নালিতাবাড়ী (শেরপুর) প্রতিনিধি ॥ আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য, কৃষি মন্ত্রণালয় সংক্রান্ত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি ও সাবেক কৃষিমন্ত্রী বেগম মতিয়া চৌধুরী এমপি বলেছেন, বর্তমানে কিছু লোক বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য নিয়ে হৈচৈ শুরু করেছেন। ভাস্কর্য নিয়ে হৈচৈ করে মাঠ গরম করা যাবে না। তিনি তাদের উদ্দেশ্যে বলেন, সৌদি আরবে যেতে হলে পাসপোর্ট করতে হবে। আর পাসপোর্ট করতে হলে ছবি তুলতে হবে। একসময় এরা ছবি তোলার বিরুদ্ধেও অবস্থান নিয়েছিল। কাজেই এসব কথা বলে ভাল কাজ ঠেকানো যাবে না। তিনি ২৫ নভেম্বর বুধবার দিনব্যাপী তার নির্বাচনী এলাকা শেরপুর-২ (নকলা-নালিতাবাড়ী) আসনের নালিতাবাড়ী উপজেলার পলাশীকুড়া জনতা উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে পল্লী চিকিৎসক, প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী, জেলে, নরসুন্দর, আশ্রয়ন কেন্দ্রের বাসিন্দাদের মাঝে সৌরবাতি ও বিভিন্ন মসজিদ-গির্জায় ঢেউটিন ও নগদ অর্থ বিতরণকালে ওইসব কথা বলেন।

তিনি আরও বলেন, ইরানের সিরাজ শহরে গালিবের এবং তেহরানে নাদির শাহের ভাস্কর্য আছে। ইন্দোনেশিয়া ও তুরস্কেও ভাস্কর্য আছে। বীরদের ভাস্কর্য তারা স্থাপন করেছে। পাকিস্তানে স্ট্যাচু আছে। এসব ভাস্কর্য সম্পর্কে এরা কিছু বলে না। পাকিস্তানের নোটে জিন্নাহ সাহেবের ফটো আছে। ওইসব নোট পকেটে নিয়ে তারা তাহলে নামাজ পড়ে কিভাবে? এসব গোমড়া কথা বাদ দিয়ে সবাই মিলে দেশটাকে সুন্দর করে গড়ে তোলার আহবান জানান তিনি।
মতিয়া চৌধুরী বলেন, খালেদা জিয়ার ছেলে তারেক লন্ডনে বসে ক্যাসিনো চালায় অর্থাৎ জুয়া ও মদের ব্যবসা করে, তখন এদের চোখে ইসলামের খেলাপ হয় না। যারা আজকে এতো ফতোয়া দিচ্ছেন তারা কোনদিন খালেদা জিয়ার চুল ফোলানো, ফিন ফিনে শাড়ী নিয়ে একটি কথাও বলেননি। আর এখন বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য নিয়ে তাদের গা জ্বালা শুরু হয়েছে।
তিনি বলেন, আজকে নারী শিক্ষার বিরুদ্ধে কথা বললে কেউ মানবে না। তারপরও এরাই এক সময় বলবে নারীদের লেখাপড়া করানো যাবে না। এরা হলো কচ্ছপের মতো সুযোগ বুঝে অল্প অল্প করে মুখ বের করে। তাই তিনি উপস্থিত সকলকে এদের থেকে সাবধান থাকতে বলেন। তিনি শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে বলেন, স্কুলে বেতন দেওয়া লাগে না, বই কেনার টাকা লাগে না, মাঝে-মধ্যে প্রণোদনা দেওয়া হচ্ছে। কাজেই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শিক্ষার্থীদের পড়াশোনার সকল সুযোগ-সুবিধা দিয়েছেন। এখন ভাল ফলাফল করার দায়িত্ব তোমাদের।
অনুষ্ঠানে সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার (নালিতাবাড়ী সার্কেল) জাহাঙ্গীর আলম, নালিতাবাড়ী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মাহফুজুল আলম মাসুম, পৌর মেয়র আবু বক্কর সিদ্দিক, স্পেশাল পিপি এডভোকেট গোলাম কিবরিয়া বুলু, উপজেলা আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি আব্দুস সবুর, সাধারণ সম্পাদক ফজলুল হক, উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান আমিনুল ইসলামসহ দলীয় নেতা-কর্মীগণ উপস্থিত ছিলেন।
এদিন মািতয়া চৌধুরী টিআর, কাবিখার অর্থায়নে ১২টি ইউনিয়ন ও ১টি পৌরসভায় দ্বিতীয় শ্রেণির ২ হাজার ৯৬০টি, পল¬ী চিকিৎসক, প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী, জেলে, নরসুন্দর, আশ্রয়ন কেন্দ্রের বাসিন্দাদের মাঝে ২ হাজার ৫৮১টি সৌরবাতি বিতরণ করেন। এছাড়া উপজেলার বিভিন্ন মসজিদ ও গীর্জায় ২৭৫ বান্ডেল ঢেউটিন এবং নগদ ৩ হাজার করে টাকা বিতরণ করেন।