ads

মঙ্গলবার , ৩ জুলাই ২০১৮ | ৬ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের নিবন্ধনপ্রাপ্ত অনলাইন নিউজ পোর্টাল
  1. ENGLISH
  2. অনিয়ম-দুর্নীতি
  3. আইন-আদালত
  4. আন্তর্জাতিক
  5. আমাদের ব্লগ
  6. ইতিহাস ও ঐতিহ্য
  7. ইসলাম
  8. উন্নয়ন-অগ্রগতি
  9. এক্সক্লুসিভ
  10. কৃষি ও কৃষক
  11. ক্রাইম
  12. খেলাধুলা
  13. খেলার খবর
  14. চাকরির খবর
  15. জাতীয় সংবাদ

শেষ নাহি যে… : সোহাগপুর বিধবাপল্লী

শ্যামলবাংলা ডেস্ক
জুলাই ৩, ২০১৮ ২:৫৯ অপরাহ্ণ

মতিয়া চৌধুরী

আমাদের সামনে বসে আছেন একদল বিধবা নারী। সবার বয়স মোটামুটিভাবে ৬০ পেরিয়ে গেছে। মুখের চামড়ায় অনেক আঁকিবুঁকি। সবাইকে পল্গাস্টিকের চেয়ারে বসানো হয়েছে। বয়সের ভারে বেশিরভাগেরই পিঠ বেঁকে গেছে। মাথার চুল পাকা। সঙ্গে একজন নিকট আত্মীয়। ছেলে কিংবা নাতি কিংবা নাতি-জামাই। সবার চোখ দিয়ে অনবরত পানি ঝরছে, কিছুতেই থামছে না।
বরুয়াজানী হাসান উচ্চ বিদ্যালয়ের মাঠ (ইউনিয়ন-কাকরকান্দি, উপজেলা-নালিতাবাড়ী, জেলা-শেরপুর)। তারিখ ৩.৬.২০১৮। রবিবার। দুপুর ১টা ৩০ মিনিট। মাইকে ক্রমানুসারে নাম বলা হচ্ছে। ছাহেরা বেওয়া, স্বামী-মৃত জহুর উদ্দিন; জবেদা বেওয়া, স্বামী-মৃত বাবর আলী; মোছা. করফুলি বেওয়া, স্বামী-মৃত রহিম উদ্দিন; মালতি রাকসাম, স্বামী-মৃত চটপাথাং; দিলমনি রাকসাম, স্বামী-মৃত অমর দিও। এ রকম ২৫ জন মৃত স্বামীর ‘জীবিত স্ত্রী’ আমাদের সামনে বসা। নালিতাবাড়ী উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা পল্গাটুন কমান্ডার জিয়াউল মাস্টারসহ পার্টির নেতৃবৃন্দ, উপজেলার সরকারি কর্মকর্তাবৃন্দ এবং কাকরকান্দি ইউনিয়নের চেয়ারম্যান শহিদুল্লাহ তালুকদার। আমরা সবাই এই বিধবাদের সামনে উপস্থিত।
১৯৯২ সাল। কাকরকান্দি ইউনিয়নে একটা বড়সড় ঘূর্ণিঝড় হয়। সরকারের ত্রাণ ভাণ্ডার থেকে ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য জিআরের (Gratuitous Relief) চাল বরাদ্দ করা হয়। আমি তখন ওই নির্বাচনী এলাকার সংসদ সদস্য। সংসদে আমার বসার স্থান বিরোধী দলে। লোকমুখে দুর্যোগের খবর পেয়ে কাকরকান্দি ইউনিয়নে জিআরের চাল বিতরণস্থলে উপস্থিত হলাম। তখন কাকরকান্দি ইউনিয়নে যাওয়ার জন্য কোনো পাকা রাস্তা ছিল না। এমনকি ইউনিয়ন পরিষদেরও কোনো পাকা ভবন ছিল না। কিছুটা হেঁটে কিছুটা রিকশায় চাল বিতরণস্থলে উপস্থিত হলাম। সে সময় জিআরে মাত্র দুই কেজি করে চাল দেওয়া হতো। জিআরের চাল উঠানো হয়েছে সেখানকার ছোট্ট বাজারের একটি দোকানে। আমি জিআর বিতরণ অনুষ্ঠানে কিছুক্ষণ থাকতে চাইলাম। চেয়ারম্যান কলিমকে বললাম। আমি কিছুক্ষণ এখানে থেকে চাল বিতরণ অনুষ্ঠানটা দেখতে চাই। সৌজন্যবশত চেয়ারম্যান কাছাকাছি একটি বাড়ি থেকে চৌকিদারের মাধ্যমে দুই-একটা ফোল্ডিং চেয়ার নিয়ে এলো। চাল বিতরণের ওখানে বসে কিছুক্ষণ পর আমি জিআর বিতরণের মাস্টাররোলের কাগজটা দেখতে চাইলাম। মাস্টাররোলে প্রায় আড়াইশ’-তিনশ’ লোকের নাম। মাস্টাররোলের পাতা উল্টাতে গিয়ে এক জায়গায় আমার চোখ আটকে গেল। দেখলাম সারিবদ্ধভাবে নারীদের নামের শেষে শুধু বেওয়া, বেওয়া, বেওয়া লেখা, সাং-সোহাগপুর।
চেয়ারম্যান কলিমের দিকে তাকিয়ে আমি বললাম, ‘কলিম, কাজ সহজ করার জন্য একটা গ্রামের সব নারীকে বিধবা বানিয়ে দিলে।’ কলিম একটু থতমত খেয়ে বলল, ‘আপা, এখানে উপস্থিত যে পাবলিক আছে তারারে জিগাইন, সোহাগপুর গ্রামের সব মেয়েছেলে বিধবা।’
১৯৭১-এর ২৫ জুলাই, ১০ শ্রাবণ, মঙ্গলবার। সকাল ৭টা থেকে ৮টার মাঝামাঝি সময়ে খানসেনা ও রাজাকারের সম্মিলিত বাহিনী সোহাগপুর গ্রাম, যেটি তখন কিছু লোকালয়, অনেকটাই অরণ্য। এই গ্রামের পূর্ব-উত্তর পাশ থেকে কৃষিক্ষেতে গুলি করে আক্রমণ শুরু করে। দক্ষিণ বরাবর কিছুদূর এসে একটু মোড় ঘুরে পশ্চিম দিকে বেণুপাড়া পর্যন্ত হত্যাযজ্ঞ চালাতে থাকে। একই সঙ্গে চলতে থাকে নাগালে পাওয়া নারীদের ওপর জঘন্য পাশবিক অত্যাচার। খানসেনা ও রাজাকাররা চলে যাওয়ার পর ঘটনাস্থলে সোহাগপুর গ্রামেরই ১৮৭ জন মৃত পুরুষের লাশ চিহ্নিত করা হয়। শ্রাবণ মাস হওয়ায় আশপাশের এলাকার আরও অনেক শ্রমজীবী মানুষ, যারা কামলা দিতে এসেছিল, যাদের হাতে একমাত্র ধান কাটা কাঁচি ছাড়া আর কিছুই ছিল না, তাদের লাশ নাম-ঠিকানাবিহীন কয়েকদিন পড়ে থাকে। আজ অবধি তাদের পরিচয় উদ্ধার হয়নি। এখনও সোহাগপুরের বিভিন্ন জায়গায় ছড়িয়ে-ছিটিয়ে তাদের কবর রয়েছে। নির্মম বাস্তবতা হচ্ছে এই যে, তখন কোনো রকমে এই নাম-ঠিকানাবিহীন লোকগুলোর গলিত লাশ মাটিচাপা দেওয়া হয়।
খানসেনা ও রাজাকারদের এই সম্মিলিত ধ্বংসযজ্ঞ আরও অনেকক্ষণ চলত। কিন্তু আক্রমণ চলাকালীন রাজাকারদের এলোপাতাড়ি গুলিতে সেমসাইড হয়ে একজন খানসেনা গুরুতরভাবে গুলিবিদ্ধ হয়। তাড়াহুড়ো করে ভীত-সন্ত্রস্ত খানসেনা ও রাজাকারের দল হত্যাযজ্ঞ বন্ধ করে চলে যায়।
২৫ জুলাইয়ে সংঘটিত সোহাগপুরের এই হত্যাযজ্ঞের আগে ১৯৭১-এর ৬ জুলাই নালিতাবাড়ীর সন্তান, বীর মুক্তিযোদ্ধা, ময়মনসিংহে অবস্থিত বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের মেধাবী ছাত্র নাজমুল হাসান তৎকালীন জামালপুর, বর্তমানে শেরপুর জেলার পাকিস্তানি সেনাদের চলাচলের রুট কাঁটাখালী ব্রিজের সংযোগ বিচ্ছিন্ন করেন এবং এই অপারেশনে তিনি শহীদ হন।
নারকীয় হত্যাযজ্ঞ চালিয়ে নালিতাবাড়ীর সমগ্র জনপদকে পঙ্গু ও স্তব্ধ করার হীন উদ্দেশ্য নিয়ে কুখ্যাত যুদ্ধাপরাধী কামারুজ্জামানের নেতৃত্বে নালিতাবাড়ী উপজেলার কাকরকান্দি ইউনিয়নের সোহাগপুর গ্রামে এই ধ্বংসযজ্ঞ চালানো হয়। স্থানীয় রাজাকার পলল্গী চিকিৎসক আব্দুল কাদের এই হত্যাযজ্ঞ চালাতে খানসেনাদের সঙ্গে থেকে বনের ভেতর দিয়ে পথ দেখিয়ে ঘটনাস্থলে নিয়ে যায়। সোহাগপুর গ্রামের নারীরা দিজ্ঞ্বিদিক জ্ঞানশূন্য হয়ে, কেউবা পানিতে ঝাঁপিয়ে পড়ে, কেউবা ছোটাছুটি করতে গিয়ে হাত-পা ভাঙে, বাচ্চার মুখ চেপে ধরে ঝোপে-ঝাড়ে লুকায়, যাতে তাদের কান্নার শব্দের রেশ ধরে এদের খুঁজে বের করতে না পারে। ফলে অনেকের কোলের বাচ্চা অজ্ঞান ও মৃতপ্রায় হয়ে গিয়েছিল। অনেকের বাকশক্তি ফিরে আসতে বেশ সময় লেগেছিল। সেই বাচ্চাদের ভেতরে দুই-একজন পরিণত বয়সেও সেই নির্মম অত্যাচারের স্মৃতি তাড়িত হয়ে মাঝেমধ্যে অস্বাভাবিক আচরণ করে।
ধ্বংসযজ্ঞ শেষে খানসেনারা চলে যায়, সোহাগপুর পরিণত হয় ধ্বংসস্তূপে। সেদিন থেকে সোহাগপুর গ্রামের নারীরা স্বামীর সোহাগ থেকে বঞ্চিত, নিহতদের সন্তানরা পিতৃস্নেহ থেকে বঞ্চিত, চিৎকার করে কান্নার অধিকার থেকে বঞ্চিত। সবুজ বনানী ঘেরা জনপদ সোহাগপুর মনুষ্য সৃষ্ট দয়ামায়াহীন এক মরুভূমির প্রতিকৃতি হয়ে দাঁড়িয়ে আছে।
১৯৯১ সালে বিরোধী দলের এমপি নির্বাচিত হওয়ার পর সোহাগপুরের এই অজানা অধ্যায় জানতে পারি। গ্রামের এই অসহায় বিধবা পরিবারগুলোর পাশে দাঁড়ানোর সামর্থ্য আমার তেমন একটা ছিল না।
এমপি হিসেবে আমি যে ভাতা পেতাম, সেই টাকা থেকে প্রত্যেক বিধবাকে দুটি করে চার মাসের ছাগী বাচ্চা দেই। কেননা ছাগল পালার খরচ কম। ছাগী বাচ্চা থেকে বাচ্চা হলে সেগুলো বিক্রি করে তারা দুটি পয়সা পাবে। সেই সঙ্গে এমপি হিসেবে আমার জন্য বরাদ্দ টিন থেকে কয়েক বান্ডিল টিন ও স্বেচ্ছাধীন তহবিলের ((Discretionary Fund)
) টাকা থেকে প্রাথমিক মূলধন হিসেবে তাদের সমবায়ের জন্য কিছু টাকা দেই।
১৯৯৬ সালে জাতির পিতার কন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা সরকার গঠন করার পর সোহাগপুরের স্বামীহারা এই নারীরা বিধবা ভাতা পাওয়া শুরু করে। ব্র্যাকের চেয়ারম্যান ফজলে হাসান আবেদ সাহেবের সঙ্গে একটি অনুষ্ঠানে কথাচ্ছলে সোহাগপুরের এই নির্মম ঘটনার কথা বলাতে তিনি ব্র্যাকের তরফ থেকে প্রথমে ১০০ টাকা, পরবর্তীকালে ৪০০ টাকা মাসিক মাসোয়ারার ব্যবস্থা করেন। এই ভাতা চলমান। মাঝে রেড ক্রিসেন্ট হতে কম্বল, চাল ইত্যাদি খাদ্যসামগ্রী ও ব্যবহারিক জিনিসপত্র দিয়ে সাহায্য করা হয়েছিল। এই সুদীর্ঘ সময়ে সেই দানবীয় ঘটনার সাক্ষী অনেকেই এ পৃথিবী থেকে বিদায় নিয়েছে। স্বাধীন বাংলার মাটিতে বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা প্রদত্ত সম্মানী ভাতা সবাই ভোগ করতে পারেনি।
২০০৭-০৮ সালে ওয়ান-ইলেভেন সরকারের সময় ২০০৮-এ ঘাটাইল ক্যান্টনমেন্ট থেকে এদের জন্য কিছু সাহায্যসামগ্রী, বিধবাপলল্গীর সমবায়ের জন্য মাসরুমের একটা প্রজেক্ট, ধান মাড়াইয়ের দুটি মেশিন ও পাওয়ারটিলার দেওয়া হয়। কিন্তু বয়সের ভারে নুয়ে পড়া নারীদের জন্য এটা পরিচালনা করা সম্ভব ছিল না। এমতাবস্থায় চলচ্চিত্রের শিল্পীদের নিয়ে একটা বিচিত্রানুষ্ঠান করে সেখান থেকে অর্জিত টাকা বিধবাদের মাঝে বণ্টন করা হয়।
২০০৯-এ জাতির পিতার কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দ্বিতীয় মেয়াদে সরকার গঠনের পর এই বিধবাদের জন্য বাংলাদেশ সরকারের ভাতা বৃদ্ধি করা হয়। একদিন বাংলাদেশ ব্যাংকের তৎকালীন গভর্নর ড. আতিউর রহমানের সঙ্গে বিধবাপল্লীর কথা আলাপ করায় তিনি ট্রাস্ট ব্যাংকের মাধ্যমে ২০১০ সাল থেকে শুরুতে ৬১ জন বিধবাকে এক হাজার টাকা, পরবর্তীকালে দুই হাজার টাকা ভাতা প্রদানের ব্যবস্থা করেছেন। শুরুর প্রায় দুইশ’র কাছাকাছি এই বিধবার মধ্যে এখন বেঁচে আছে মাত্র ২৫ জন। শেখ হাসিনার সরকার সেই সময় ২৯ জন জীবিত বিধবার জন্য ২৯টি পাকা ঘর নির্মাণ করে দিয়েছে। বিধবাদের মধ্যে ৬ জন বীরাঙ্গনা হিসেবে ১০ হাজার টাকা করে ভাতা পাচ্ছে।
এই বছর ৪ রমজান রাতের বেলায় যখন ভাত খাচ্ছি, এ সময় ল্যান্ড সেটে একটা ফোন এলো। গৃহকর্মী মেয়েটি ফোন ধরে বলল, ‘আতাউর নামে কে যেন ফুন করছে।’ আমি বললাম, ‘ফুন করুক আর যাই করুক, তুমি বলো, তিনি এখন খাইতে বসছে। আপনি পরে ফুন কইরেন।’
খাওয়া শেষ করে কেবল খবরের কাগজের ভেতরের পৃষ্ঠা পড়ছি, এ সময় আবার ফোন বেজে উঠল। ফোনটা ধরলাম। প্রথা অনুযায়ী আসসালামু আলাইকুম, ওয়ালাইকুম আসসালাম পর্ব শেষ হলো। ফোনের অপর প্রান্ত থেকে একজন বললেন, ‘আমি কানাডা থেকে আতাউর বলছি।’ ‘আপনি কে, কোন আতাউর?’ ‘স্যার, আমি আতাউর, আপনার ওখানে ১৯৯৭ সালে এলজিইডির থানা ইঞ্জিনিয়ার ছিলাম।’ আমি জিজ্ঞেস করলাম, ‘বলুন, কী কারণে ফোন করেছেন?’ আতাউর বললেন, ‘আমি ও আমার স্ত্রী দু’জনেই ইঞ্জিনিয়ার এবং আমরা এখানে চাকরি করি। আমাদের একটি ছেলে আছে। সে ক্লাস সেভেনে পড়ে। নালিতাবাড়ীর বিধবাপল্লীর সবাই কেমন আছে?’ আমি বললাম, ‘অনেকেই মারা গেছে। ৩০ জনের কাছাকাছি বেঁচে আছে।’
আতাউর বললেন, ‘আমি আর আমার স্ত্রী নাহিদ ঈদ উপলক্ষে এদের জন্য কিছু টাকা পাঠাতে চাই।’ ইঞ্জিনিয়ার আতাউর সাহেবের বাড়ি মুন্সীগঞ্জের গজারিয়া। নালিতাবাড়ী তো নয়ই, তিনি শেরপুর জেলারও কেউ নন। কিন্তু তিনি বাঙালি। তিনি মুক্তিযুদ্ধে বিজয়ী বাংলাদেশের সন্তান। তিনি মানুষ।
আমি তাকে নালিতাবাড়ীর ইউএনও ও কাকরকান্দি ইউনিয়নের চেয়ারম্যানের ফোন নাম্বার দিলাম। আতাউর সাহেবের প্রেরিত ডলার ভাঙানোর পর এক লাখ ৫৪ হাজার ৩০৫ টাকা হয়। ২৯ জনের মাঝে প্রত্যেককে ৫৩২০ টাকা করে দিয়ে অবশিষ্ট খুচরা টাকা সোহাগপুরের বিধবাদের সমবায়ে গচ্ছিত রাখা হয়েছে। কয়েকদিন আগে এই ২৯ জন বিধবার ৪ জন পৃথিবী থেকে বিদায় নিয়েছে।
সোহাগপুরের মামলাতেই উচ্চ আদালতের রায়ে বলা হয়েছে, ‘সোহাগপুরের এই গণহত্যা সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণ করে যে, খানসেনা ও তাদের সহযোগীরা (Collaborator)) হত্যা ও মানবতাবিরোধী জঘন্য অপরাধে অপরাধী।’
মনুষ্যত্ব ও মানবতার নাম কি ভয় পাওয়া? মানুষের পশ্চাদ্দেশে তো একটা লেজ নেই যে, ভয় পেয়ে সেটাকে গুটিয়ে পিছু হটবে। ন্যায়-অন্যায়ের মাঝে নিরপেক্ষতা-ক্লীবত্ব, ভীরুতার নাম বাঙালি নয়।
‘ফাঁসির মঞ্চে যাওয়ার সময় বলব, আমি বাঙালি, বাংলা আমার দেশ, বাংলা আমার ভাষা।’ জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর এই উচ্চারণ একলা রাতের অন্ধকারে আমাদের পথ দেখায়।
‘রাতের সব তারাই আছে
দিনের আলোর গভীরে।’
লেখক : কৃষিমন্ত্রী, গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার।

error: কপি হবে না!