স্টাফ রিপোর্টার ॥ নানা অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগসহ অঘটনের দীর্ঘ ৪ মাস পর অবশেষে শেরপুর জেলা কারাগারের সেই সুপার মজিবুর রহমানের বদলীর আদেশ হয়েছে। একই সাথে তার স্থলে জামালপুরের সুপার সুরাইয়া আক্তারকে পদায়ন করা হয়েছে। আইজি (প্রিজন) অফিসের এক পত্রে তাকে ওই বদলীর আদেশ দেয়া হয়। মঙ্গলবার বিকেলে প্রশাসন ও কারাগারের সাথে সংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্র ওই তথ্য নিশ্চিত করেছেন। অন্যদিকে সুপারের ওই বদলীর আদেশে জেলা কারাগারসহ স্থানীয় অধিবাসীদের মাঝে স্বস্তি ফিরে এসেছে।
অভিযোগ রয়েছে, সুপার মজিবুর রহমান প্রায় ৩ বছর আগে শেরপুর কারাগারে যোগদানের পর থেকেই অধিনস্ত অন্য কাউকে তোয়াক্কা না করে নানা অনিয়ম-দুর্নীতি চালিয়ে আসছিলেন। ওইসব অনিয়ম দুর্নীতির বাইরেও তার রূঢ় আচরণে অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছিলেন অধিনস্ত কর্মকর্তা-কর্মচারী ও কারারক্ষীসহ এলাকাবাসী। সর্বশেষ ২৯ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যায় জামিন পাওয়া আসামিদের আত্মীয়-স্বজনদের কাছ থেকে প্রকাশ্যে নগদ টাকা হাতিয়ে নেওয়ার ঘটনার প্রতিবাদ করতে গেলে পার্শ্ববর্তী নওহাটা এলাকার পরিবহন শ্রমিক নেতা আলমগীর হোসেন বিশুকে কারা অভ্যন্তরে নিয়ে সুপার মজিবুর রহমানের সামনেই তাকে পিটিয়ে রক্তাক্ত করে কারারক্ষীরা। ওই ঘটনাকে আড়াল করতে কারাগারের মোড়সহ আশেপাশে বিদ্যুৎ থাকার পরও কারাগারের সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দিয়ে তারা নিজেরাই ভাংচুর করে এবং উল্টো হামলার অভিযোগ তুলে আহত শ্রমিকনেতা বিশু ড্রাইভারকে পুলিশে তুলে দিয়ে পরদিন মামলা ঠুকে দেয়। অন্যদিকে ৩ অক্টোবর জেল সুপার মজিবুর রহমান ও প্রধান কারারক্ষী বাবুল মিয়াসহ ১৭ জনকে আসামী করে আহত শ্রমিক নেতা বিশুর স্ত্রী শান্তি বেগম বাদী হয়ে আদালতে একটি পৃথক মামলা দায়ের করে। ওইসব ঘটনা উঠে আসে জাতীয় ও স্থানীয় পত্র-পত্রিকাসহ সামাজিক গণমাধ্যমে। কিন্তু এরপরও দুর্নীতিপরায়ণ সুপার বহাল তবিয়তে থাকায় তা নিয়ে উঠছিল নানা প্রশ্ন। সম্প্রতি শ্রমিক নেতা বিশুকে নির্যাতনের মামলায় ঘটনার সত্যতা রয়েছে মর্মে আদালতে প্রতিবেদন দাখিল হওয়ায় পিছু হটে কারা কর্মকর্তারা।