ads

শনিবার , ২৪ আগস্ট ২০১৯ | ১৫ই চৈত্র, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ
তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের নিবন্ধনপ্রাপ্ত অনলাইন নিউজ পোর্টাল
  1. ENGLISH
  2. অনিয়ম-দুর্নীতি
  3. আইন-আদালত
  4. আন্তর্জাতিক
  5. আমাদের ব্লগ
  6. ইতিহাস ও ঐতিহ্য
  7. ইসলাম
  8. উন্নয়ন-অগ্রগতি
  9. এক্সক্লুসিভ
  10. কৃষি ও কৃষক
  11. ক্রাইম
  12. খেলাধুলা
  13. খেলার খবর
  14. চাকরির খবর
  15. জাতীয় সংবাদ

জ্বলছে পৃথিবীর ফুসফুস অ্যামাজন

শ্যামলবাংলা ডেস্ক
আগস্ট ২৪, ২০১৯ ১:০১ অপরাহ্ণ

শ্যামলবাংলা ডেস্ক : পৃথিবীর ফুসফুস খ্যাত আমাজনের জঙ্গলে হাজার হাজার জায়গায় আগুন জ্বলছে। গত এক দশকে এত ব্যাপক মাত্রায় সেখানে দাবানল সৃষ্টি হয়নি। সবচেয়ে খারাপ পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে ব্রাজিলের উত্তরাঞ্চলে রোরাইমা, একার, রনডোনিয়া এবং আমাজোনা রাজ্যে; পাশাপাশি মাতো গ্রোসো ডো সুল এলাকাতেও।
তবে, হ্যাশট্যাগ প্রে ফর আমাজোনাস (#PrayforAmazonas) ব্যবহার করে সামাজিক মাধ্যমে আগুনের যেসব ছবি শেয়ার করা হয়েছে বা এই আগুনের যেসব ছবি আপলোড করা হচ্ছে, সেগুলো কয়েক দশকের পুরোনো বলে প্রমাণিত হয়েছে এবং অনেক ছবি আদৌ ব্রাজিলেরই নয়। তাহলে আসল পরিস্থিতিটা কেমন আর সেই পরিস্থিতি আসলেই কতটা খারাপ?

Shamol Bangla Ads

এ বছর আগুন লাগার ঘটনা ঘটেছে অনেক বেশি

ব্রাজিলে আমাজনের উষ্ণমণ্ডলীয় বনাঞ্চলে ২০১৯ সালে ব্রাজিলিয়ান স্পেস অ্যাজেন্সির তথ্য অনুযায়ী, রেকর্ডসংখ্যক দাবানলের ঘটনা ঘটেছে। দ্য ন্যাশনাল ইন্সটিটিউট ফর স্পেস রিসার্চ (আইএনপিই) বলছে, তাদের উপগ্রহ থেকে সংগৃহীত তথ্যে দেখা যাচ্ছে, ২০১৮ সালের একই সময়ের তুলনায় এ বছর আগুন লাগার ঘটনা ৮৫ শতাংশ বেড়েছে।
সরকারি হিসাব বলছে, এ বছরের প্রথম আট মাসে ব্রাজিলের জঙ্গলে ৭৫ হাজারের বেশি দাবানল হয়েছে। ২০১৩ সালের পর এই সংখ্যা সবচেয়ে বেশি। পুরো ২০১৮ সালে বনাঞ্চলে মোট আগুন লাগার সংখ্যা ছিল ৩৯ হাজার ৭৫৯।
শুকনো মৌসুমে আমাজনের জঙ্গলে দাবানল একটা প্রচলিত ঘটনা। সেখানে শুকনো মৌসুমের সময়কাল জুলাই থেকে অক্টোবর পর্যন্ত। এই দাবানল তৈরি হতে পারে প্রাকৃতিক কারণে, যেমন বজ্রপাত হলে। কিন্তু কৃষক এবং কাঠুরেরাও ফসল উৎপাদনের জন্য অথবা পশু চরানোর জন্য জমি পরিষ্কার করতে জঙ্গলে আগুন দিয়ে থাকেন।
আন্দোলনকারীরা বলছেন, ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট জেয়ার বলসোনারোর পরিবেশবিরোধী কথাবার্তা এভাবে জঙ্গল সাফ করার কাজকে আরো উৎসাহিত করেছে। জবাবে বলসোনারো এর দায় চপিয়েছেন বেসরকারি সংস্থাগুলোর ওপর। তিনি জলবায়ু পরিবর্তনের ব্যাপারে সন্দেহপ্রবণ ব্যক্তি। তিনি বলেছেন, বেসরকারি সংস্থাগুলো সরকারের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করার জন্য নিজেরাই এই আগুন লাগিয়েছে। পরে অবশ্য তিনি স্বীকার করেছেন যে এই দাবানল বন্ধ করার মত সম্পদ সরকারের হাতে নেই।

Shamol Bangla Ads

সবচেয়ে খারাপ পরিস্থিতি দেশটির উত্তরাঞ্চলে
রোরাইমা, একার, রনডোনিয়া এবং আমাজোনাস সব এলাকাতেই গত চার বছরের (২০১৫-২০১৮) তুলনায় গড়ে আগুন লাগার ঘটনা উল্লেখযোগ্য হারে বেড়ে গেছে। রোরাইমাতে দাবানলের ঘটনা বেড়েছে ১৪১ শতাংশ, রনডোনিয়াতে ১১৫ শতাংশ এবং আমাজোনাস-এ ৮১ শতাংশ। দক্ষিণে মাতো গ্রোসো ডো সুল রাজ্যে আগুন লাগার হার বেড়েছে ১১৪ শতাংশ। ব্রাজিলের সবচেয়ে বড় রাজ্য আমাজোনাস জরুরি অবস্থা জারি করেছে।

জ্বলন্ত আগুন থেকে প্রচুর পরিমাণে ধোঁয়া ও কার্বন নির্গত হচ্ছে
আগুন থেকে কুণ্ডলি পাকিয়ে ওঠা ধোঁয়া আমাজনের গোটা এলাকা জুড়ে এবং আশেপাশে ছড়িয়ে পড়েছে।ইউরোপীয় ইউনিয়নের কোপারনিকাস অ্যাটমসফিয়ার মনিটরিং সার্ভিসের (ক্যামস) তথ্য অনুযায়ী, এই ধোঁয়া ছড়িয়ে পড়েছে আটলান্টিকের উপকূল পর্যন্ত। এমনকি ২০০০ মাইলেরও (৩,২০০ কিমি) বেশি দূরে সাও পাওলোর আকাশ এই ধোঁয়ায় অন্ধকার হয়ে গেছে। এই আগুন থেকে ব্যাপক পরিমাণ কার্বন ডাইঅক্সাইড নির্গত হচ্ছে, যার পরিমাণ এবছর ২২৮ মেগাটনের সমপরিমাণ দাঁড়িয়েছে। ক্যামস সংস্থাটি বলছে, এই পরিমাণ কার্বন ২০১০ সালের পর সবচেয়ে বেশি। এই ধোঁয়া থেকে কার্বন মনোক্সাইডও নির্গত হচ্ছে। কাঠ পোড়ালে সচরাচর এই গ্যাস নির্গত হয়। ক্যামস যে মানচিত্র প্রকাশ করেছে তাতে দেখা যাচ্ছে খুবই চড়া মাত্রায় বিষাক্ত এই গ্যাস কার্বন মনোক্সাইড দক্ষিণ আমেরিকার উপকূল ছাড়িয়ে এখন আরও দূরে ছড়িয়ে পড়ছে।
আমাজন অরণ্যাঞ্চলে তিরিশ লক্ষ প্রজাতির প্রাণী ও উদ্ভিদ রয়েছে। সেখানে বসবাস করেন ১০ লাখ ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠির মানুষ। এই বনাঞ্চল বৈশ্বিক উষ্ণায়ন নিয়ন্ত্রণের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। কারণ এই বিশাল অরণ্যাঞ্চলের গাছপালা প্রতি বছর কয়েক মিলিয়ন টন কার্বন শুষে নিয়ে বিশ্বের উষ্ণায়ন মোকাবেলা করে। কিন্তু গাছ যখন কাটা হয়, অথবা পুড়িয়ে ফেলা হয়, তখন যে কার্বন গাছের মধ্যে সঞ্চিত থাকে তা বায়ুমণ্ডলে আবার মিশে যায় এবং উষ্ণমণ্ডলীয় এসব বৃক্ষের কার্বন শুষে নেয়ার ক্ষমতা হ্রাস পায়।

এই আগুনের প্রভাব পড়েছে আরও যেসব দেশে
৭.৪ বর্গ কিলোমিটার এলাকা বিস্তৃত আমাজন বেসিনের আরও বেশ কিছু দেশ এ বছরের ব্যাপক দাবানলের কবলে পড়েছে। ব্রাজিলের পর দ্বিতীয় সর্বাধিক আগুনের ঘটনা ঘটেছে ভেনেজুয়েলায়। সেখানে দাবানল হয়েছে ২৬ হাজারটি। তৃতীয় স্থানে রয়েছে বলিভিয়া যেখানে আগুনের ঘটনা ঘটেছে ১৭ হাজারের বেশি। বলিভিয়া সরকার দেশের পূর্বাঞ্চলে দাবানল নেভানোর কাজে সহায়তা করার জন্য একটি বিমানের মাধ্যমে অগ্নি-নির্বাপক যন্ত্র ভাড়া করেছে। প্রায় ছয় বর্গ কিলোমিটার এলাকা জুড়ে রয়েছে বলিভিয়ার বনাঞ্চল। ওই এলাকায় পাঠানো হয়েছে অতিরিক্ত জরুরিকালীন কর্মী। এবং আগুনের হাত থেকে রক্ষা করার জন্য পশুপাখিদের জন্য অভয়ারণ্য তৈরি করা হচ্ছে। বিবিসি বাংলা।

error: কপি হবে না!