইনের ১৬১ দন্ডবিধির ৫/২ ধারায় একটি মামলা দায়ের করে। ওই মামলায় কিছুদিন জেলহাজতে থাকলেও পরে তিনি আদালত থেকে অন্তবর্তীকালিন জামিন নিয়ে শ্রীবরদী উপজেলা সাব-রেজিস্ট্রি কার্যালয়ে যোগদান করে নিয়মিত কার্যক্রম চালাতে শুরু করলে স্থানীয়দের মাঝে উত্তেজনা ও ক্ষোভ দেখা দেয়। এ নিয়ে স্থানীয়ভাবে বিক্ষোভ সমাবেশ ও মানববন্ধন কর্মসূচি পালিত হয়।
এছাড়া, গত ২৯ ডিসেম্বর জেলা হিসাবরক্ষণ কার্যালয়ের নিজ কক্ষ থেকে একাউন্টস সুপারিনটেনডেন্ট মো. ইউনুছ মিয়াকে ঘুষের ৫০ হাজার টাকা সহ দুদক কর্মকর্তারা হাতেনাতে গ্রেপ্তার করেন। এ ঘটনায় তার বিরুদ্ধে দূনীতি প্রতিরোধ আইনে মামলা দায়ের হলে আদালত তাকে জেলা কারাগারে প্রেরণ করেন। সোমবার ধার্য্য তারিখে আদালতে তার পক্ষে জামিন আবেদন করা হলে তার বিচারক তার জামিন না-মঞ্জুর করেন।