জামালপুর প্রতিনিধি : জামালপুরে যমুনা নদীর পানি দুয়েক সেন্টিমিটার করে কমা শুরু করলেও বুধবার ওই নদীর পানি বিপদসীমার ৮৩ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়। ফলে বন্যায় যমুনা নদী তীরবর্তী উপজেলাগুলোয় নতুন কোনো এলাকা প্লাবিত না হলেও গত ৪ দিনে বন্যাকবলিত ৭টি উপজেলায় ৩ লাখের অধিক মানুষ পানিবন্দি রয়েছে। একদিনে জেলার দু’টি উপজেলায় বন্যার পানিতে ডুবে ২ সহোদর শিশুসহ ৩ শিশুর মৃত্যু হয়েছে বলে জেলার বন্যা নিয়ন্ত্রণ কক্ষ নিশ্চিত করেছে।

জানা যায়, বুধবার জামালপুর জেলার মেলান্দহ ও ইসলামপুর উপজেলায় বন্যার পানিতে ডুবে দুই সহোদরসহ ৩ শিশুর মৃত্যু হয়েছে। বুধবার সকালে জেলার মেলান্দহ উপজেলার ঘোষেরপাড়া ইউনিয়নের পশ্চিম ঘোষেরপাড়া গ্রামের বাচ্চু মিয়ার মেয়ে শিশু শর্মিলা (৪) বাড়ির পাশে সরকারি শেখ কামাল কলেজ মাঠে অন্যদের সাথে খেলতে যায়। হঠাৎ করে বন্যার পানিতে পড়ে ডুবে ঘটনাস্থলেই সে মারা যায়। অপরদিকে জেলার ইসলামপুর উপজেলার পাথর্শী ইউনিয়নের পশ্চিম হাড়িয়াবাড়ি এলাকায় বেলা ১টার দিকে বাড়ির পাশে বন্যার পানিতে পড়ে নিখোঁজ হয় স্থানীয় আনোয়ার হোসেনের ছেলে আলামিন (৭) ও আলপিনা (৬)। জামালপুর ও ইসলামপুরের ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরি ও উদ্ধারকর্মীরা টানা চার ঘণ্টা অনুসন্ধান চালিয়ে বিকেল ৫টার দিকে শিশু দুটিকে মৃত অবস্থায় উদ্ধার করতে সক্ষম হয়।
এদিকে যমুনা নদীর পানি গত ২৪ ঘণ্টায় দুয়েক সেন্টিমিটার করে কমা শুরু করলেও গত ৪ দিনের বন্যায় জামালপুর জেলার সাতটি উপজেলায় বন্যা পরিস্থিতির কোনো উন্নতি হয়নি। বন্যাকবলিত জেলার সাতটি উপজেলায় তিন লাখের অধিক মানুষ পানিবন্দি রয়েছে। অপরদিকে ব্রহ্মপুত্র নদের পানি বাড়ছে। ফলে জামালপুর সদর উপজেলার কিছু কিছু নিচু এলাকায় বন্যা দেখা দিয়েছে।
জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা মো. নায়েব আলী জানান, জামালপুর জেলার ৭টি উপজেলার ৮ টি পৌরসভা এলাকা ও ৪২টি ইউনিয়নে ৩ লাখ ৮ হাজার মানুষ পানিবন্দি রয়েছে। যমুনা নদীর পানি কিছুটা কমলেও পুরাতন ব্রহ্মপুত্র নদের পানি বাড়তে থাকায় জামালপুর সদর উপজেলার তুলশীর চর, লক্ষ্মীরচর ও নাওভাঙা চর এলাকার নিম্নাঞ্চল নতুন করে প্লাবিত হয়েছে। জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ৭ উপজেলায় বন্যা দুর্গত মানুষদের মাঝে ত্রাণ ও নগদ টাকা বিতরণ অব্যাহত রয়েছে।